কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ বাংলাদেশের যতগুলো উপকারী ফল জন্মে তারমধ্যে কাঁঠালের নাম সবার ওপরের দিকে রয়েছে । কাঁঠাল বাংলাদেশে জন্মানো এমন একটি ফল যাতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ, ওষুধিগুণ ও উপকারিতা । মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপাদান যেমন থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রনসহ বিভিন্ন প্রকারের পুষ্টি উপাদান।

এছাড়া আমিষ, শর্করা এবং বিভিন্ন রকম ভিটামিনের ভান্ডার হচ্ছে এই কাঁঠাল। তাই চলুন আজকে আমরা জেনে নিই স্বাস্থ্য গঠনে কাঁঠালের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা এবং অল্প কিছু অপকারিতা।

কাঁঠালের উপকারিতা :

পটাশিয়ামের উৎস: কাঠাল বিভিন্ন খনিজ উপাদানে ভরপুর। তাই কাঁঠাল পটাশিয়ামের একটি উৎকৃষ্ট উৎস। ১০০ গ্রাম কাঁঠালে পটাশিয়ামের পরিমাণ ৩০৩ মিলিগ্রাম। পটাসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে । এজন্য কাঠালে উত্তর উচ্চ রক্তচাপে উপশম হয়।

ফ্যাট কম: কাঁঠালের ক্ষতিকারক ফ্যাটের পরিমাণ কম তাই কাঁঠাল খেলে ওজন বাড়ার খুব একটা আশঙ্কা থাকে না

নার্ভ এন্ড ডাইজেস্ট: টেনশন, নার্ভাসনেস এবং বদ হজম কমাতে সাহায্য করে কাঁঠাল।

হাড়: কাঁঠালে থাকে ম্যাগনেসিয়াম ক্যালসিয়ামের মতো হাড় গঠনে এবং শক্তিশালী করতে সহায়তা করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য: কাঁঠাল একটি আঁশযুক্ত খাবার। এই আঁশ যা ফাইবার নামে পরিচিত তাতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

রক্তস্বল্পতা: কাঁঠালে রয়েছে খনিজ উপাদান আয়রন যা দেহের রক্তস্বল্পতা দূর করে।

শিশু খাদ্য হিসেবে: ছয়মাস বয়সের পর থেকে ডাক্তারের পরামর্শ মতে মায়ের দুধের পাশাপাশি কাঁঠালের রস খাওয়ানো যেতে পারে। যা একটি শিশুর বিভিন্ন খাদ্য চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি ক্ষুধা নিরাময় করে।

গর্ভবতী এবং নতুন মায়ের জন্য উৎকৃষ্ট উপকারি খাদ্য: গর্ভবতী মহিলারা কাঁঠাল খেলে তার স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকে এবং গর্ভস্থসন্তানের বৃদ্ধি স্বাভাবিক। চিকিৎসকদের মতে প্রতিদিন ২০০ গ্রাম পাকা কাঁঠাল খেলে গর্ভবতী মহিলা ও তার গর্ভে ধারণ কিন্তু শিশুর সব ধরনের পুষ্টি উপাদান দূর হয় এছাড়া দুগ্ধদানকারী মা প্রতিদিন পাকা কাঁঠাল খেলে তার দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

কাঁঠালের পুষ্টিগুণ :

ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ : ভিটামিন সি মানব দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি চুল দাঁত ও দাঁতের মাড়ি সুস্থ রাখতে সহায়তা কর। আর এই ভিটামিন সি রয়েছে কাঁঠালে। এই ফলে থাকা ভিটামিন এ রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

ফাইটো-নিউট্রিয়েন্টস : কাঁঠালে থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস আলসার ক্যান্সার উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে প্রতিরোধে সহায়তা করে।

এন্টি অক্সিডেন্ট : মানবদেহ বুড়িয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী হচ্ছে ফ্রি রেডিক্যালস আর কাঁঠালে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট ফ্রি রেডিক্যালস থেকে আমাদের দেহকে রক্ষা করে এছাড়াও আমাদের শরীরে সর্দি কাশি রোগ সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা এই এন্টিঅক্সিডেন্ট এর কাজ।

ম্যাঙ্গানিজ : কাঁঠালে থাকা প্রচুর পরিমাণে খনিজ উপাদান এবং ম্যাঙ্গানিজ যা রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

ভিটামিন বি৬ : কাঁঠালে থাকা ভিটামিন বি৬ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

কাঁঠালের ওষুধিগুণ :

কাঁঠালের রয়েছে বিভিন্ন ওষুধি গুনাগুন কাঁঠাল গাছের শিকড় বিভিন্ন রোগের নিরাময় প্রতিষেধক এবং উপশমকারী।

এজমা : কাঁঠালের শেকড় হাঁপানি নিরাময় করতে সাহায্য করে। যাদের হাঁপানি সমস্যা রয়েছে তারা কাঁঠালের শেকড় সিদ্ধ করে তার পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করলে তা তাদের রোগ এর প্রকোম কমাতে সহায়তা করে।

কাঁঠালের শেকড় চর্ম রোগের সমস্যার সমাধান ও খুবই কার্যকরী ।

এছাড়া জ্বর এবং ডায়রিয়া নিরাময় ও কাঁঠালের শেকড় খুব ভালো উপকার করে।

কাঁঠালের অপকারিতা :

কাঁঠালের এত এত উপকারিতার মাঝেও তা খেতে কিছু জিনিশ মাথায় রাখতে হবে। কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণ আমিষ থাকায় কাঁঠাল একটি গুরুপাক ফল। মানে আমিষের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি হজম হতে সময় বেশি নেয়। অধিক পরিমাণে কাঠাল খেলে তা বদহজম হতে পারে। এছাড়া ডায়েবেটিক আক্রান্ত রোগীদের কাঁঠাল খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা উচিৎ।