ঢাকা ০৪:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
টিকিট কালোবাজারি জামাল গ্রেপ্তার, ৮টি টিকিট জব্দ শেরপুর দোকান মালিক ঐক্য পরিষদের কমিটি গঠিত মাদারগঞ্জে সেচ্ছাসেবকদল নেতার গোয়ালঘরের তালা ভেঙে আটটি গরু চুরি নিরাপদ সড়ক দিবস : জামালপুরে শোভাযাত্রা, পথসভা ও হেলমেট বিতরণ দেওয়ানগঞ্জে মাদরাসাছাত্র হত্যা : দুই আসামিকে আটকাদেশ ইসলামপুরে কাবিখা-কাবিটা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ, কাগজে কলমেই প্রকল্প সীমাবদ্ধ মাদারগঞ্জে পতিত জমিতে কৃষি কর্মকর্তার বিষমুক্ত সবজি বাগান মাদারগঞ্জে ফলিত পুষ্টি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু অভিজ্ঞতার গল্পগুলো মনের পুষ্টি যোগায় : কিশোরীদের সাথে মতবিনিময় সভায় ইউএনও জিন্নাত শহীদ পিংকী সরিষাবাড়ীতে চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম, থানায় অভিযোগ

ইস্টার উদযাপনের প্রস্তুতিতে খ্রিস্টান সম্প্রদায়

আগামী রবিবার ইস্টার উদযাপন করতে যাচ্ছেন ক্যাথলিক, প্রোটেস্ট্যান্ট ও অর্থোডক্স খ্রিস্টানরা। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই উৎসবটি যিশুর মৃত্যু ও তাঁর পুনরুত্থানকে স্মরণ করে শতাব্দী প্রাচীন রীতিনীতির মাধ্যমে উদযাপিত হয়।

ইস্টারের নির্দিষ্ট কোনো তারিখ নেই। বসন্তকালীন পূর্ণিমার পরবর্তী রবিবারেই এই দিনটি পালন করা হয়। এর আগে আসে চল্লিশ দিনের উপবাস ও প্রার্থনার সময় যিশুর মরুভূমিতে কাটানো সময়ের স্মরণে ‘লেন্ট’ পালন করা হয়।

‘হলি উইক’ শুরু হয় ‘পাম সানডে’ দিয়ে, যা প্রায় ২,০০০ বছর আগে যিশুর জেরুজালেমে প্রবেশ এবং ইহুদি পাসওভার উৎসবে অংশগ্রহণকে স্মরণ করে।

‘মন্ডি থার্সডে’ পালিত হয় যিশুর শেষ আহার ‘লাস্ট সাপার’-এর স্মরণে। এই সময় তিনি তাঁর ১২ শিষ্যের সঙ্গে আহার করেন এবং মানবজাতির মুক্তির জন্য নিজের দেহ ও রক্ত উৎসর্গ করেন বলে খ্রিস্টানদের বিশ্বাস। এরপর যিশুকে গ্রেপ্তার করা হয়, জুডাসের বিশ্বাসঘাতকতার ফলে রোমান সৈন্যদের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

‘গুড ফ্রাইডে’ পালন করা হয় যিশুর ‘প্যাশন’ বা দুর্ভোগ ও ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার স্মরণে।

খ্রিস্টান মতে, যিশুকে ইহুদি নেতারা ঈশ্বরের পুত্র বলে দাবি করায় মিথ্যাচারের অভিযোগে এবং রোমানরা তাঁকে জনশৃঙ্খলা নষ্ট করার অভিযোগে অভিযুক্ত করে। পরে তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়।

বিশ্বাস করা হয়, যিশু বিকেল তিনটায় মারা যান। এরপর তাঁকে ক্রুশ থেকে নামিয়ে কাপড়ে জড়িয়ে সমাধিতে রাখা হয়।

এই দুর্ভোগের স্মরণে রোমের আলো-আলোকিত কলোসিয়ামে সন্ধ্যাকালীন ‘স্টেশন অব দ্য ক্রস’ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

‘হলি স্যাটারডে’ হলো শোক ও নীরবতার দিন। এই দিন শেষ হয় ‘ইস্টার ভিজিল’-এর মধ্য দিয়ে, যেখানে যিশুর মৃত্যু জয়ের প্রতীক হিসেবে ‘পাসকাল ক্যান্ডেল’ প্রজ্বলন করে পুনরুত্থানের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

প্রথা অনুযায়ী, এই ভিজিলেই প্রতিবছর প্রাপ্তবয়স্কদের ব্যাপটিজম অনুষ্ঠিত হয়।

‘ইস্টার সানডে’ উদযাপন করা হয় যিশুর পুনরুত্থানকে কেন্দ্র করে। যিশুর অনুসারী মেরি ম্যাগডালেন তাঁর কবর পরিদর্শনে গেলে দেখতে পান, কবরের প্রবেশপথে রক্ষিত পাথর সরে গেছে এবং যিশুর দেহ সেখানে নেই।

ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্টরা গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি অনুসারে একই দিনে ইস্টার উদযাপন করেন। অপরদিকে অর্থোডক্স চার্চ জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে। এবছর দুটি বর্ষপঞ্জির হিসাব মিলেছে, যা খুবই বিরল ঘটনা।

ইস্টার উদযাপন নানা ঐতিহ্যের মাধ্যমে পালিত হয়: ঘণ্টাধ্বনির মাধ্যমে তিন দিনের শোকের পর আনন্দের প্রত্যাবর্তন বোঝানো হয়; আর ডিম সাজানোর রীতি, যা জীবন ও পুনর্জন্মের প্রতীক, তার শিকড় বহু প্রাচীন কালে।

জনপ্রিয় সংবাদ

টিকিট কালোবাজারি জামাল গ্রেপ্তার, ৮টি টিকিট জব্দ

ইস্টার উদযাপনের প্রস্তুতিতে খ্রিস্টান সম্প্রদায়

আপডেট সময় ০৯:৩৩:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

আগামী রবিবার ইস্টার উদযাপন করতে যাচ্ছেন ক্যাথলিক, প্রোটেস্ট্যান্ট ও অর্থোডক্স খ্রিস্টানরা। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই উৎসবটি যিশুর মৃত্যু ও তাঁর পুনরুত্থানকে স্মরণ করে শতাব্দী প্রাচীন রীতিনীতির মাধ্যমে উদযাপিত হয়।

ইস্টারের নির্দিষ্ট কোনো তারিখ নেই। বসন্তকালীন পূর্ণিমার পরবর্তী রবিবারেই এই দিনটি পালন করা হয়। এর আগে আসে চল্লিশ দিনের উপবাস ও প্রার্থনার সময় যিশুর মরুভূমিতে কাটানো সময়ের স্মরণে ‘লেন্ট’ পালন করা হয়।

‘হলি উইক’ শুরু হয় ‘পাম সানডে’ দিয়ে, যা প্রায় ২,০০০ বছর আগে যিশুর জেরুজালেমে প্রবেশ এবং ইহুদি পাসওভার উৎসবে অংশগ্রহণকে স্মরণ করে।

‘মন্ডি থার্সডে’ পালিত হয় যিশুর শেষ আহার ‘লাস্ট সাপার’-এর স্মরণে। এই সময় তিনি তাঁর ১২ শিষ্যের সঙ্গে আহার করেন এবং মানবজাতির মুক্তির জন্য নিজের দেহ ও রক্ত উৎসর্গ করেন বলে খ্রিস্টানদের বিশ্বাস। এরপর যিশুকে গ্রেপ্তার করা হয়, জুডাসের বিশ্বাসঘাতকতার ফলে রোমান সৈন্যদের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

‘গুড ফ্রাইডে’ পালন করা হয় যিশুর ‘প্যাশন’ বা দুর্ভোগ ও ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার স্মরণে।

খ্রিস্টান মতে, যিশুকে ইহুদি নেতারা ঈশ্বরের পুত্র বলে দাবি করায় মিথ্যাচারের অভিযোগে এবং রোমানরা তাঁকে জনশৃঙ্খলা নষ্ট করার অভিযোগে অভিযুক্ত করে। পরে তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়।

বিশ্বাস করা হয়, যিশু বিকেল তিনটায় মারা যান। এরপর তাঁকে ক্রুশ থেকে নামিয়ে কাপড়ে জড়িয়ে সমাধিতে রাখা হয়।

এই দুর্ভোগের স্মরণে রোমের আলো-আলোকিত কলোসিয়ামে সন্ধ্যাকালীন ‘স্টেশন অব দ্য ক্রস’ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

‘হলি স্যাটারডে’ হলো শোক ও নীরবতার দিন। এই দিন শেষ হয় ‘ইস্টার ভিজিল’-এর মধ্য দিয়ে, যেখানে যিশুর মৃত্যু জয়ের প্রতীক হিসেবে ‘পাসকাল ক্যান্ডেল’ প্রজ্বলন করে পুনরুত্থানের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

প্রথা অনুযায়ী, এই ভিজিলেই প্রতিবছর প্রাপ্তবয়স্কদের ব্যাপটিজম অনুষ্ঠিত হয়।

‘ইস্টার সানডে’ উদযাপন করা হয় যিশুর পুনরুত্থানকে কেন্দ্র করে। যিশুর অনুসারী মেরি ম্যাগডালেন তাঁর কবর পরিদর্শনে গেলে দেখতে পান, কবরের প্রবেশপথে রক্ষিত পাথর সরে গেছে এবং যিশুর দেহ সেখানে নেই।

ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্টরা গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি অনুসারে একই দিনে ইস্টার উদযাপন করেন। অপরদিকে অর্থোডক্স চার্চ জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে। এবছর দুটি বর্ষপঞ্জির হিসাব মিলেছে, যা খুবই বিরল ঘটনা।

ইস্টার উদযাপন নানা ঐতিহ্যের মাধ্যমে পালিত হয়: ঘণ্টাধ্বনির মাধ্যমে তিন দিনের শোকের পর আনন্দের প্রত্যাবর্তন বোঝানো হয়; আর ডিম সাজানোর রীতি, যা জীবন ও পুনর্জন্মের প্রতীক, তার শিকড় বহু প্রাচীন কালে।