সরিষাবাড়ীতে ১৬ ছাত্রীকে ঘুমের বড়ি সেবনের অভিযোগে দুই ছাত্র বহিষ্কার

মমিনুল ইসলাম কিসমত, সরিষাবাড়ী ॥
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় ১৬ জন ছাত্রীকে ঘুমের বড়ি খাওয়ানোর অভিযোগে রাকিব ও আবির নামের সপ্তম শ্রেণির দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে স্থানীয় মহাদান ইউনিয়নের বাঁশবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম জানিয়েছেন। ২৩ সেপ্টেম্বর এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বাঁশবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির দুই ছাত্র বাঁশবাড়ি গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে রাকিব এবং কড়বাড়ি গ্রামের সোহেল মিয়ার ছেলে আবির ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে একই শ্রেণির ১৬ জন ছাত্রীকে কৌশলে ঘুমের বড়ি খাওয়ালে তারা প্রত্যেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। গুরুতর অসুস্থ ছাত্রীরা হল সপ্তম শ্রেণির উর্মিতা, শান্তা, সম্পা, দীপ্তি, মিম, সাবা সুলতানা, কাকলী, তাপসী, আঁখি, ঝর্ণা এবং ষষ্ঠ শ্রেণির আশা ও রোজিনা।

টানা তিনদিন পর ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে এ ঘটনা প্রকাশ পেলে আহত ছাত্রীদের অভিভাবকেরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে এ ঘটনার সাথে জড়িত ওই দুই ছাত্রের বিচার দাবি করেন। পরে অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে জরুরি সভা করে ওই দুই ছাত্রকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নিয়ে ওই এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টির পাশাপাশি অভিভাবকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

অসুস্থ ছাত্রীরা জানিয়েছে, ফুটবল খেলায় আহত সহপাঠী আতিককে দেখতে যাওয়ার জন্য পথ্য কেনার নাম করে রাকিব ও আবির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা তোলে। পরে পথ্য না কিনে সে টাকা দিয়ে তারা দু’জন ঘুমের বড়ি এনে কৌশলে তাদের সেবন করায়।

অসুস্থ ছাত্রী আশার বাবা মজিবর রহমান জানান, ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে বিদ্যালয় ছুটির পর মেয়েরা বাড়িতে ফিরলে তাদের অসুস্থ দেখা যায়। এ সময় জানতে চাইলে তারা জানায়, একই শ্রেণির ছাত্র রাকিব ও আবির দুপুরে কৌশলে তাদেরকে ঘুমের বড়ি খাওয়ায়। এতে তারা প্রায় অচেতন হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে আরও জানতে পারেন অন্য ছাত্রীদেরও ঘুমের বড়ি খাওয়ানো হয়েছে। লোকলজ্জার কারণে পরিবারের লোকজন বিষয়টি চাপা দিয়ে রাখেন এবং তাদেরকে হাসপাতালে না নিয়ে স্থানীয়ভাবে গোপনে চিকিৎসা করান।

এ ব্যাপারে বাঁশবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম বাংলার চিঠি ডটকমকে বলেন, ‘ছাত্রীদের ঘুমের বাড়ি খাওয়ানোর অভিযোগ পেয়ে ওই দুই ছাত্র রাকিব ও আবিরকে ২৬ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ে ডেকে এনে তাদেরকে বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ২৭ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভায় ওই দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’