দাতা সংস্থা ইউএন-উইমেন এর অর্থায়নে অপরাজেয় বাংলাদেশের সংযোগ প্রকল্পের উদ্যোগে জামালপুর শহরের রানীগঞ্জ যৌনপল্লীতে বসবাসরত নারীদের জন্য দিনব্যাপী চিকিৎসা শিবির পরিচালিত হয়েছে। যৌনপল্লী সংলগ্ন সংযোগ প্রকল্পের অফিসে ২৭ আগস্ট, বুধবার এই চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন করা হয়।
জামালপুরের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মোবাশ্বিরা হক রানীগঞ্জ যৌনপল্লীর নারী ও শিশু রোগীদের বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত শোনেন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধসেবন ও পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন। রোগীদের প্রেসার মাপা ও ওজন মাপাসহ অন্যান্য কাজে মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মোবাশ্বিরা হককে সার্বিক সহযোগিতা করেন রানাগাছা ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার (সাকমো) শামীমা আক্তার।
এই চিকিৎসা শিবিরের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন অপরাজেয়-বাংলাদেশের সংযোগ প্রকল্পের দু’জন মাঠ কর্মকর্তা রীনা আক্তার ও হাফিজা খাতুন। দিনব্যাপী এই চিকিৎসা শিবিরে দুই শিশুসহ ৬৭ জন রোগী দেখা হয়েছে। চিকিৎসা শিবিরে রোগীদের রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত শুনে রক্তচাপ ও ওজন পরিমাপ করে ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়। এছাড়াও তাদের মাঝে স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
ডা. মোবাশ্বিরা হক এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি তো অপরাজেয়-বাংলাদেশের সংযোগ প্রকল্পের সাথে গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বর মাস থেকে আছি। আমরা সিভিল সার্জন অফিসে তাদের চিকিৎসা পরামর্শ দিয়েছি। আর মাঝে মাঝে চিকিৎসা শিবির করা হয় এখানে। এখানে সাধারণত বয়স্ক রোগীদের ডায়াবেটিস, হাইপ্রেসার, কোমরের ব্যথা বেশি থাকে। আর যাদের একটু বয়স কম। তাদের স্কিনে ইনফেকশন, প্রস্রাবের ইনফেকশনের সসম্যা বেশি পাওয়া যায়। অন্যান্য সমস্যাগুলো কমই পাওয়া যায়। আর গাইনি সমস্যাও বেশি পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, আমি এ পর্যন্ত যেসব রোগী দেখেছি। পরবর্তীতে তারা ফলোআপ করেছেন যে, যাদের স্কিনডিজিস তাদের অনেকেরিই উন্নতি হয়েছে। অন্যান্য রোগের পরামর্শ পেয়ে তারা উপকৃত হয়েছেন বলে আমাকে বলেছেন। অপরাজেয় বাংলাদেশ খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। উনারা অপরাজেয় বাংলাদেশের দেওয়া স্বাস্থ্যসেবা যে নিতে পাচ্ছেন, এটা তাদের জন্য একটা বিশাল সুযোগ।
তিনি বলেন, মেডিকেল অফিসার হিসাবে এটা আমার একটা নতুন অভিজ্ঞতা। আগে আমি উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে রোগী দেখেছি। চিকিৎসা দিয়েছি। তবে এখানে এনজিও’র সাথে কাজ করে অনেক অভিজ্ঞতা হচ্ছে। যারা আর কি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়। উনারাও নানান ধরনের প্রতিবন্ধকতার কারণে বাইরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান না। এখানে উনাদের জীবনযাত্রা সবকিছু মিলিয়ে আমি ফিল করি যে উনাদের জন্য কিছু করতে পারছি। এটাই আমাকে ভালোলাগার কাজ করে।
সংযোগ প্রকল্পের মাঠ কর্মকর্তা রীনা আক্তার এ প্রতিবেদককে বলেন, রানীগঞ্জ যৌনপল্লীর নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাজেয় বাংলাদেশের সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ২০০ নারীকে পর্যায়ক্রমে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। জামালপুরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মোবাশ্বিরা হক এই নারীদের চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।