ঢাকা ০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সম্পাদকীয় :

শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে গবাখালি খালের পানির প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে হবে

জামালপুর : ভরাট হয়ে যাওয়া গবাখালি খাল। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুর শহরে জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৯৬২ সালে পৌরসভার শেখেরভিটা রেলক্রসিংয়ের পর থেকে সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের দামেশ্বর হয়ে কালিবাড়ী বাজারের পশ্চিম পাশ দিয়ে প্রবাহিত ঝিনাই নদ পর্যন্ত সাড়ে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ গবাখালি খাল খনন করা হয়। এতে তৎকালীন এলাকার শত শত একর আবাদি জমিতে কৃষি উৎপাদনে সেচের ব্যবস্থা এবং মাছের অভয়াশ্রম গড়ে তোলা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে ৮০’র দশক পর্যন্ত পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ছিল। প্রবল বর্ষা হলেও শহরের পানি অবাধে গবাখালি খালে গিয়ে পড়ত। জলাবদ্ধতার ছিটেফোটাও ছিল না।

সময়ের বিবর্তনে লোভী মানুষের আগ্রাসনের ফলে এবং পৌরসভার সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হতে থাকে। গত বর্ষায় জামালপুরের জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে আমরা পানা থেকে শুরু করে সকল ধরনের আবর্জনা পরিষ্কার করে পানি প্রবাহের গতি স্বাভাবিক গতিধারায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলাম। পরবর্তীতে পৌরসভা থেকে শুরু করে গত এক বছরে কেউ আর এদিকে নজরে দেয় নাই। ফলে খালটি পূর্বের বদ্ধ অবস্থায় চলে এসেছে।

জামালপুর : ভরাট হয়ে যাওয়া গবাখালি খাল। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

একদিকে অপরিকল্পিত নগরায়ন, উজানের স্তরে স্তরে অসেচেতন মানুষের পানি প্রবাহের প্রতিটি মুখ বন্ধ করে রাখা, রেল থেকে শুরু করে গবাখালি খালের দুই পাশে জায়গা দখল করে স্থাপনা তৈরি করা, অপরদিকে খালকে ডাস্টবিন ভেবে সবধরনের আবর্জনা ফেলে রাখার পাশাপাশি পানা ও অবাঞ্ছিত অগাছা অবাধেে গজিয়ে উঠার সুযোগ করে দেওয়ার ফলে খালটি খননের লক্ষ্য বাস্তবায়ন ব্যাহত হচ্ছে। জামালপুর শহরের জলাবদ্ধতা অসহনীয় পর্যায়ে এবং জনদুর্ভোগ অতিমাত্রায় সৃষ্টি হবার অন্যতম প্রধান কারণ গবাখালি খালটিকে অকার্যকর ও অবরুদ্ধ করে রাখা।

এই মুহূর্তে দরকার খালটিকে পরিষ্কার অভিযানের আওতায় নিয়ে আসা। জেলা প্রশাসন, পৌর প্রশাসনসহ কমিউনিটির সম্মিলিত উদ্যোগে এখনই সময় খাল আবর্জনামুক্ত করা। এছাড়া মাস্টার প্ল্যানের আওতায় এনে গোটা পৌরসভাকে বাসোপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ শুরু করা এখন সময়ের দাবি। এজন্য সাহসী হতে হবে পৌর প্রশাসক থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। বংশখাল থেকে শুরু করে প্রতিটি ড্রেন পরিষ্কার করা, জলাশয়গুলোকে দখলমুক্ত করা, বহ্মপুত্র নদ, বানিয়াবাজার খাল সংস্কার ও খননের আওতায় নিয়ে আসা। পুকুর ভরাট বন্ধ করা। অপরিকল্পিতভাবে বাড়ি-ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান বন্ধ করা। অর্থের চেয়ে বড় প্রয়োজন এখন সংশ্লিষ্ট সকলের সদিচ্ছা।

জনপ্রিয় সংবাদ

ঐতিহাসিক জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক দলের নেতারা

সম্পাদকীয় :

শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে গবাখালি খালের পানির প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে হবে

আপডেট সময় ০৯:২৪:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫

জামালপুর শহরে জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৯৬২ সালে পৌরসভার শেখেরভিটা রেলক্রসিংয়ের পর থেকে সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের দামেশ্বর হয়ে কালিবাড়ী বাজারের পশ্চিম পাশ দিয়ে প্রবাহিত ঝিনাই নদ পর্যন্ত সাড়ে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ গবাখালি খাল খনন করা হয়। এতে তৎকালীন এলাকার শত শত একর আবাদি জমিতে কৃষি উৎপাদনে সেচের ব্যবস্থা এবং মাছের অভয়াশ্রম গড়ে তোলা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে ৮০’র দশক পর্যন্ত পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ছিল। প্রবল বর্ষা হলেও শহরের পানি অবাধে গবাখালি খালে গিয়ে পড়ত। জলাবদ্ধতার ছিটেফোটাও ছিল না।

সময়ের বিবর্তনে লোভী মানুষের আগ্রাসনের ফলে এবং পৌরসভার সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হতে থাকে। গত বর্ষায় জামালপুরের জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে আমরা পানা থেকে শুরু করে সকল ধরনের আবর্জনা পরিষ্কার করে পানি প্রবাহের গতি স্বাভাবিক গতিধারায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলাম। পরবর্তীতে পৌরসভা থেকে শুরু করে গত এক বছরে কেউ আর এদিকে নজরে দেয় নাই। ফলে খালটি পূর্বের বদ্ধ অবস্থায় চলে এসেছে।

জামালপুর : ভরাট হয়ে যাওয়া গবাখালি খাল। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

একদিকে অপরিকল্পিত নগরায়ন, উজানের স্তরে স্তরে অসেচেতন মানুষের পানি প্রবাহের প্রতিটি মুখ বন্ধ করে রাখা, রেল থেকে শুরু করে গবাখালি খালের দুই পাশে জায়গা দখল করে স্থাপনা তৈরি করা, অপরদিকে খালকে ডাস্টবিন ভেবে সবধরনের আবর্জনা ফেলে রাখার পাশাপাশি পানা ও অবাঞ্ছিত অগাছা অবাধেে গজিয়ে উঠার সুযোগ করে দেওয়ার ফলে খালটি খননের লক্ষ্য বাস্তবায়ন ব্যাহত হচ্ছে। জামালপুর শহরের জলাবদ্ধতা অসহনীয় পর্যায়ে এবং জনদুর্ভোগ অতিমাত্রায় সৃষ্টি হবার অন্যতম প্রধান কারণ গবাখালি খালটিকে অকার্যকর ও অবরুদ্ধ করে রাখা।

এই মুহূর্তে দরকার খালটিকে পরিষ্কার অভিযানের আওতায় নিয়ে আসা। জেলা প্রশাসন, পৌর প্রশাসনসহ কমিউনিটির সম্মিলিত উদ্যোগে এখনই সময় খাল আবর্জনামুক্ত করা। এছাড়া মাস্টার প্ল্যানের আওতায় এনে গোটা পৌরসভাকে বাসোপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ শুরু করা এখন সময়ের দাবি। এজন্য সাহসী হতে হবে পৌর প্রশাসক থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। বংশখাল থেকে শুরু করে প্রতিটি ড্রেন পরিষ্কার করা, জলাশয়গুলোকে দখলমুক্ত করা, বহ্মপুত্র নদ, বানিয়াবাজার খাল সংস্কার ও খননের আওতায় নিয়ে আসা। পুকুর ভরাট বন্ধ করা। অপরিকল্পিতভাবে বাড়ি-ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান বন্ধ করা। অর্থের চেয়ে বড় প্রয়োজন এখন সংশ্লিষ্ট সকলের সদিচ্ছা।