স্বপ্ন বুনবে দৃষ্টিনন্দন বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে যমুনার দুর্গম চরের সাপধরীবাসী

সাপধরী উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

লিয়াকত হোসাইন লায়ন, ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের ইসলামপুর যমুনার দুর্গম চরাঞ্চলবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও দুর্যোগ মোকাবেলায় সাপধরী উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এমপি’র ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় চরবাসীর উন্নয়নে সাপধরী ইউনিয়নের বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। তিনতলা ভবনটি নির্মাণে পাঠদানের পাশাপাশি বন্যায় সহস্রাধিক পরিবার আশ্রয় নিতে পারবে।

দুর্গম চরে ভবনটি স্থাপিত হওয়ায় উদ্বোধনের আগেই এবারের বন্যায় নির্বিঘ্নে আশ্রয় নিয়েছেন কয়েকটি পরিবার। বন্যায় দুর্ভোগ ও কষ্ট লাঘব পেয়ে স্বস্থির কথাই জানিয়েছেন তারা।

জানা গেছে, বন্যা প্রবণ ও নদী ভাঙ্গন এলাকায় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প (৩য় পর্যায়) আওতায় ২০১৯-২০২১ অর্থ বছরের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নে তিন কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে।

যমুনার দুর্গমচরাঞ্চলে বন্যা কবলিত ও নদী ভাঙ্গনের শিকার মানুষের জীবনমান পরিবর্তন ও বন্যায় নিশ্চিন্তে আশ্রয় নিতে বিশাল অট্রালিকার মতো গ্রামে শহরের ছোয়ায় সরকারের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন আশ্রিত মানুষগুলো।

সাপধরী উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

২ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে দেখা গেছে, এবারে বন্যায় কয়েকটি পরিবার বসতবাড়িতে পানি উঠায় আশ্রয় নিয়েছেন। আশ্রিত পরিবারগুলো স্বপ্নের ছোয়া পেয়েছেন জানিয়ে বলেন, ভাবিনি সরকার অবহেলিত আমাদের চরের জন্য আশ্রয় করে দেবেন। আশ্রয়ণ কেন্দ্রে থাকার ব্যবস্থা, বন্যায় তাদের দুর্ভোগকে ভুলিয়ে দিয়েছে।

আব্দুল বাতেন জানান, জাহিন ট্রেডার্স-প্যারেন্টস এন্ড সন্স সঠিকভাবে দুর্গম যমুনার চরে দৃষ্টিনন্দন এই ভবনটি নির্মাণ করেছে। কাজের গুনগত মান ঠিক থাকায় শত বছর ভবনটি এই এলাকা আলোকিত করবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু জানান, বন্যা প্রবণ ও নদী ভাঙ্গন এলাকায় বন্যা আশ্রয়ণ কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শেষ প্রায়। ইতিমধ্যে উপপরিচালক জালাল উদ্দিন পরিদর্শন করেছেন।

সাপধরী ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন জানান, বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রটি নির্মাণের ফলে আক্রান্তরা আশ্রয় নেয়ার পাশাপাশি উচ্চ বিদ্যালয় হওয়ায় চরবাসীকে শিক্ষায় আলোকিত করতে এই ভবনটি যুগযুগ ধরে সরকারের একটি আলোকিত চেরাগ হয়ে সাপধরী ইউনিয়নের ঐতিহ্য বহন করবে। প্রতিষ্ঠানটিতে মনোরম পরিবেশে শিক্ষার্থী ও শিক্ষককের মিলন মেলা ও পাঠদান কার্যক্রম চলবে। যা চরবাসী জীবনেও কল্পনাও করতে পারেনি। তবে সন্নিকটে নদী ভাঙ্গন দেখা দেওয়ায় দ্রুত প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।