রাজধানী ঢাকায় মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় চাঁদার দাবিতে মোহাম্মদ সোহাগ নামের একজন ব্যবসায়ীকে পাথর নিক্ষেপ করে থেঁতলে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে জামালপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে দেশব্যাপী অব্যাহত চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধেও তারা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। অরাজকতা বন্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন শিক্ষার্থীরা।
১২ জুলাই, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। বিক্ষোভ মিছিলে ‘বিএনপির বড় গুণ, দশমাসে দেড়শ খুন, যুবদলের বড় গুণ, পাথর মেরে মানুষ খুন’ শ্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
জামালপুর শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পাঁচ রাস্তাে মোড়ে গিয়ে শেষ হয় বিক্ষোভ মিছিল। পরে সেখানে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণ শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বিবেকের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী আল-আমীন রুহানী, আবিদ সৌরভ, আফরিন জান্নাত আঁখি, ফয়সাল আহাম্মেদ জুমান, মিজানুর রহমান, হৃদয় আহাম্মেদ শাওন প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, ৫ আগস্টের পর আমরা মনে করেছিলাম এদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। কিন্তু আমরা ৭১-২৪ পরবর্তী যেটা দেখছি তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে শঙ্কা বাড়ছে। জনগণের প্রত্যাশা ও আশা নিয়ে যে সরকার ক্ষমতায় যায় বা সরকার গঠন করে, আমরা দেখছি, এদেশের সাধারণ জনগণ তারা ভাল থাকতে পারে না। তাদের উপর চলে জুলুম আর নির্যাতন। আমি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাব আমাকে কেন চাঁদা দিতে হবে? আমি যখন চাঁদা দেব না, প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের টেণ্ডারবাজরা, চাঁদাবাজরা, দুর্নীতিবাজরা আমার উপর আক্রমণ চালাবে এবং হত্যা করবে। একটা স্বাধীন দেশে আমরা সাধারণ ছাত্র-জনতা কখনই তা প্রত্যাশা করি না।

তারা আরও বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, ছাত্রদল যারা করে তারা সাধারণ ছাত্রদের এই ব্যানারে একত্রিত হবেন। কারণ এই দাবি শুধুমাত্র ছাত্র আন্দোলনের দাবি না। এটা শুধু ছাত্র পরিষদের দাবি নয়। এটা ছাত্র শিবিরের দাবি নয়। সমস্ত সাধারণ শিক্ষার্থীর এবং প্রত্যেকটা ছাত্র সংগঠনের দাবি। কিন্তু আমরা দেখছি এখানে ছাত্রদল নেই। আজকে যদি ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা আসতেন আমরা খুশি হতাম। বুঝতাম ছাত্রদল চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে। হত্যার ঘটনায় ছাত্রদল ও যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি তাদেরকে বহিষ্কার করেছে। কিন্তু আমরা আশা করি এখানে ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির একটা দারুণ ভূমিকা রাখবে যাতে নতুন করে কেউ চাঁদাবাজি করতে না পারে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি এই হত্যার বিচার করতে না পারে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা আন্দোলন গড়ে তুলব।
এই প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিলে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের বিপুল সংখ্যক সাধারণ শিক্ষার্থী অংশ নেন।