সরিষাবাড়ীতে রাব্বি হত্যা মামলার চার আসামি গ্রেপ্তার

পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার রাব্বি হত্যা মামলার চার আসামি। ছবি : বাংলার চিঠি ডটকম

মমিনুল ইসলাম কিসমত, সরিষাবাড়ী ॥
জামালপুরের সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ রকিবুল ইসলাম রাব্বি হত্যা মামলার চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা নিহতের স্ত্রীর জবানবন্দী অনুযায়ী ১৮ সেপ্টেম্বর সারাদিন জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন জামালপুর সদর উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩০), মেলান্দহ উপজেলার ব্রাহ্মনপাড়া গ্রামের মৃত খলিল মিয়ার ছেলে খায়রুল ইসলাম প্লাবন (২৫), মাহমুদপুর গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের ছেলে আতিক হাসান (২৪) ও আবুল কালাম আজাদের ছেলে মেহেদি হাসান (৩০)। ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে তাদের জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আরিফুল ইসলাম জানান, তিনদিনের রিমান্ডে নিহতের স্ত্রী মৌটুসি আক্তার তুশি (২৩) পুলিশকে জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার করা ওই চারজনের পাহাড়ায় গত ৮ আগস্ট রাতে মৌটুসি আক্তার তুশি তার পরকিয়া প্রেমিক রিয়াজ উদ্দিনের সাথে অপকর্মে লিপ্ত হন। এ সময় তার স্বামী রকিবুল ইসলাম রাব্বি কর্মস্থল থেকে ফিরে ঘটনাটি দেখে ফেলায় স্ত্রী ও পরকিয়া প্রেমিক মিলে বন্ধুদের সহযোগিতায় তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে নিহতের লাশ সিলিংফ্যানের সাথে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে।

মামলা ও পারিবারিক সূত্র জানায়, সরিষাবাড়ী পৌরসভার সাবেক কমিশনার খলিলুর রহমান তরফদার কালুর ছেলে রকিবুল ইসলাম রাব্বি তিন বছর আগে সদর উপজেলার দিগপাইত এলাকার আবুল কাশেমের মেয়ে মৌটুসি আক্তার তুশিকে প্রেমের সম্পর্কে পালিয়ে বিয়ে করেন। তারা আরামনগর বাজার সংলগ্ন (সাতপোয়া) ফরিদ উদ্দিনের বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। বিয়ের পর থেকেই তাদের পারিবারিক অশান্তি ছিল। ৮ আগস্ট রাত ১০টার দিকে রাব্বির বাবা ছেলের ফাঁসিতে ঝুলার সংবাদ পেয়ে শিমলা বাজার থেকে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করলে রাত ১২টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। ঘটনাটি সন্দেহজনক মনে করে নিহতের বাবা কালু কমিশনার পরদিন ৯ আগস্ট তুশিসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে সরিষাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওইদিনই নিহতের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায়। ১৬ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞ আদালত তাকে তিনদিনের রিমান্ডে পাঠালে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বামীকে হত্যার বর্ণনা দেন।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজেদুর রহমান জানান, ঘাতক স্ত্রীকে তিনদিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১৮ সেপ্টেম্বর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তার জবানবন্দি অনুযায়ী আরো চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।