করোনা মোকাবেলায় শেরপুরের হাসপাতালগুলোতে নেই ন্যূনতম সুরক্ষা ব্যবস্থা

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় শেরপুরের পাঁচটি উপজেলার হাসপাতালগুলোতে ন্যূনতম সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরেজমিনে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে কর্মরত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্সদের অভিযোগ এখানে সামান্য হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থাও নেই। এছাড়া প্রয়োজনীয় সুরক্ষা উপকরণ না থাকায় নিরাপত্তাজনিত কারণে তারা নিজেরাই আতঙ্কে আছেন।

সূত্র জানায়, জেলার সদরসহ নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী হাসপাতালে করোনাভাইরাস আক্রান্ত কোন রোগী নেই। তবে হাসপাতালগুলোতে জ্বর, সর্দি ও কাশির রোগীরা আসছেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোন করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত না হলেও ১২৭ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টিনে রেখেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এছাড়াও প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৫০ শয্যার আইসোলেশন।

মানববাধিকারকর্মী আক্তার উজ্জামান বলেন, তিনি ঝিনাইগাতী হাসপাতালে গিয়েছিলেন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে। সেখানে অবাধে মানুষ প্রবেশ করছে হাত না ধুয়ে। হাসপাতালে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা না থাকায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক চিকিৎসক মাজেদুর রহমান ও চিকিৎসা সহকারী (স্যাকমো) আবুল হাশেম বলেন, আমরা সবার থেকে বেশি হুমকির মধ্যে আছি। ব্যক্তিগতভাবে একটি কাপড়ের নরমাল মাস্ক ব্যবহার করছি। এখনো গাউন ও ক্যাপ পাইনি। এভাবেই আমাদের কাজ করে যেতে হচ্ছে। আবার বাসায় গিয়ে পরিবারের সঙ্গেও থাকতে হচ্ছে। এতে আমাদের পাশাপাশি আমাদের পরিবার-পরিজনদের মধ্যেও একটা ভয় কাজ করছে।

আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) চিকিৎসক আহেদ ইকবাল বলেন, সরকার করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জনসমাগম এড়িয়ে চলতে বলছেন। কিন্তু আমরা যে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী দেখছি, এটাও তো এক প্রকার জনসমাগম। তাই জনসাধারণের পাশাপাশি করোনাভাইরাস আতঙ্কে আছেন হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সরা। চিকিৎসক হিসেবে আমাদের নিজেদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ নেই। তবে হাসপাতালের প্রবেশদ্বারে সেবাপ্রার্থীদের হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, চিকিৎসকদের সুরক্ষা ব্যবস্থায় আমাদের হাতে এখনো সে রকম কিছু আসেনি। তবে আজ-কালের মধ্যে সিভিল সার্জনের কার্যালয় হতে ১০টি মাস্ক, ১০টি ক্যাপ, ১০টি গাউন পাঠাতে পারে, যা পর্যাপ্ত নয়।

জানতে চাইলে সিভিল সার্জন চিকিৎসক আবুল কাশেম আনওয়ারুল রউফ বলেন, জেলায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা সন্দেজনক কোন রোগী পাওয়া যায়নি। তবে চিকিৎসকদের সুরক্ষা ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় উপকরণ পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।