সরিষাবাড়ীতে সতীনের লোকদের ছুড়া গরম পানিতে ঝলসে গেল গৃহবধূর শরীর

দুর্বৃত্তদের ঢেলে দেওয়া গরম পানিতে ঝলসে আহত গৃহবধূ সাথী আক্তার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

মমিনুল ইসলাম কিসমত, সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় স্বামীর দ্বিতীয় বিয়েকে কেন্দ্র করে এক গৃহবধূর উপর গরম পানি নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা । আহত গৃহবধূ সাথী আক্তারকে (২৬) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ২৫ আগস্ট রাতে সরিষাবাড়ী পৌরসভার রেলিব্রীজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে সতীনের লোকজন গৃহবধূর উপর পূর্বপরিকল্পিতভাবে এসিড নিক্ষেপ করে বলে আহতের পরিবারের দাবি। তাঁর মুখমন্ডল ও ডান হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে গেছে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে রহমত আলীর সাথে ২০১২ সালে প্রেম করে একই ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে সাথী আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাঁরা রেলিব্রীজ এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তাদের দুইটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। রহমত ইউরিকা কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষকতা ও এলাকায় প্রাইভেট পড়াতেন। এদিকে রহমত আলী তাঁর নিজ গ্রামের আবছার আলীর মেয়েকে প্রাইভেট পড়ানোর সুবাদে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তোলেন। চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল তিনি ওই প্রাইভেট শিক্ষার্থীকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন। পরে সাথী আক্তার তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। ওই মামলায় সম্প্রতি রহমত আলী হাজিরা দিতে গেলে বিজ্ঞ আদালত তাঁকে জামিন না-মঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

আহত সাথী আক্তারের বাবা নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, প্রথম স্ত্রীর মামলায় স্বামী জেল হাজতে যাওয়ায় দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিবারের লোকজন সাথীকে বিভিন্ন সময় নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলো। ২৫ আগস্ট মধ্যরাতে সাথী প্রাকৃতিক কাজে বাইরে গেলে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা লোকজন তার উপর এসিড নিক্ষেপ করে। এতে তার মুখমন্ডল ও ডান হাত ঝলসে যায়। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে সরিষাবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা চিকিৎসক মমতাজ উদ্দিন বলেন, প্রাথমিক পরীক্ষায় গৃহবধুর উপর এসিড নিক্ষেপের লক্ষণ পাওয়া যায়নি। তবে গরম তরল জাতীয় কিছু নিক্ষেপের কারণে সে গুরুতর দগ্ধ হয়েছে।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজেদুর রহমান বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, বিষয়টি শুনে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে ভূক্তভোগীর সাথে কথা বলেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবো।