জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার নব্যচর হাই স্কুল ও কলেজ থেকে চারজন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাস করেছে মাত্র একজন। ওই চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন ছাত্র ও একজন ছাত্রী ছিলেন।
শিক্ষকদের দাবি, শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত না হওয়ায় বাকি তিনজন ছাত্র পাস করতে পারেনি। তবে একমাত্র ছাত্রী পরীক্ষায় ২.৬৭ পেয়ে কলেজকে শতভাগ ফেলের হাত থেকে রক্ষা করেছে। কলেজের এমন পরিস্থিতিতে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, চলতি বছরে ওই কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় চারজন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় ১২ জন শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও অবহেলায় থমকে গেছে পড়ালেখার মান। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত উপস্থিত না হওয়া এবং শিক্ষকদের অনিয়মিত আগমন ও প্রস্থানে মুখ থুবড়ে পড়ে লেখাপড়া। তবে হাই স্কুল শাখায় প্রায় ১২০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ওই বিদ্যালয় থেকে ২০২৫ সালে এসএসসি পরিক্ষায় ১৬০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। পাস করে ৭৯ জন। এর মধ্যে ১৬জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায়।
নব্যচর হাই স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফরিদুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, কলেজটি প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত। এলাকার বেশির ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। অধিকাংশ শিক্ষার্থী পারিবারিক কাজে যুক্ত থাকায় নিয়মিত ক্লাসে আসতে পারছে না। প্রতিষ্ঠানটির হাই স্কুল শাখা এমপিওভুক্ত হলেও কলেজ শাখা এখনও এমপিওভুক্ত হয়নি। এ কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ঠিকমত কলেজে আসে না। আমরা আশা করছি, ভবিষ্যতে শিক্ষার মান উন্নয়ন ও কলেজের গৌরব ফিরে আসবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মাদারগঞ্জ উপজেলায় দেখা দিয়েছে চরম ফল বিপর্যয়। ১৬ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফলাফলে উপজেলায় পাশের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হার দুই-ই আশানুরূপ হয়নি।
নব্যচর হাই স্কুল ও কলেজ ছাড়াও উপজেলার বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফলাফল অত্যন্ত হতাশাজনক। নিশ্চিন্তপুর আলিম মাদরাসা থেকে দুইজন শিক্ষার্থী আলিম পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে মাত্র একজন। আলহাজ আব্দুল ওয়াজেদ বিএম কলেজ থেকে অংশ নেয় ১৯ জন শিক্ষার্থী; পাস করেছে মাত্র দু’জন।
সবচেয়ে হতাশাজনক ফলাফল দেখা গেছে মির্জা আজম ডিগ্রি কলেজে। প্রতিষ্ঠানটি থেকে ১২৫ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও উত্তীর্ণ হয়েছে মাত্র ১৯ জন। এছাড়া মিলন বাজার ভাংবাড়ী আলিম মাদরাসা থেকে ২০ জনের মধ্যে পাস করেছে পাঁচজন, আর মোসলেমাবাদ আলিম মাদরাসা থেকে ১৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে চারজন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে এ উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ৪৫.৮০ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে সাতজন শিক্ষার্থী। অন্যদিকে, আলিম পরীক্ষায় পাশের হার ৫৩.৩৭ শতাংশ, তবে কোন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায়নি। এইচএসসি (বিএম) শাখায় পাশের হার কিছুটা বেশি, ৭৮.০৬ শতাংশ, যেখানে ৩৪ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।