ধানুয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১২ ইউপি সদস্যের অনাস্থা

মশিউর রহমান লাকপতি

জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু
বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম

অনিয়ম, দুর্নীতি, দু:স্থদের ভিজিডির চাল আত্মসাত, টিসিবির পণ্য আত্মসাত ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে জামালপুরের বকশীগঞ্জের ধানুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান লাকপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে ১২ ইউপি সদস্য।

গত ২৩ জানুয়ারি ধানুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ জন সাধারণ সদস্য ও ৩ জন নারী ইউপি সদস্য রেজুলেশনের মাধ্যমে বর্তমান চেয়ারম্যান মশিউর রহমান লাকপতির নামে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন।

এই অনাস্থা প্রস্তাবটি আমলে নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ২৫ জানুয়ারি বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবার আবেদন করেছেন ১২ ইউপি সদস্য। তারা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান লাকপতির অপসারণের দাবি জানান।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে ধানুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান লাকপতি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অত্র পরিষদের ১২ জন ইউপি সদস্যকে পাশ কাটিয়ে একক স্বেচ্ছাচারিতায় সীমাহীন দুর্নীতি করে আসছেন। চেয়ারম্যান মশিউর রহমান লাকপতি ইউপি সদস্যদের সাথে উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে কোন আলোচনা না করে পরিষদের বাইরের লোক দিয়ে কাজ পরিচালনা করে আসছেন।

তিনি ২০২৩-২০২৪ সালের ভিজিডি কার্ডধারীদের নামের তালিকায় ১২ জন দু:স্থ নারীর নাম অনুমোদন হলেও কার্ডধারীদের কার্ড না দিয়ে নিজেই চাল উত্তোলন করে প্রতি মাসের চাল আত্মসাত করে আসছেন।

গরিব অসহায়দের জন্য টিসিবি কার্ডের পণ্য বিতরণ না করে তা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনি তার লোক দিয়ে টিসিবির পণ্য উত্তোলন করে কালো বাজারে বিক্রি করে বলেও জানান ইউপি সদস্যরা। এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্পের নামে অর্থ আত্মসাত করারও অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান মশিউর রহমান লাকপতির বিরুদ্ধে।

মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য গর্ভবতী নারীদের তালিকা করতেও ১০ হাজার টাকা করেও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পরিষদের ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স এর টাকা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ করেন ইউপি সদস্যরা।

ধানুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছামিউল হক জানান, চেয়ারম্যান লাকপতি স্বৈরাচারের ভূমিকায় রয়েছেন। কোন সদস্যকে তিনি মূল্যায়ণ করে না। তার দুর্নীতির কারণে এই পরিষদের সুনাম ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। তিনি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ তদন্ত করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান।

এ বিষয়ে ধানুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান লাকপতি জানান, আমার বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যরা ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। আমি তাদের অনৈতিক সুবিধা না দেওয়ায় তাঁরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন।

বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অহনা জিন্নাত বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ধানুয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।