জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় সৎবাবার বাসায় মেয়ে ইসমিতা জাহান জ্যোতি (১৪) নামের এক কিশোরীর ফাঁসিতে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। ২২ জুলাই, মঙ্গলবার রাতে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা হাসপাতল থেকে ওই কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ইসমিতা জাহান জ্যোতি উপজেলার সীমান্তবর্তী ডাংধরা ইউনিয়নের বিন্দুরচর গ্রামের বুলবুল আহাম্মেদের মেয়ে। সে কাউনিয়ারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে দেওয়ানগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অফিস সহায়ক কাম নিরাপত্তা প্রহরী মোশারফ হোসেনের সাথে ইসমিতা জাহান জ্যোতির মা নাসরিন জাহান সুমির দ্বিতীয় বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে মোশারফ হোসেন তার স্ত্রী নাসরিন জাহান সুমিকে নিয়ে দেওয়ানগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের পুরাতন ভবনে থাকেন। ইসমিতা জাহান জ্যোতি তার বাবা বাদলের বাড়িতে থেকে পড়াশো করে। গত তিন মাস ধরে ইসমিতা জাহান জ্যোতি তার মায়ের কাছে অর্থাৎ সৎবাবা মোশারফ হোসেনের বাসায় বেড়াতে আসেন।
২২ জুলাই রাতে দেওয়ানগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের কোয়াটারের পাশের কক্ষের গ্রিলে হিজাব পেচানো ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় ইসমিতা জাহান জ্যোতিকে। এ সময় তার মা নাসরিন জাহান সুমি ও এই কলেজের কর্মচারী স্বপন কুমার রায় তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর রাতেই দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ সেখান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ২৩ জুলাই, বুধবার ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ জামালপুর মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
কলেজটির কর্মচারী স্বপন কুমার রায় এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা রাতের খাবার শেষ করেিনিজ ঘরে শুয়ে পড়ি। কিছুক্ষণ পর জ্যোতির মা নাসরিন জাহান সুমি ডাকচিৎকার দিলে তার ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে তাকে নামিয়ে দেওয়ানগঞ্জ হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়।
এ বিষয়ে ইসমিতা জাহান জ্যোতির সৎবাবা মোশারফ হোসেনের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।
কলেজটির অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা এ প্রতিবেদককে বলেন, মোশারফ হোসেন আমাদের কলেজে অফিস সহায়ক কাম নিরাপত্তা প্রহরী হিসাবে কর্মরত আছেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের পুরাতন ভবনে তার স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। ২২ জুলাই রাতে কিভাবে যে ঘটনা ঘটলো তার প্রকৃত কারণ জানি না।
দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান এ প্রতিবেদককে বলেন, ২২ জুলাই রাত ১০ টায় দেওয়ানগঞ্জ হাসপাতাল থেকে সংবাদ পেয়ে রাতেই মেয়েটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ২৩ জুলাই, বুধবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ জালালপুর মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে তার মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। এ ব্যাপারে দেওয়ানগঞ্জ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে।