সাবেক শহীদ রাষ্ট্রপতি বীর উত্তম জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জামালপুর শহর বিএনপির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৫ জানুয়ারি বিকালে জামালপুর শহরের ফৌজদারি মোড়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জামালপুর শহর বিএনপির সভাপতি মো. লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটি ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আইনজীবী শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি নেতা শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, চারা রোপণ করে আজকে কৃষিতে বীজের চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে। আজকে জিয়াউর রহমানের কাটা খালে মাছের চাষ করে মাছের চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে। আজকে যদি কৃষিতে বিপ্লবের কথা বলা হয়, সেই বিপ্লবের একমাত্র শুভ সূচনা যিনি করেছিলেন তার নাম জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান বিশ্ব দরবারে একটি মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আন্তর্জাতিক জেডি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই সার্কের স্বপ্নদষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন যিনি তার নাম জিয়াউর রহমান।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে যখন বাংলাদেশ দুর্ভিক্ষ পরায়ন বাংলাদেশ থেকে খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে বিশ্ব দরবারে একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশে রূপান্তরিত হচ্ছিল, সেই সময় বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করার হীন ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়। আজকে আমরা সেই জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী পালন করছি।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর আমরা সংগ্রাম করেছি। আমরা জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রামের যাত্রা শুরু করেছিলাম। দীর্ঘ ১৭ বছর আমরা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। এই সংগ্রাম করার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সোয়া দুই বছরের অধিক সময় জেল খাটানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে জামিনের নামে তাকে গৃহবিন্দ করে রাখা হয়েছিল।
শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, এই সংগ্রাম করতে গিয়ে বিএনপির আটত্রিশ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে। এই সংগ্রাম করার কারণে বিএনপির লাখ লাখ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে অন্যায়ভাবে দীর্ঘদিন কারাগারে রাখা হয়েছে। বিএনপি হামলা, মামলা, হত্যা, গুম, খুন সমস্ত কিছু মোকাবিলা করে ১৭ বছর ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করেছে স্বৈরাচার পতনের জন্য। এই আন্দোলনের একটি পর্যায়ে এসে, এদেশের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের ন্যায্য দাবি কোটা সংস্কারের আন্দোলন শুরু করে। এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রথম থেকে সমর্থন দিয়ে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন কৌশলে এই আন্দোলনকে সফলতার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। বিএনপির সমর্থনের মধ্যে দিয়ে এই ছাত্র আন্দোলন গণআন্দোলনে রূপ নেয়। সেই গণআন্দোলন একটি পর্যায়ে গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। সেই অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
জামালপুর শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. আব্দুল্লাহ আল মাসুদের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আইনজীবী ফজলুল হক, শফিউর রহমান শফি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রিজভী আল জামালী রনজু, শহর বিএনপির সহ-সভাপতি মাঈন উদ্দিন বাবুল, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক লোকমান আহাম্মেদ খান লোটন, শফিকুল ইসলাম খান সজীব, যুব বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক, শহর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মমিনুর রহমান মমিন, শহিদুল রহমান শহীদ, বাহাজ উদ্দিন বাহাজ, জেলা মহিলা দলের সভাপতি শেলিনা বেগম, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি শেখ মো. আব্দুস সোবহান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল মোমেন আকন্দ কাওছার প্রমুখ।
আলোচনা সভায় শহর বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।