মালয়েশিয়াফেরত সেই রায়হানকে চাকরি দিলো ব্র্যাক

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ করোনা অতিমারির মধ্যেও অভিবাসীদের প্রতি মালয়েশিয়া সরকারের নিষ্ঠুর আচরণ নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিয়ে গ্রেপ্তার ও কারাভোগ করা বাংলাদেশি তরুণ রায়হান কবির দেশে ফিরে প্রবাসীদের অধিকার রক্ষার জন্য কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিলেন। অবশেষে তার সেই আশা পূরণ হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামে ইনফরমেশন সার্ভিস সেন্টার অফিসার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি।

২৮ জানুয়ারি দুপুরে রায়হানের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান। তিনি জানান, রায়হান যেভাবে প্রবাসীদের অধিকার রক্ষার জন্য লড়াই করেছিলেন সেটি যে কাউকে মুগ্ধ করবে। রায়হান সবসময় প্রবাসীদের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলেন। ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামে তিনি সেই সুযোগ পাবেন। প্রবাসীদের বিমানবন্দরে জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য ঢাকা বিমানবন্দরের উল্টো দিকে ব্র্যাকের একটি তথ্য ও সেবা কেন্দ্র রয়েছে। গত দুই বছর সেখান থেকে ১৭ হাজার মানুষকে নানা ধরনের সেবা দিয়েছি। মালয়েশিয়া থেকে একযুগ আগে ফেরা আরেক প্রবাসীকর্মী আল আমিন নয়ন সেই সেন্টারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সেখানে এখন নয়ন ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করবেন রায়হান।

নিয়োগপত্র পাওয়ার পর নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে রায়হান কবির বলেন, ‘প্রবাসীরা রেমিট্যান্স যোদ্ধা। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তাদের অর্জন অনেক। তারপরেও তারা প্রায়ই দুর্দশায় পড়েন। এই প্রবাসীদের জন্য কিছু করার ইচ্ছা ছিল অনেক আগে থেকেই। মালয়েশিয়াতেও সেটা করেছি। এখনও করবো।’

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩ জুলাই আল জাজিরার ইংরেজি অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ‘লকডআপ ইন মালয়েশিয়ান লকডাউন-১০১ ইস্ট’ শীর্ষক এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে মালয়েশিয়ায় থাকা প্রবাসী শ্রমিকদের প্রতি লকডাউন চলাকালে দেশটির সরকারের নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরা হয়। ওই প্রামাণ্য প্রতিবেদনে বাংলাদেশিদের পক্ষে বক্তব্য দেন রায়হান কবির। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মালয়েশিয়ার পুলিশ তার বিরুদ্ধে সমন জারি করে। ২৪ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিবাসন নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশের ২১টি সংগঠনসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন এই গ্রেফতারের নিন্দা জানায় অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করে। মালয়েশিয়া সরকার তাকে কয়েকদফা জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে মালয়েশিয়া সরকার তাকে নির্দোষ হিসেবে ২২ আগস্ট বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়।