সরিষাবাড়ীতে শিশুকে শিকলে বেঁধে মারধর

সরিষাবাড়ীতে সৎমা ও ভাইদের নির্যাতনের শিকার শিকলে বাঁধা শিশু। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় সৎমা ও সৎভাইদের বিরুদ্ধে শিকলে বেঁধে ১০ বছরের শিশুকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের একুশের মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিতা শিশুটি পালিয়ে ফুপুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বয়ড়া একুশের মোড় এলাকার ছলিম উদ্দিমের ছেলে রফিকুল ইসলাম দু’টি বিয়ে করেন। কয়েক বছর আগে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হয়। ওইপক্ষের ১০ বছর বয়সী একটি মেয়ে তার বাবার কাছেই থাকেন। ২২ এপ্রিল বিকেলে রফিকুলের প্রথম স্ত্রী ও (মেয়েটির সৎমা) বকুল বেগম (৪০) তাকে রান্নার লাকড়ি কুড়িয়ে আনতে বলেন। এ নিয়ে মা ও মেয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সৎমা বকুল বেগম, সৎভাই রতন, মনি ও বিপুল তাকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে মারধর শুরু করেন।

নির্যাতিতা শিশুটি জানায়, ‘মা আমার উপর রেগে গলা চেপে ধরে। আমি কান্নাকাটি করলে লোহার শিকলে দু’টি তালা দিয়ে হাত ও পা বাঁধে। তারপর সৎমা ও ভাই মিলে মারধর করে। সারারাত কিছু খেতে দেয়নি।’ শিশুটি আরো জানায়, ‘কান্নাকাটি করলে তারা আমাকে ছালার মধ্যে ভরে পানিতে ফেলে মেরে ফেলার ভয় দেখায়।’

জানা গেছে, শিশুটি ২৩ এপ্রিল ভোরে শিকলসহ পালিয়ে ডোয়াইল ইউনিয়নের ডিক্রিরবন্দ তার ফুপু সেলিনা বেগমের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে ওই বাড়ির লোকজন তার হাত-পায়ের শিকল হেক্সোব্লেড দিয়ে কেটে দেয়।

এ বিষয়ে শিশুটির ফুফা আব্দুল বারিক জানান, শিশুটি আসার পর তাকে শিকল থেকে মুক্ত করে খাবার দেওয়া হয়। বর্তমানে সে তার আশ্রয়ে আছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে শিশুটির বাড়িতে গিয়ে তার বাবার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। শিশুটির সৎমা বকুল বেগম নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মেয়েটি পাগল, তাই তাকে একটু গালাগাল করা হয়েছিল।’

এ ব্যাপারে তারাকান্দি তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মোহব্বত কবীর বলেন, ‘শিশু নির্যাতনের কোনো অভিযোগ পাইনি, পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’