সরিষাবাড়ীতে চাচার ক্ষুরের পোচে শিশু ভাতিজা নিহত, আহত শিশুর ছোট বোন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠি ডটকম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নে চাচার ক্ষুরের পোচে ভাতিজা আট বছরের শিশু সিয়াম নিহত এবং তার সহোদর ছোট বোন মীম (৭) গুরুতর আহত হয়েছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ডোয়াইল ইউনিয়নের চাপারকোনা হাটবাড়ি কামারপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ওই দুই শিশু স্থানীয় মুনসুর আলীর সন্তান।

গ্রামবাসী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ডোয়াইল ইউনিয়নের চাপারকোনা হাটবাড়ি কামারপাড়ার কামার আব্দুস সামাদ দুল্লুর ছেলে সোহেল রানা (২৮) ও তার চাচাতো ভাই মুনসুর আলীর মধ্যে দীর্ঘ দিনের পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। মাঝে মধ্যেই তাদের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। সোহেল রানার বাবা আব্দুস সামাদ দুল্লুও কিছুদিন আগে মুনসুর আলীকে নির্যাতন করেছিল। সোহেল রানা ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মুনসুর আলীর দুই শিশু সন্তানকে ধারালো ক্ষুর দিয়ে পোচ দেয়। এতে তার ছেলে সিয়াম ঘটনাস্থলেই নিহত এবং গুরুতর আহত তার মেয়ে মীম সরিষাবাড়ী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

পুত্রশোকে কাতর মুনসুর আলী বাংলারচিঠি ডটকমকে জানান, ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রতিপক্ষ সোহেল রানার ভাই আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী রূপার কাছে প্রাইভেট পড়তে যায় তার দ্বিতীয় শ্রেণিপড়ুয়া ছেলে সিয়াম ও প্রথম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে মীম। তখন তাদের চাচী গৃহশিক্ষক রূপা ঘরে ছিলেন না। এই সুযোগে সোহেল রানা ওই ঘরে ঢুকেই শিশু সিয়ামের গলায় ধারালো ক্ষুর দিয়ে পোচ দেয়। এতে সিয়াম ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। একইভাবে তিনি মীমের বুকের বাম পাশে ক্ষুরের পোচ দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়। এক পর্যায়ে প্রতিবেশীরা সংঘবব্ধ হয়ে সোহেল রানাকে ধরার চেষ্টা করলে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান।

পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রুবেল মিয়া ও অন্যান্য লোকজন গুরুতর আহত দুই শিশুকে দ্রুত সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. সাইফুর রহমান খান শিশু সিয়ামকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বোন মীমের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। তাকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. সাইফুর রহমান খান রাত ৮টায় বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, ধারালো অস্ত্র দিয়ে সিয়ামের গলা কেটে যাওয়ায় সে হয়তো ঘটনাস্থলেই মারা গেছে। তার বোন মীমের বুকের বাম পাশে রক্তাক্ত গভীর ক্ষত হয়েছে। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নিহত সিয়ামের মরদেহ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজেদুর রহমান বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহত শিশুটির মরদেহ থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি জামালপুর মর্গে পাঠানো হবে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জামালপুরের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল করিম বাংলারচিঠি ডটকমকে জানান, শিশু হত্যাকারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।