জামালপুরে বাস ধর্মঘটে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ

ধর্মঘটে স্থবির জামালপুর কেন্দ্রীয় বাস টারমিনাল। ছবি : বাংলার চিঠি ডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর ॥
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারীদের হাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় ৩ আগস্ট সকাল থেকে জামালপুর বাসটারমিনাল থেকে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে মালিক ও শ্রমিকরা। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বাস মালিকরা জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

অঘোষিত এই ধর্মঘটের কারণে ৩ আগস্ট ভোররাত থেকে জামালপুর বাসটারমিনাল থেকে টাঙ্গাইল, বগুড়া, রংপুর, পঞ্চগড়, খুলনা, দেবীগঞ্জ, পাবনা, রাজশাহী, বরিশাল ও ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকাগামী, জামালপুর-শেরপুর-বকশীগঞ্জ-রাজিব সড়কে যাত্রীবাহী কোনো বাস চলাচল করছে না। বাসের টিকিটের সকল কাউন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাস ধর্মঘটের কারণে দূরপাল্লার সাধারণ যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তবে সড়ক পথে জামালপুরের কোথাও কোনো অপ্রতীকর ঘটনা ঘটেনি।

৩ আগস্ট দুপুরে জামালপুর কেন্দ্রীয় বাসটারমিনালে গিয়ে দেখা গেছে, বহু যাত্রী টারমিনাল থেকে ফিরে বিকল্প যানবাহনে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই জানেনই না যে বাস ধর্মঘট চলছে। হাবিবুর রহমান নামের একযাত্রী তার পরিবার পরিজন নিয়ে টাঙ্গাইল যাওয়ার উদ্দেশে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তিনি টারমিনালে এসে জানতে পারেন যে বাস ধর্মঘট চলছে। তিনি বললেন, ‘পারিবারিক জরুরি প্রয়োজনে টাঙ্গাইল যেতে হচ্ছে। এখন কি আর করা। কষ্ট ও টাকা বেশি লাগলেও লেগুনা গাড়ি দিয়েই যেতে হবে।’

জামালপুর জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জারনিজ ধর্মঘট প্রসঙ্গে বাংলার চিঠি ডটকমকে বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা রাস্তায় বাস পেলেই ভাংচুর করে। চালক ও শ্রমিকদের মারধর করে। মধুপুরে আমাদের জামালপুরের একটি বাসের চালককে মারধর করা হয়েছে। সেখান থেকে বাস ফিরে এসেছে। সারা দেশে বাস মালিকরা ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকার বাস মালিকদের শাস্তির বিধান করবে কেন। মালিকরা তো আর বাস চালায় না। ফেডারেশন থেকে পরবর্তী কোনো নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত জামালপুর থেকে সকল প্রকার বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।’

বাস চলাচল বন্ধ থাকায় জামালপুরের পরিবহন চালক ও শ্রমিকরাও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধ করে সড়কপথে নিরাপদে বাস চলাচলের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। জামালপুরের বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বাবু বাংলার চিঠি ডটকমকে বলেন, ‘পরিবহন শ্রমিকরা কোনো ধর্মঘট ডাকেনি। মালিকরা বাস চলাচল বন্ধ রাখতে বলেছে। তাই ৩ আগস্ট সকাল থেকে চালকরাও মালিকদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বাস চালানো বন্ধ রেখেছে। আন্দোলনকারীদের দাবি সরকার মেনে নিয়েছে। তারপরও কেন আমাদের ওপর হামলা হচ্ছে, গাড়ি ভাংচুর করা হচ্ছে।’