জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার হাতিভাঙ্গা ইউনিয়নের সাকোয়াপাড়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠ দখল করে সবজি চাষের খবরটি প্রকাশ হবার পর জনমনে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে। বাংলারচিঠিতে খবরটি পাঠে সাধারণ মানুষের মতো শিক্ষা সংশ্লিষ্ট মহল বিস্ময় প্রকাশ করেছে। আমরাও হতবাক হয়েছি।
জানা যায়, জামালপুর জেলার উত্তরের জনপদ যমুনা-ব্রহ্মপুত্র বেষ্টিত পশ্চাৎপদ উপজেলা দেওয়ানগঞ্জ। অন্যান্য উপজেলার চেয়ে শিক্ষার হার তুলনামূলকভাবে এখানে কম। এ অবস্থায় সাকোয়াপাড়া উচ্চবিদ্যালয়টি নানাভাবে সুবিধাবঞ্চিত। কর্তৃপক্ষের বিমাতাসুলভ আচরণের শিকার। ২০০২ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ২০১০ সালে এমপিওভুক্ত হয়। ১২ জন শিক্ষক, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছয়জন। প্রতিদিন চার শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীর পদভারে মুখর হয়ে থাকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের ফলাফলও সন্তোষজনক বলে ওই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির নিরন্তর চেষ্টায় পড়ালেখার মান ভালো হলেও বিদ্যালয় ভবনের জীর্ণদশায় মনোকষ্টের কারণ হয়ে থাকে সবার। উপরন্তু চলতি বছর এলাকার প্রভাবশালী মহল নিজেদের জমি দাবি করে বিদ্যালয়ের পুরো মাঠ দখল করে সবজি আবাদ করেছে। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে নিদারুণ কষ্টবোধের পাশাপাশি তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ক্ষোভ থেকে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে আশ্চর্য হবো না।
ছাত্র-ছাত্রীদের মনো-সামাজিক উন্নয়নে খেলাধুলা হলো অন্যতম একটা অনুসঙ্গ। অথচ খেলার মাঠটিই দখল করে সবজি চাষ করা হয়েছে। এহেন কাজ শুধু গর্হিতই নয় শিক্ষা, ক্রীড়া ও সুস্থধারার সংস্কৃতি চর্চার পরিপন্থি। যারা এ উদ্ভট কাজটি করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনেই ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে। যদি জমির মালিকও তিনি হয়ে থাকেন তবুও শিক্ষার পরিবেশ ধংস করে এমন কাজ করা মোটেই ঠিক হয় নাই। এমপিওভুক্ত বিদ্যালয় হিসেবে অবশ্য এ মাঠটি যে বিদ্যালয়ের নামে তার দালিলিক প্রমাণ নিশ্চয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট সংরক্ষণ আছে।
অবিলম্বে বিদ্যালয়ের মাঠ অবমুক্ত করে খেলার উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে উদাত্ত আহ্বান জানাই। একই সাথে বিদ্যালয়টি সংস্কার এবং বহুতল ভবন নির্মাণ করে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদা আলাদা পয়ঃনিষ্কাষণ ও নামাজের স্থান করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
জাহাঙ্গীর সেলিম, সম্পাদক 
























