জামালপুরে করোনাজয়ী ফের আক্রান্ত, নতুন আক্রান্ত ১০, মোট ২৫৪

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠি ডটকম

জামালপুরে ২ জুন নতুন করে আরও ১০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত হলো ২৫৪ জন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে করোনাজয়ী এক ব্যক্তি ফের আক্রান্ত হওয়াসহ করোনায় আক্রান্ত দুই বছর বয়সের সন্তানের আইসোলেশনে পরিচর্যাকারীনী মা, পুলিশ পরিদর্শক, পুলিশ কনস্টেবল, ব্যাংক কর্মকর্তা ও সাধারণ শ্রেণির ব্যক্তিরা রয়েছেন। জামালপুর জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, ২ জুন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে জামালপুর সদর উপজেলায় সাতজন, সরিষাবাড়ী, মেলান্দহ ও বকশীগঞ্জ উপজেলায় রয়েছেন একজন করে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সরিষাবাড়ী উপজেলায় কর্মরত একজন পুলিশ পরিদর্শক রয়েছেন। তার বয়স ৩৮ বছর। তিনি উপজেলার যমুনা সারকারখানা এলাকায় তারাকান্দি তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তাকে ৩ জুন জেলা পুলিশের ব্যবস্থাপনায় আইসোলেশনে থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সূত্রটি আরও জানায়, জামালপুর সদর উপজেলায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত সাতজনের মধ্যে জামালপুর শহরের ৩৯ বছর বয়সের এক ব্যক্তি আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাতিষ্ঠানিক করোনা আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন। করোনাজয়ী হয়ে বাড়ি ফেরার পর স্বাস্থ্য বিভাগের ফলোআপ নমুনা পরীক্ষায় ফের তার করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হওয়ার পর নিজ বাসায় ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হওয়ার আগেই পুনরায় করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা জামালপুরে এটাই প্রথম। সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বিষয়টিকে ব্যতিক্রম হিসেবে দেখছেন। তার উপসর্গ স্বাভাবিক থাকায় এবার তাকে নিজ বাসাতেই আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে।

জামালপুর শহরের ছনকান্দা এলাকায় রিলায়েন্স হাসপাতালের একজন প্যাথলজিস্টের দুই বছর বয়সের মেয়ের সংস্পর্শে আসায় এবার ওই শিশুর মায়ের (২২) করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। গত ২২ মে শিশুটির করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়ার পর ১২ দিন ধরে ওই হাসপাতালে তার মায়ের সাথে আবাসিক আইসোলেশনে রয়েছে সে। ওই বাসাতেই আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে তার মাকেও। এছাড়া জামালপুর শহরের ফৌজদারি মোড় এলাকার ভাড়াটে বাসিন্দা সদর থানায় কর্মরত একজন পুলিশ কনস্টেবল (৩৮), মৃধাপাড়া এলাকায় ভাড়াটে বাসিন্দা পদ্মা ব্যাংক জামালপুর শাখার একজন সহকারী কর্মকর্তা (৩৪), সদরের কেন্দুয়া ইউনিয়নের বিনন্দেরপাড়ায় জামালপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একজন প্রশিক্ষক (৪১), জামালপুর শহরের পাথালিয়া এলাকার এক ব্যক্তি (৫২) এবং শ্রীপুর ইউনিয়নের গোলারবাগ গ্রামে ১১ বছর বয়সের এক মেয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। করোনা পজিটিভ হলেও তারা সুস্থ বোধ করায় প্রত্যেককে হোম আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে।

এদিকে মেলান্দহ উপজেলায় আক্রান্ত ব্যক্তি (২৮) ঢাকায় বিমানবন্দরের চাকরিজীবী ও উপজেলার চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়নের বেতমারী চরের বাসিন্দা। তাকে জামালপুরে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। বকশীগঞ্জ উপজেলার মালিরচর মন্ডলপাড়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে (৪২) হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।

জামালপুরের সিভিল সার্জন চিকিৎসক প্রণয় কান্তি দাস এ প্রতিবেদককে জানান, ২ জুন ময়মনসিংহের পিসিআর ল্যাবে জামালপুর জেলার ৯১টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন এই ১০ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক ও বাসাবাড়িতে আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আগে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পর পুনরায় করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিকে ব্যতিক্রম হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত মোট ২৫৪ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন। তাদের মধ্যে ২ জুন পর্যন্ত ১৩২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় এ পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে।