জামালপুর সদর উপজেলায় ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি কর্মশালা

জামালপুর সদর উপজেলায় ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।ছবি:বাংলারচিঠিডটকম

মাহমুদুল হাসান মুক্তা, জামালপুর প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুর সদর উপজেলায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের উদ্যোগে কেএফডব্লিও এবং ক্লাইমেট ব্রিজ ফান্ড (সিবিএফ) এর আর্থিক সহযোগিতায় “নিরাপদ অভিবাসন ও বিদেশ-ফেরতদের পুনরেকত্রীকরণ” বিষয়ক উপজেলা অ্যাডভোকেসি কর্মশালা ১০ এপ্রিল সকালে উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটুস লরেন্স চিরানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হোসেন।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন মো. আরিফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর, ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম, জামালপুর। তিনি ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সেবা প্রদান, বিদেশ ফেরত ও গমনেচ্ছুদের বিভিন্ন সমস্যা ও তার সমাধান এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কিভাবে মোকাবেলা করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, আমাদের উপজেলা থেকে বিদেশ গমনেচ্ছুক সংখ্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে, এটা জামালপুরের তথা সমগ্র বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক। এই সেক্টরকে আরো গতিশীল করার জন্য আমাদের সকলের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে আমার উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। আপনারা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম আপনাদের কর্মকাণ্ডের সেবা সম্বলিত লিফলেট, ফেস্টুন ইত্যাদি আমাদের কাছে দিলে আমরা ইউনিয়ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দিব।

তিনি আরো বলেন, আমি নিজেও জানতাম ফ্রি ভিসাই হচ্ছে সর্বোচ্চ সুবিধাজনক ভিসা কিন্তু আজকের কর্মশালা হতে জানতে পারলাম এটাই হচ্ছে প্রতারণার প্রথম হাতিয়ার। তাই যারা বিদেশ যেতে চায় তারা যেন সবকিছু বুঝে ডেমো অফিসের সাথে যোগাযোগ করে যায় এই প্রত্যাশা রাখেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটুস লরেন্স চিরান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির (পেশার) ট্রান্সফরমেশন হচ্ছে। একসময় আমরা ছিলাম কৃষি নির্ভর বর্তমানে চাকুরি নির্ভর। আগামীতে আমরা ইন্ডাস্ট্রির উপর নির্ভরশীল হতে যাচ্ছি। এই জন্য আমরা দক্ষ জনশক্তি তৈরি করার দিকে নজর দিচ্ছে। দক্ষ জনশক্তিই পারে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথ সুগম করতে। তিনি ব্র্র্যাককে ধন্যবাদ জানান যে ব্র্যাক রেমিটেন্স আয়ের সাথে সম্পর্কিত সময়োপযোগী একটি কর্মশালা হাতে নিয়েছে। রেমিটেন্স বর্তমানে বাংলাদেশের জিডিপিতে ১২% অবদান রাখছে, আজকের কর্মশালা হতে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দক্ষ হয়ে অভিবাসন প্রত্যাশীগণ বিদেশ গমন করলে আমাদের জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান আরো বৃদ্ধি পাবে এমনই আশা করেন তিনি।

জামালপুর ব্যাক ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর মো. মনির হোসেনের সঞ্চালনায় এই কর্মশালাটিতে বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিগণ, পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের কর্মকর্তাসহ বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপক, শিক্ষকমন্ডলী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, বিদেশ ফেরত অভিবাসী এবং ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের অন্যান্য প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এরপর মুক্ত আলোচনায় বিদেশ ফেরত কয়েকজন অভিববাসীর বিদেশে অবস্থানকালীন ও ফেরত পরবর্তী করুণ কাহিনী এবং অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন যা উপস্থিত সকল অংশগ্রহণকারীদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।