শান দেওয়া মেশিনই একমাত্র অবলম্বন আরিফের

মেশিন দিয়ে লোহার দা শান দিয়ে দিচ্ছে আরিফ হোসেন। ছবি : বাংলারচিঠি ডটকম

শফিউল আলম লাভলু, নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠি ডটকম

শান দেওয়া মেশিনই একমাত্র অবলম্বন আরিফ হোসেনের। গৃহস্থালী ও সেলুনের লোহার হাতিয়ার শান দিয়ে রোজগার করে সংসার চালান আরিফ। এক সময় গ্রামে গঞ্জে এই মেশিন দেখা গেলেও বর্তমানে খুবই কম দেখা যায়। তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায় এই মেশিন নিয়ে। গেল দুই সপ্তাহ যাবৎ এমন একটি মেশিন নিয়ে ঘুরতে দেখা গেল শেরপুরের নকলা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। তার নিজ জেলা হবিগঞ্জ। তার মা, বাবা, স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা বসবাস করেন। সে লোহার হাতিয়ার শান দিতে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ঘুরে বেড়ান।

২৭ ফেব্রুয়ারি নকলা পৌরসভার চরকৈয়া গ্রামে শান দেওয়া অবস্থায় তার সাথে দেখা হয়। তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনি দেশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে শান দিয়ে যে টাকা আয় করেন তা দিয়েই ছেলেদের পড়ালেখার খরচসহ সংসারের অন্যান্য ব্যয় বহন করেন।

তিনি জানান, ২০০৪ সাল থেকে তিনি এ পেশায় নিয়োজিত আছেন। বিভিন্ন এলাকার গৃহস্থালীর লোহার হাতিয়ার শান দিয়ে প্রতিদিন ৭০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। এ আয়ে চলে তার সংসারের চাকা। হাতিয়ারের আকার অনুযায়ী প্রতিটি শান দিয়ে ২০ টাকা থেকে ৮০ টাকা করে নেন তিনি। এতে করে মাসে ১৮ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় হয়।

গৃহস্থ কামাল, আলম, মনির, আবুল ও হাছিনা জানান, শান দেওয়ার জন্য আরিফ বাড়ি বাড়ি আসায় আমরা খুব উপকৃত হচ্ছি। আমাদের যাতায়াত ভাড়া ও সময় উভয়ই বেঁচে যাচ্ছে।

আরিফ শান দেওয়ার মেশিন সম্পর্কে জানান, মেশিনটি তৈরি করতে আনুমানিক সাড়ে ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা ব্যয় হয়।

এত অল্প পুঁজি খাটিয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে গৃহস্থালী লোহার হাতিয়ার শান দিয়ে প্রতিদিন ৭০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। এতে করে আরিফ মাসে ১৮ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। যে কেউ এই অল্প পুঁজির ব্যবসাকে আয়ের প্রধান মাধ্যম হিসেবে বেছে নিতে পারে বলে মনে করছেন সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।