ইসলামপুরে ভিজিএফ চাল নিয়ে হামলায় ৪ ইউপি সদস্য আহত

কুলকান্দিতে দু:স্থদের মাঝে ভিজিএফ চাল বিতরণ করেন সংসদ সদস্য মো. ফরিদুল হক খান দুলাল। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার কুলকান্দি ইউনিয়নের ভিজিএফ চাল ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে মজুদ করাকে কেন্দ্র করে ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। ১ জুন বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। পরে ইউএনওর হস্তক্ষেপে চালগুলো চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে সরিয়ে নিয়ে সারারাত পাহারা বসিয়ে ২ জুন ভিজিএফ কার্ডধারীদের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কুলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান সনেটের বিরুদ্ধে পরিষদের সকল সদস্যদের অনাস্থার কারণে দীর্ঘ দিন ধরে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। ঈদ উপলক্ষে কুলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চার হাজার ভিজিএফ কার্ডধারীদের জন্য ৬০ মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ হয়েছে। এসব চাল বিতরণের কর্তৃত্ব নিয়ে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে চালগুলো স্থানীয় শামছুন্নাহার উচ্চ বিদ্যালয়ে মজুদ রেখে বিতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু ১ জুন বিকেলে ১৪টি ভটভটি গাড়িভর্তি ৬০ মেট্টিক টন চাল ওই বিদ্যালয়ে না নিয়ে দলবল নিয়ে হানা দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জোরপূর্বক গাড়িগুলো তার বাড়িতে নিয়ে যান। এ সময় ইউপি সদস্যরা বাঁধা দিলে চেয়ারম্যানের লোকজনরা লাঠিসোটা নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে ইউপি সদস্য ওবায়দুল হক বাবু, ফরহাদ হোসেন, লাভলী আক্তার ও জয়নব বেগম গুরুতর আহত হন।

খবর পেয়ে ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ওইসব চাল শামছুন্নাহার উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। কিন্তু চালগুলো শামছুন্নাহার উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানান্তর না করায় ১ জুন রাত ৮টার দিকে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান সনেটের বাড়িতে হানা দেয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে চেয়ারম্যান বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পান। রাতেই চালগুলো ওই বিদ্যালয়ে স্থানান্তর করে সারা রাত পাহারা বসানো হয়।

২ জুন দুপুরে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. ফরিদুল হক খান দুলাল, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আইনজীবী জামাল আবদুন নাছের বাবুল, ইউএনও এবং ইউপি সদস্যদের উপস্থিতিতে সুষ্ঠুভাবে ভিজিএফ কার্ডধারীদের মাঝে চালগুলো বিতরণ শুরু করা হয়। ২ জুন এক হাজার ৮০০ কার্ডধারীর দু:স্থদের মাঝে জনপ্রতি ১৫ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় সংসদ সদস্য মো. ফরিদুল হক খান দুলাল এই ইউনিয়নে ভিজিএফ চাল বিতরণে আর কোনো সমস্যা না হয় সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে সতর্ক করেন।

এ প্রসঙ্গে ইসলামপুরের ইউএনও মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে ইউপি চেয়ারম্যান ভিজিএফ চালগুলো তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ায় বেশ বিশৃংখলার সৃষ্টি হয়েছিল। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে চালগুলো শামছুন্নাহার উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়ে আসি। তাতেও তিনি আমার কথার কোনো গুরুত্ব দেননি। এক পর্যায়ে স্থানীয়দের চাপের মুখে রাতেই চালগুলো ওই বিদ্যালয়ে ফেরত পাঠান। ২ জুন কার্ডধারীদের মাঝে চালগুলো বিতরণ শুরু করা হয়েছে।’