সামান্য পুঁজি আর অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে লাউ চাষ করে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার গুনারীতলা ইউনিয়নের বালাভরট এলাকার কৃষক মো. এমদাদ হোসেন।
এবার লাউয়ের ভাল ফলন হওয়ায় ভীষণ খুশি তিনি। মাত্র ২১ শতাংশ জমিতে লাউয়ের চারা রোপণ করে ইতিমধ্যে তিনি ২০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। মৌসুম শেষে প্রায় এক লাখ টাকার লাউ বিক্রির আশা করছেন তিনি। আগে ওই জমিতে বোরো ধান চাষ করতেন কৃষক এমদাদ। তবে ধানে লাভ কম হওয়ায় কয়েক বছর ধরে তিনি মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ করেন।
জানা গেছে, লাউ মূলত শীতকালীন সবজি হলেও এখন সারাবছরই চাষ হচ্ছে। তুলনামূলকভাবে শ্রম ও ব্যয় কম হওয়ায় মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় কীটনাশকও কম লাগে। লাউসহ অন্যান্য সবজি চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে কৃষি বিভাগ দিচ্ছে পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা।
লাউ চাষি এমদাদ হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ১২ কাঠা (২১ শতাংশ) জমিতে মাচা তৈরি করে লাউ চাষ করেছেন। বীজ, সার ও মাচা তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। এখন প্রতিটি লাউ বিক্রি করছেন ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। উপজেলার বালিজুড়ী, কালুর মোড় ও জোনাইল বাজারে এসব লাউ বিক্রি করেন তিনি। গত ছয় দিনে ২০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন এমদাদ।

সরেজমিনে দেখা যায়, এমদাদের লাউ খেতে সারি সারি মাচার নিচে ঝুলছে শতাধিক সবুজ লাউ। রোদ উপেক্ষা করে এমদাদ তার কলেজপড়ুয়া ছেলে এমিয়ন ইসলাম সোহাগকে নিয়ে খেতে লাউ গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। পরিশ্রম ও সঠিক পরিচর্যার ফলে ফলনও হয়েছে বেশ ভাল। কীটনাশক ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ না করে শুধু জৈব সার দিয়ে উৎপাদিত লাউয়ের চাহিদাও আছে স্থানীয়দের কাছে।
স্থানীয় কৃষক মো. নুর ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, কৃষক এমদাদের লাউ দেখে আমরাও উৎসাহিত হয়েছি। আগামী মৌসুমে আমিও মাচায় লাউ চাষের পরিকল্পনা করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হাবিবুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, এখন কৃষকদের মধ্যে মাচায় লাউ চাষের প্রবণতা বেড়েছে। এটি স্বল্প খরচে অধিক লাভজনক ফসল। সঠিক পরিচর্যা ও কীটনাশক ব্যবস্থাপনা জানা থাকলে সহজেই ভাল ফলন পাওয়া যায়। আমরা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি যেন তারা আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব উপায়ে সবজি উৎপাদন করেন।
তিনি আরও বলেন, কৃশক এমদাদ হোসেন একজন আদর্শ কৃষক। তিনি অত্যন্ত পরিশ্রমী মানুষ। তার সফলতা অন্য কৃষকদেরও অনুপ্রেরণা দেবে।