কালের বিবর্তনে দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলায় খাল-বিল, ডোবা-নালা শুকিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য। হেমন্তের রোদেলা দুপুরে খাল-বিলের পানি কমে গেলে হাঁটুকাদা পানিতে মাছ ধরা গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য।
বহু বছর ধরে সারাদেশের ন্যায় জামালপুরের উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এই ধারা চলে আসলেও চিরায়ত সেই দৃশ্য এখন অনেকটাই কমে গেছে।
সেই সময়ের মাছ ধরার দৃশ্য এখন আর সচরাচর চোখে পড়ে না। খাল-বিলের পানি সেচে মাছ ধরার এই চিত্র আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। রোদের তেজে নদ-নদীর পানি কমে শুকিয়ে যেতে থাকে বর্ষায় ডুবে যাওয়া খাল-বিল ডোবা-নালা। পানি শুকিয়ে গেলেও এসব স্থানে আটকা পড়ে নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ। আর সেই সময় কাদা পানিতে নেমে মাছ শিকার করেন গ্রামের মানুষ। রোদে হাঁটুকাদা পানিতে মাছ ধরাটা খুব আনন্দের। বহুবছর ধরে এ ধারা চলে আসছে।
২৯ অক্টোবর, বুধবার উপজেলার সদর ইউনিয়নের পচাবহলা গ্রামের কৃষি জমিতে দেখা পাওয়া যায় এমনি আয়োজনের। দেখা যায় বেশকিছু মানুষ মাছ ধরতে ব্যস্ত। কাদার মধ্যে মাছ খুঁজছেন তারা। যমুনার শাখা নদীবেষ্টিত এই আলাই নদী বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে যৌবন ফিরে পায়। শুধু নদী নয়, পানি বৃদ্ধি পায় পুকুর-ডোবা আর খাল-বিলের। ডুবে যায় ধানখেত আর নিচু জমি। পানির সাথে সেই জমিতে দেশি জাতের নানা মাছের আগমন ঘটে। এক সময় বর্ষার পানি শুকিয়ে গেলে পানি সেচে শুরু হয় মাছ ধরা। পাওয়া যায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
৭০ বছর বয়সী আহেদ আলী বলেন, আগের মত স্বাদের মাছ আর চোহে (চোখে) পড়ে না। আমরা মাছ মারি খাইছি শুকাইয়েও আকছি (রাখছি)। স্থানীয়রা জানান, বর্ষার পরে আমদের এদিকে মাছ ধরার উৎসব চলত। এখন আর এসব চোখে পড়ে না।
ইসলামপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, কারেন্ট জাল রোধ ও জমিতে কীটনাশক মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কমাতে পারলে বর্ষা মৌসুমে দেশি মাছগুলো বংশ বিস্তার করতে পারবে।
লিয়াকত হোসাইন লায়ন : নিজস্ব প্রতিবেদক, ইসলামপুর, বাংলারচিঠিডটকম 

















