ঢাকা ০৪:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
টিকিট কালোবাজারি জামাল গ্রেপ্তার, ৮টি টিকিট জব্দ শেরপুর দোকান মালিক ঐক্য পরিষদের কমিটি গঠিত মাদারগঞ্জে সেচ্ছাসেবকদল নেতার গোয়ালঘরের তালা ভেঙে আটটি গরু চুরি নিরাপদ সড়ক দিবস : জামালপুরে শোভাযাত্রা, পথসভা ও হেলমেট বিতরণ দেওয়ানগঞ্জে মাদরাসাছাত্র হত্যা : দুই আসামিকে আটকাদেশ ইসলামপুরে কাবিখা-কাবিটা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ, কাগজে কলমেই প্রকল্প সীমাবদ্ধ মাদারগঞ্জে পতিত জমিতে কৃষি কর্মকর্তার বিষমুক্ত সবজি বাগান মাদারগঞ্জে ফলিত পুষ্টি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু অভিজ্ঞতার গল্পগুলো মনের পুষ্টি যোগায় : কিশোরীদের সাথে মতবিনিময় সভায় ইউএনও জিন্নাত শহীদ পিংকী সরিষাবাড়ীতে চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম, থানায় অভিযোগ

বুধবার শুভ বড়দিন

খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’ বুধবার। এই ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট ২৫ ডিসেম্বর বেথলেহেমে জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা এ দিনটিকে ‘শুভ বড়দিন’ হিসেবে উদযাপন করে থাকেন।

খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষরা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টি-কর্তার মহিমা প্রচারের মাধ্যমে মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতেই প্রভু যিশুর পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের খ্রিস্টান ধর্মানুসারীরাও এ দিন যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্য ও আচারাদি, আনন্দ-উৎসব এবং প্রার্থনার মধ্যদিয়ে ‘শুভ বড়দিন’ উদযাপন করবেন।

এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গির্জাগুলোকে সাজানো হয়েছে নতুন-আঙ্গিকে। এ ছাড়াও মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন গির্জা এবং তারকা-হেটেলগুলোতে আলোক সজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন খ্রিস্টানদের ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ উপলক্ষে সম্প্রদায়ের নেতাদের জন্য ২৫ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে বঙ্গভবনে এক সংবর্ধনার আয়োজন করেছেন। দুপুর ১২টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপ্রধান এই উপলক্ষে বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল হলে গণমাধ্যমের মাধ্যমে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে একটি শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি একটি কেক কাটবেন এবং পরে ধর্মীয় নেতাদের সাথে ফটোসেশনে অংশ নেবেন।

বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস খ্রিস্টধর্মাবলম্বীসহ সকলের শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বাণীতে সাহাবুদ্দিন বলেন, যীশুখ্রিষ্টের জন্মদিনকে বিশ্বব্যাপী খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীগণ যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে ‘বড়দিন’ হিসেবে উদ্যাপন করে থাকেন। খ্রিষ্ট ধর্মানুসারীদের মতে যীশুখ্রিষ্ট ছিলেন সত্যান্বেষী, মানবজাতির মুক্তির দূত এবং আলোর দিশারি। স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি পৃথিবীকে শান্তির আবাসভূমিতে পরিণত করতে তিনি সৃষ্টিকর্তার মহিমা ও শান্তির বাণী প্রচার করেন। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রীতি ও ঐক্য স্থাপনসহ বর্তমান যুদ্ধ-বিগ্রহপূর্ণ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যীশুখ্রিষ্টের শিক্ষা ও আদর্শ ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ উপলক্ষ্যে বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ সম্প্রদায়ের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, খ্রিষ্টান ধর্মের প্রবর্তক যীশু খ্রিষ্ট এই দিনে বেথেলহেমে জন্মগ্রহণ করেন। পৃথিবীতে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রবর্তন ছিল যীশু খ্রিষ্টের অন্যতম ব্রত। মহামতি যীশু বিপন্ন ও অনাহারক্লিষ্ট মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেন। তাঁর জীবনাচরণ ও দৃঢ় চারিত্রিক গুণাবলির জন্য তিনি মানব ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হাজার বছর ধরে এদেশে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল ধর্মের মানুষ একসাথে মিলেমিশে বসবাস করছে। এখানে রয়েছে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের নিজস্ব ধর্ম পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা। বড়দিন দেশের খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যকার বিরাজমান সৌহার্দ ও সম্প্রীতিকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বড়দিন উপলক্ষে আগামীকাল সরকারি ছুটি। অপরদিকে দিনটি উপলক্ষে অনেক খ্রিষ্টান পরিবারে কেক তৈরি করা হবে, থাকবে বিশেষ খাবারের আয়োজন। এ ছাড়াও দেশের অনেক অঞ্চলে ধর্মীয় গানের আয়োজন করা হয়েছে।

খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অনেকেই আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য বড়দিনকে বেছে নেন। পরিবারের সদস্যদের সাথে আনন্দ ভাগ করে নিতে অনেকেই রাজধানী ছেড়ে গিয়েছেন গ্রামের বাড়িতে।

রাজধানীর তারকা হোটেলগুলোতে আলোক সজ্জার পাশাপাশি হোটেলের ভেতরে কৃত্রিমভাবে স্থাপন করা হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি ও শান্তাক্লজ। বড়দিনের প্রাক্কালে আজ মঙ্গলবার রাতে বিভিন্ন গির্জায় বিশেষ প্রার্থনাও অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার সকাল থেকে শুরু হবে বড়দিনের প্রার্থনা।

জনপ্রিয় সংবাদ

টিকিট কালোবাজারি জামাল গ্রেপ্তার, ৮টি টিকিট জব্দ

বুধবার শুভ বড়দিন

আপডেট সময় ১১:০৮:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’ বুধবার। এই ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট ২৫ ডিসেম্বর বেথলেহেমে জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা এ দিনটিকে ‘শুভ বড়দিন’ হিসেবে উদযাপন করে থাকেন।

খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষরা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টি-কর্তার মহিমা প্রচারের মাধ্যমে মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতেই প্রভু যিশুর পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের খ্রিস্টান ধর্মানুসারীরাও এ দিন যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্য ও আচারাদি, আনন্দ-উৎসব এবং প্রার্থনার মধ্যদিয়ে ‘শুভ বড়দিন’ উদযাপন করবেন।

এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গির্জাগুলোকে সাজানো হয়েছে নতুন-আঙ্গিকে। এ ছাড়াও মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন গির্জা এবং তারকা-হেটেলগুলোতে আলোক সজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন খ্রিস্টানদের ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ উপলক্ষে সম্প্রদায়ের নেতাদের জন্য ২৫ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে বঙ্গভবনে এক সংবর্ধনার আয়োজন করেছেন। দুপুর ১২টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপ্রধান এই উপলক্ষে বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল হলে গণমাধ্যমের মাধ্যমে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে একটি শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি একটি কেক কাটবেন এবং পরে ধর্মীয় নেতাদের সাথে ফটোসেশনে অংশ নেবেন।

বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস খ্রিস্টধর্মাবলম্বীসহ সকলের শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বাণীতে সাহাবুদ্দিন বলেন, যীশুখ্রিষ্টের জন্মদিনকে বিশ্বব্যাপী খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীগণ যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে ‘বড়দিন’ হিসেবে উদ্যাপন করে থাকেন। খ্রিষ্ট ধর্মানুসারীদের মতে যীশুখ্রিষ্ট ছিলেন সত্যান্বেষী, মানবজাতির মুক্তির দূত এবং আলোর দিশারি। স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি পৃথিবীকে শান্তির আবাসভূমিতে পরিণত করতে তিনি সৃষ্টিকর্তার মহিমা ও শান্তির বাণী প্রচার করেন। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রীতি ও ঐক্য স্থাপনসহ বর্তমান যুদ্ধ-বিগ্রহপূর্ণ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যীশুখ্রিষ্টের শিক্ষা ও আদর্শ ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ উপলক্ষ্যে বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ সম্প্রদায়ের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, খ্রিষ্টান ধর্মের প্রবর্তক যীশু খ্রিষ্ট এই দিনে বেথেলহেমে জন্মগ্রহণ করেন। পৃথিবীতে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রবর্তন ছিল যীশু খ্রিষ্টের অন্যতম ব্রত। মহামতি যীশু বিপন্ন ও অনাহারক্লিষ্ট মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেন। তাঁর জীবনাচরণ ও দৃঢ় চারিত্রিক গুণাবলির জন্য তিনি মানব ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হাজার বছর ধরে এদেশে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল ধর্মের মানুষ একসাথে মিলেমিশে বসবাস করছে। এখানে রয়েছে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের নিজস্ব ধর্ম পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা। বড়দিন দেশের খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যকার বিরাজমান সৌহার্দ ও সম্প্রীতিকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বড়দিন উপলক্ষে আগামীকাল সরকারি ছুটি। অপরদিকে দিনটি উপলক্ষে অনেক খ্রিষ্টান পরিবারে কেক তৈরি করা হবে, থাকবে বিশেষ খাবারের আয়োজন। এ ছাড়াও দেশের অনেক অঞ্চলে ধর্মীয় গানের আয়োজন করা হয়েছে।

খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অনেকেই আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য বড়দিনকে বেছে নেন। পরিবারের সদস্যদের সাথে আনন্দ ভাগ করে নিতে অনেকেই রাজধানী ছেড়ে গিয়েছেন গ্রামের বাড়িতে।

রাজধানীর তারকা হোটেলগুলোতে আলোক সজ্জার পাশাপাশি হোটেলের ভেতরে কৃত্রিমভাবে স্থাপন করা হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি ও শান্তাক্লজ। বড়দিনের প্রাক্কালে আজ মঙ্গলবার রাতে বিভিন্ন গির্জায় বিশেষ প্রার্থনাও অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার সকাল থেকে শুরু হবে বড়দিনের প্রার্থনা।