জামালপুরের রানীগঞ্জ যৌনপল্লী এক মাসের জন্য ‘লক ডাউন’

লক ডাউন ও সহায়তার সিদ্ধান্ত জানাতে জামালপুর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষের একটি টিম যায় রানীগঞ্জ যৌনপল্লীতে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জামালপুরের রানীগঞ্জ যৌনপল্লীকে একমাসের জন্য ‘লকডাউন’ করা হয়েছে। ২২ মার্চ দুপুরে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ জেলা কমিটির সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক জানান, যৌনপল্লীগুলো এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ। চলমান করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে নানারকম সচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই যৌনপল্লীতে লোকজনের যাতায়াত সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখাই ভালো। তাই পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আগামী একমাসের জন্য এই যৌনপল্লীকে লক ডাউন ঘোষণা করা হলো। ২২ মার্চ থেকেই এ আদেশ কার্যকর হয়।

তিনি আরো জানান, লকডাউনের কারণে সাময়িক সমস্যা হলেও এই অন্তবর্তীকালীন সময়ে মানবিক কারণে সেখানকার দুই শতাধিক যৌনকর্মীদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে প্রতিজন যৌনকর্মীকে এই একমাসের জন্য ৩০ কেজি করে ত্রাণের চাল দেওয়া হবে। এছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত যৌনকর্মীদের কাছ থেকে ঘরভাড়া, বিদ্যুৎবিল ও ডিশ লাইন বিল না নেয়ার জন্য বাড়ির মালিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত যৌনপল্লীতে জনসাধারণের চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। কেউ এ নির্দেশ অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সভায় উপস্থিত পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে রানীগঞ্জ যৌনপল্লীতে ইতিমধ্যেই পুলিশ পাহারা জোরদার করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের কড়া নজরদারি অব্যাহত থাকবে।

পরে সভা শেষে অতিরিক্ত জেলা হাকিম (এডিএম) তৌহিদ বিন হাসান, জামালপুর পৌরসভার মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম মনি, জামালপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী সাদিক, পৌরসভার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাজিব সিংহ সাহাসহ একটি টিম বেলা ২টার দিকে রানীগঞ্জ যৌনপল্লীতে যান। তারা সেখানকার বাড়ির মালিক ও যৌনকর্মীদের সাথে যৌনপল্লী লক ডাউন নিয়ে আলোচনা করেন এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি বিভিন্ন বিধিনিষেধ মেনে চলার আহ্বান জানান।