জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী-ভাটারা সড়কের বেশিরভাগ অংশে কার্পেটিং, ইটের খোয়া ও পাথর উঠে অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সেই খানাখন্দ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কে বাস, ট্রাকসহ গণপরিবহনগুলোকে চলতে হচ্ছে এঁকেবেঁকে হেলেদুলে। এতে প্রায়ই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা।
প্রায় চার বছর ধরে এ অবস্থার সৃষ্টি হলেও কোনো দৃশ্যমান সংস্কার কাজ শুরু হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন দুর্ভোগের শিকার পথচারী, যাত্রী, বিভিন্ন যানবাহনের চালকসহ ভুক্তভোগি স্থানীয় বাসিন্দারা।
৩ অক্টোবর, শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বালিজুড়ী বাজার থেকে সরিষাবাড়ী উপজেলার ভাটারা সড়কজুড়ে পিচঢালাই উঠে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ইটের খোয়া ও পাথর। সড়কের এসব খানাখন্দ বৃষ্টির পানি জমে ছোটখাটো ডোবা-নালায় পরিণত হয়েছে। কাদাপানি মাড়িয়ে প্রতিনিয়তই যাতায়াত করতে হচ্ছে শিক্ষার্থী, যাত্রী, রোগী, পথচারীসহ লক্ষাধিক মানুষকে।

আরও দেখা যায়, উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের সাতটি এলাকায় বাজার গড়ে উঠেছে। এসব বাজার মূল সড়কের চেয়ে এক দেড় ফুটউঁচু। ওইসব এলাকায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই পানি জমে সড়কের উপর। এ ছাড়াও সড়কের দুই পাশে গড়ে উঠেছে হাজারও ঘড়বাড়ি। এসব বাড়ি থেকে পানি এসেও জমছে মূল সড়কে। এতে সড়কের কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
ট্রাকচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, খানাখন্দের কারণে প্রায়শ গাড়ির যন্ত্রাংশ ভেঙ্গে যাচ্ছে। এছাড়া ধীর গতিতে ট্রাক চালাতে হচ্ছে। ফলে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যাচ্ছে না।
মোসলেমাবাদ এলাকার বাসিন্দা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, সড়কটি একদিকে উপজেলা থেকে ঢাকায় যাওয়ার অন্যতম সড়ক। অপরদিকে উপজেলা শহরের সঙ্গে আদারভিটা ও সিধুলী ইউনিয়নের যোগাযোগেরও প্রধান সড়ক। দীর্ঘদিন সড়কটি বেহাল অবস্থায় থাকায় সাধারণ মানুষ, পথচারী, যাত্রী, রোগী ও যানবাহন চালকেরা ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
অটোচালক জিয়াউল হক বলেন, সড়কের দুরবস্থার কারণে বড় বড় যানবাহন কোনভাবে চলাচল করতে পারলেও সিএনজি ও অটোরিকশা চালানো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অধিকাংশ সময় অটোরিকশা হেলে যায়। এতে অনেক যাত্রী পড়ে আহত হচ্ছেন। যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
মাদারগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. জাহিদুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, বালিজুড়ী-ভাটারা সড়কটি উপজেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সড়কটির বিভিন্ন স্থানে যেসব খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলোর সমীক্ষা ও প্রয়োজনীয় এস্টিমেট প্রস্তুত করে এলজিইডির সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে সেটি অনুমোদিত হয়েছে। বর্তমানে এই সড়কের কাজের ঠিকাদার নিয়োগের দরপত্র আহবানের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। দরপত্র আহবান কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।
খাদেমুল ইসলাম : নিজস্ব প্রতিবেদক, মাদারগঞ্জ, বাংলারচিঠিডটকম 



















