জামালপুরে দুই বছরের কন্যাশিশু ও নার্স করোনায় আক্রান্ত

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখতেন এমন একজন সরকারি চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এবার একই হাসপাতালের প্যাথলজিস্টের দুই বছরের কন্যাশিশু করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ২২ মে রাতে জামালপুর পিসিআর ল্যাব থেকে পাওয়া প্রতিবেদনে ওই শিশু এবং জামালপুর সদর হাসপাতালের একজন জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্সের করোনা পজিটিভ আসে। নতুন এই দু’জনসহ এ পর্যন্ত জেলায় ১৭০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। সদরের ইউএইচএফপিও চিকিৎসক লুৎফর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র জানায়, ২২ মে জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ৯৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে দু’জনের নমুনায় করোনা পজিটিভ আসে। বাকিদের সবার করোনা নেগেটিভ আসে। নতুন আক্রান্ত দু’জনই জামালপুর শহরের বাসিন্দা। গত ১৮ মে তাদের করোনা সন্দেহে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।

এ পর্যন্ত জেলায় সবচে’ কম বয়সে করোনায় আক্রান্ত দুই বছর বয়সের ওই শিশুটি জামালপুর শহরের ছনকান্দা এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন রিলায়েন্স হাসপাতালের একজন প্যাথলজিস্টের কন্যা। প্যাথলজিস্ট তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে হাসপাতালটির পাঁচতলায় বসবাস করেন। এর আগে ১৭ মে এই হাসপাতালে প্রাইভেট প্র্যাকটিসরত শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পদমর্যাদার একজন চিকিৎসকের (৫২) করোনা পজিটিভ আসে। করোনার উপসর্গের পাশাপাশি তার ডায়াবেটিস রয়েছে। ২২ মে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

সূত্রটি আরও জানায়, ওই চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর রিলায়েন্স হাসপাতালের ২৫ জন স্বাস্থ্যকর্মীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হলে তাদের মধ্যে শিশুটির করোনা পজিটিভ আসে। নমুনা দেওয়ার আগ পর্যন্ত ওই চিকিৎসক সেখানে নিয়মিত রোগী দেখতেন এবং ওই শিশুর বাসায় যাতায়াতের কারণে তারই সংস্পর্শে শিশুটি আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে বলে শিশুটির বাবা-মা, ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং জেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ধারণা করছেন। শিশুটির উপসর্গ স্বাভাবিক থাকায় তাকে হাসপাতালটির পাঁচতলায় তার মায়ের সাথে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।

এছাড়া করোনায় আক্রান্ত জামালপুর সদর হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্সকেও (৪) জামালপুর শহরের মুকুন্দবাড়ী কলাবাগান এলাকায় তার ভাড়াবাসায় আইসোলেশনে থাকতে এবং তার পরিবারের সদস্যদের আলাদা কক্ষে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তারও উপসর্গ স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন সদরের ইউএইচএফপিও।

জামালপুর সদরের ইউএইচএফপিও চিকিৎসক মো. লুৎফর রহমান এ প্রতিবেদককে জানান, রিলায়েন্স হাসপাতালের ওই শিশুটির বাবা-মাসহ ২৫ জন স্বাস্থ্যকর্মীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। হাসপাতালটির প্যাথলজিস্টের দুই বছরের মেয়েটির করোনা পজিটিভ আসে এবং বাকিদের সবার নেগেটিভ আসে। নেগেটিভ শনাক্ত হওয়া সকল স্বাস্থ্যকর্মীরা ২২ মে রাতের মধ্যে হাসপাতাল ত্যাগ করে বাড়িতে চলে গেছেন। একই সাথে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীভর্তিসহ তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখায় হাসপাতালটি আর লকডাউনের কোনো প্রয়োজন পড়ছে না। তবে হাসপাতালের পাঁচতলায় শিশুটির বাবা এক কক্ষে কোয়ারেন্টিনে থাকবেন এবং অন্য একটি কক্ষে শিশুটি তার মায়ের সাথে আইসোলেশনে থাকবে।

তিনি আরও জানান, শিশুটিকে সুস্থ করে তুলতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। করোনায় আক্রান্ত সদর হাসপাতালের স্টাফ নার্সকে তার বাসায় আইসোলেশনে থাকতে বলা হয়েছে। ওই নার্সের পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হবে।