সরিষাবাড়ীতে প্রাচীনতম কালীমাতা বাষির্কী পূজা উদযাপিত

কালীমাতা বাষির্কী পূজায় পুণ্যার্থীদের পূজা অর্চণা। ছবি : বাংলারচিঠি ডটকম

মমিনুল ইসলাম কিসমত
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠি ডটকম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার মহাদান ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী খাখুডিয়া কালীমাতা বাষির্কী পূজা উদযাপিত হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ পূজা উদযাপিত হয়। এর উদ্বোধন করেন পৌরহিত্য রতন চন্দ্র কাঞ্জিলাল।

খাখুড়িয়া মন্দির সূত্রে জানা গেছে, বৃটিশ শাসন আমল থেকে এ পূজা প্রতি বছর এই দিনে পালিত হয়ে আসছে। তৎকালীন এলাকার ধনাঢ্য ব্যক্তি যধিষ্ঠির মন্ডল এ মন্দির প্রতিষ্ঠিত করেন। এই অঞ্চলটিতে জেলে সম্প্রদায়ের লোক বেশি বাস করতো। তারা পাশেই বয়ে যাওয়া ঝিনাই নদী থেকে মাছ শিকার করে নিজেদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো। মাছ শিকার করতে গিয়ে জেলেরা দুটি পুরাতন মূর্তি পায়। পরে মূর্তি দুটি নিয়ে খাখুড়িয়ায় একটি পাটের শলা দিয়ে মন্দির নির্মাণ করে সেখানে রেখে তারা পূজা অর্চণা শুরু করে। দীর্ঘ দিন পরে দেশ বিভক্ত হলে পাকিস্তান আমলের প্রথম দিকে চিকিৎসক রামকমল পন্ডিত আবারো মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করেন। তখন থেকে ভারতসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞল থেকে ভক্ত পুণ্যার্থীরা এ পূজায় অংশ নিয়ে আসছে।

মন্দিরের দায়িত্বে থাকা পৌরহিত্য নিরঞ্জন চক্রবর্তী জানান, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভক্তরা কালীমাতা মন্দিরে এসে পূজা করে তাদের মনের বাসনা পূরণ করে যান।

কালীমাতা বাষির্কী পূজা উপলক্ষে মেলা বসে। ছবি : বাংলারচিঠি ডটকম

পুণ্যার্থী ভারতের কলকাতার ৫১ বছর বয়সী ছবি চৌধুরী, স্বপন চৌধুরী, টাঙ্গাইলের মনোরঞ্জন দাস, ময়মনসিংহের রিতা রানী, লক্ষ্মী রানী পালসহ অনেক ভক্তবৃন্দ বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কালীমাতার মন্দিরে মাকে পূজা করতে এসেছি। আমাদের অনেকের মানত থাকে যেমন মেয়ের বিয়ে, চাকরি, রোগমুক্তি, সন্তানদের ভালো করে পড়ালেখার জন্য, ব্যবসায় উন্নতিসহ অনেক ধরনের ইচ্ছা পূরণ হলে কালীমাতাকে পূজা দিয়ে যাই। আর কালীমাতার আশীর্বাদও নিয়ে যাই।

মন্দিরের সভাপতি রমেশ চন্দ্র সূত্রধর বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, প্রতি বছর এই দিনে কালীমাতার বাষির্কী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ বছর প্রায় ৫ হাজারের অধিক ভক্ত পুণ্যার্থী এসেছেন। সব ধরনের সুব্যবস্থা কমিটি থেকে নেয়া হয়। সরকারিভাবে সুযোগ সুবিধী পেলে আরও সুন্দর করে এই পূজা পালন করতে সহজ হবে আমাদের।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজেদুর রহমান এ প্রসঙ্গে বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, কালীমাতা বাষির্কী পূজার নিরাপত্তার জন্য সকাল থেকেই সেখানে পুলিশ নিয়োজিত রাখা হয়। যাতে পুণ্যার্থীদের কোনো প্রকার সমস্যা না হয়।