ডোয়াইলে নির্বাচনী পরীক্ষায় হামলা, আহত ১৫

সরিষাবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি আহত পরীক্ষার্থীরা। ছবি : বাংলার চিঠি ডটকম

মমিনুল ইসলাম কিসমত, সরিষাবাড়ী॥
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের অভিভাবক সদস্যের নেতৃত্বে পরীক্ষার হলে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়। ৯ অক্টোবর সকালে উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের কুঠিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় গুরুতর আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল জানান, কুঠিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষা চলছে। ৯ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে কৃষিবিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিত পরীক্ষা শুরু হয়। এ সময় আমি প্রতিষ্ঠানের কাজে উপজেলা শহরে ছিলাম। শিক্ষক আজহারুল ইসলাম তাকে মুঠোফোনে জানান, পরীক্ষা শুরুর সাথে সাথেই পরীক্ষার হলে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। পরে আমি দ্রুত বিদ্যালয়ে গিয়ে জানতে পারি, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের অভিভাবক সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম জুলুর নেতৃত্বে একদল বহিরাগত সন্ত্রাসী পরীক্ষার হলে অতর্কিত হামলা করে। হামলায় ইসলাম ধর্ম শিক্ষক তামান্নুর রহমান, বাংলা শিক্ষক আজহারুল ইসলাম, দশম শ্রেণির পরীক্ষাথী মামুনুর রশিদ, সোহাগ হোসেন, সম্পদ, রাজু, শাকিল, ইউনুস, ইউসুফ, আবু বকর, শহিদ, রাকিব, আনন্দসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়। গুরুতর আহত মামুনুর রশিদ, সোহাগ হোসেন ও সম্পদকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বিষয়টি তাৎক্ষনিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়।

হাসপাতালে ভর্তি দশম শ্রেণির সোহাগসহ পরীক্ষার্থীরা জানায়, ৮ অক্টোবর সকালে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রমজান ও সোহাগ শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চে পা তুলে বসলে আমি তাদের নিষেধ করি। এ নিয়ে তাদের দু’জনের সাথে আমিসহ দশম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থীর মধ্যে তর্ক হয়। এ ঘটনার জের ধরে ওই দুই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়ে ৯ অক্টোবর সকালে পরীক্ষার হলে বহিরাগত লোকজন অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমাদের মারপিট করে। এ সময় বাধা দিলে দুইজন শিক্ষককেও শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।

জানা গেছে, পরীক্ষার কক্ষে হামলা হওয়ায় আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা ছুটোছুটি করতে থাকে। এ সময় পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য লোকদের হস্তক্ষেপে আধা ঘন্টা পর পুনরায় পরীক্ষা শুরু হয়। তবে আহত শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। এদিকে পরীক্ষা শেষে দুপুরে শিক্ষার্থীরা হামলার প্রতিবাদ ও ঘটনার বিচার দাবিতে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য অভিযুক্ত আনোয়ারুল ইসলাম জুলুর মুঠোফোনে চেষ্টা করলেও বন্ধ পাওয়া যায়।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল গণি জানান, বিদ্যালয়ে হামলা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মারধর করা দুঃখজনক ঘটনা। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কমিটির মিটিং ডেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরিষাবাড়ী থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক বলেন, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, হামলাকারীদের দ্রুত আটক করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানা পুলিশকে বলা হয়েছে।