জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম বলেছেন, এ দেশের মানুষ সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচন চায়, সংস্কার ও নির্বাচন দুটোই একসাথে এগিয়ে নিতে হবে। আর সংস্কারের মধ্যদিয়েই একটি ঐক্যের বাংলাদেশ গড়তে হবে।
২০ জুলাই, রবিবার বিকালে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ঢাকায় শহীদ হওয়া কামরুল ইসলাম রাব্বীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পঞ্চাশী গ্রামে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম।
তিনি আরও বলেন, আজকে অনেকেই মনে করেন শেখ হাসিনার পতন কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা নির্দিষ্ট কোন দলের মাধ্যমে হয়েছে। এ দেশের সর্বস্তরের মানুষ শেখ হাসিনার ধ্বংস চেয়েছে। এক সাথে আন্দোলন করে ফ্যাসিস শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছে। আপনারা নেতৃত্ব দিয়েছেন আপনাদের নেতৃত্বের সাথে এ দেশের জনগণ একাত্মতা ঘোষণা করেছে। তাই বলে দেশটি কোন ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি অত্যাচারী সরকারের পতন ঘটানোর জন্য। আর একটি অত্যাচারিত কেউ মানুষের উপর জেঁকে বসবে সেটা কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ চায় না। এ কাজ যে দল করতে চাইবে সেই দল জনগণের আস্থা থেকে বিচ্যূত হবেন। এর পরেও যারা ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছেন তারা সংশোধন হয়ে যান। বাংলাদেশ একটি দল আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া মেতে উঠেছে। দল ভারি করতে আওয়ামী লীগকে তাদের দলে ভিড়াতে শুরু করছে। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দলের উপর ভর করে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায়। তাদের এই নীল নকশা বাংলাদেশের মানুষ মেনে নিবেন না।
শামীম তালুকদার বলেন, রাব্বির কবরের দিকে তাকিয়ে দেখুন, ঐ শহীদদের রক্তের বিনিময়েই কিন্তু সুন্দর বাংলাদেশ পেয়েছি। সুন্দর বাংলাদেশ পেয়ে অসুন্দরের পরিবেশ যারাই করবে, সে যে দলেরই হোক বা যেকোনো গোষ্ঠীর রই হোক তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, এর কোন বিকল্প নেই। বিএনপি একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই। সেই পথের সারথি হয়ে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে বলে জানান তিনি।
স্মরণ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলার আওনা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সুরুজ্জামান, শহীদ রাব্বীর বন্ধু ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার আহত ছাত্র সংগঠনের আহবায়ক একরামুল হাসান, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্মআহবায়ক নুরুল ইসলাম, আওনা ইউনিয়ন ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্মসম্পাদক মনিরুজ্জামান মানিক ও শহীদ কামরুল ইসলাম রাব্বীর বড় ভাই অন্তর মিয়া প্রমুখ।
স্মরণ সভা শেষে শহীদ কামরুল ইসলাম রাব্বীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। পরে গরিব ও অসহায়দের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়।
প্রসঙ্গত, জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার আওনা ইউনিয়নের পঞ্চাশী নয়াপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে শহীদ রাব্বী মিয়া রাজধানীর তেজগাঁও অবস্থিত সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ইইই বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি ওয়াল্টন কোম্পানিতে চাকরিও করতেন। জুলাই -আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে শুরু থেকেই অংশ নেয় রাব্বী। ওই সময় ২০ জুলাই, শনিবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ভাড়া বাসা থেকে বের হয়ে আন্দোলনে যাবার সময় হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন তিনি। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তার মরদেহ উদ্ধার করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করেন।
 
																			 
																		 
										 মমিনুল ইসলাম কিসমত : নিজস্ব প্রতিবেদক, সরিষাবাড়ী, বাংলারচিঠিডটকম
																মমিনুল ইসলাম কিসমত : নিজস্ব প্রতিবেদক, সরিষাবাড়ী, বাংলারচিঠিডটকম								 


















