ঢাকা ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

উদয়ন একটি সাফল্যের গল্পগাঁথা : এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা

গ্রাহকদের মাঝে ড্রেসিং টেবিল ও ওয়ার্ডড্রপ বিতরণ। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

এলাকা থেকে বেকারত্ব নির্মূল এবং শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা একঝাঁক তরুণদের নিয়ে ২০২১ সাল থেকে ক্রীড়া, সংস্কৃতির পাশাপাশি উৎপাদন কাজে মনোনিবেশ করি। ২০২৩ সালে সরকারি বিধি মেনে চলার অঙ্গীকার নিয়ে গড়ে তুলি উদয়ন উৎপাদনমুখী সমবায় সমিতি লি.। নিবন্ধন গ্রহণ করি জামালপুর জেলা সমবায় অধিদপ্তর থেকে। মাত্র ৬৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে আমরা যাত্রা শুরু করি। সুদের ব্যবসা বিপরীতে আমরা এলাকার নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে তাদের চাহিদমাফিক পণ্য সরবরাহের উদ্যোগ নেই।

এছাড়া এলাকার বিশ্বস্ত যে কোন ব্যক্তি আসবাবপত্র, মোবাইল ফোন, এসিসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী মাত্র ছয় মাসের মেয়াদে কিস্তিতে পরিশোধ করে থাকেন। সমবায়ের নীতিমালা অনুসরণ করে আমরা সদস্যদের মাঝে মালামাল বিতরণ করছি। এক বছরের ব্যবধানে আশাব্যঞ্জক লাভ এসেছে। সদস্যদের শেয়ার এবং সদস্য সঞ্চয়ই আমাদের মূল পুঁজি। আমাদের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতায় সদস্যদের পাশাপাশি সমবায় বিভাগ ভীষণ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এলাকাবাসী ছেলেদের উদ্যম এবং পরিশ্রম দেখে দারুণভাবে প্রেরণা দিয়ে আসছে।

আমরা ব্যবসায়ী উদ্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক কাজের সাথে শুরু থেকেই সম্পৃক্ত হয়েছি। এলাকায় মাদক, জুয়া, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন রচনা করেছি। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে পুলিশিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমে আমরা অনন্য সাধারণ অবদান রেখে চলেছি। শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিং সদস্য হিসেবে আমি ব্যক্তিগতভাবে আইজিপি পুরস্কার পেয়েছি। এ প্রাপ্তি আমার একার নয় উদয়ন ক্লাবের সকল সদস্য এবং এলাকাবাসী করতলে আমার সম্মাননা অর্পণ করেছি।

দরিদ্রদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

আমরা বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় প্রতিবছর বৃক্ষরোপণ, দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন, কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, শীতবস্ত্র বিতরণ, যে কোন দুর্যোগে সাধ্যমত সহায়তা নিয়ে বিপদাপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াই। এক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন সংঘ, রোটারি ক্লাব এবং জেলা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা শহরের জলবদ্ধতা নিরসনে গবাখাল পরিষ্কার এবং পূর্ব বামুনপাড়ায় কয়েক’শ একর পানিতে ডুবে থাকা আবাদী জমি থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেছি। এতে কৃষকরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হয়েছে। উদয়নের প্রতিটি সদস্য কমিটেড। সমাজ ও মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে সবাই ঐকবদ্ধভাবে সুন্দর আগামী রচনার জন্য কাজ করছে।

আমাদের এলাকায় গত তিন বছরে দুই একটি বড় ঘটনা ব্যতিত থানায় বা আদালতে কাউকে মামলায় জড়াতে দেই নাই। আমাদের উদয়ন কার্যালয়ে মানুষ সমস্যা নিয়ে আসে শান্তি নিয়ে বেরিয়ে যায়। গত চার বছরে আমরা দুই শতাধিক ঘটনার নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হয়েছি। জামালপুর পৌরসভার সবচেয়ে পশ্চাৎপদ এলাকা ১২ নং ওয়ার্ডে বামুনপাড়া গ্রামে উদয়ন প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও সংগঠনটির ইতিবাচক কার্যক্রমের ছড়িয়ে পড়ছে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে। বিশেষ করে প্রতি বছর মাসব্যাপী ক্রিকেট টুর্নামেন্টের মাধ্যমে উদয়ন নাম ছড়িয়ে পড়েছে। ৩০ জন সদস্যবিশিষ্ট উদয়ন এখন স্বপ্ন দেখছে অনেক বড়। পুরোদমে স্বপ্নের চাষ করছে ছেলেরা। সবার সহযোগিতায় স্বপ্নের ফসল একদিন ঘরে তুলবোই আমরা।

আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এ এলাকায় বেকারত্বের হার আশানুরূপ পর্যায়ে নামিয়ে আনার লক্ষ্য স্থির করেছি।

আমাদের অনেক শুভানুধ্যায়ী আছে যাদের পরামর্শ আমাদেরকে উজ্জীবিত করে থাকে। ইচ্ছে করলে মহৎপ্রাণের বন্ধুরা আমাদের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারেন।

আপনাদের চাহিদা মোতাবেক উদয়নের শর্তপূরণ করে পণ্যের চাহিদা পত্র জমা দিতে পারেন। আমাদের সাধ্যের মধ্যে মধ্যে যাছাই-বাছাই করে পণ্য সরবরাহ করবো।

আমরা আদর্শ একটা প্রতিষ্ঠান স্থায়িত্বশীল পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। যে প্রতিষ্ঠানের ছায়াতলে দাঁড়িয়ে প্রশান্তির নিঃশ্বাস নিতে পারবেন আপামর মানুষ।

আমরা গত এক বছরে ব্যবসা থেকে লাভের অংশ সমহারে সদস্যদের মাঝে বন্টন করেছি। যে সকল সদস্য এ ব্যবসায় অধিক শ্রম ও মেধা খাটিয়েছে বছর শেষে আমরা তাদের পুরস্কৃত করেছি। এধারা অব্যাহত থাকবে ইন-শা-আল্লাহ।

লেখক: জাহাঙ্গীর সেলিম
প্রধান উপদেষ্টা, উদয়ন ক্লাব।

জনপ্রিয় সংবাদ

তবুও বহাল তবিয়তে চরপাকেরদহ ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান নিজাম

উদয়ন একটি সাফল্যের গল্পগাঁথা : এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা

আপডেট সময় ০৯:৩৩:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

এলাকা থেকে বেকারত্ব নির্মূল এবং শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা একঝাঁক তরুণদের নিয়ে ২০২১ সাল থেকে ক্রীড়া, সংস্কৃতির পাশাপাশি উৎপাদন কাজে মনোনিবেশ করি। ২০২৩ সালে সরকারি বিধি মেনে চলার অঙ্গীকার নিয়ে গড়ে তুলি উদয়ন উৎপাদনমুখী সমবায় সমিতি লি.। নিবন্ধন গ্রহণ করি জামালপুর জেলা সমবায় অধিদপ্তর থেকে। মাত্র ৬৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে আমরা যাত্রা শুরু করি। সুদের ব্যবসা বিপরীতে আমরা এলাকার নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে তাদের চাহিদমাফিক পণ্য সরবরাহের উদ্যোগ নেই।

এছাড়া এলাকার বিশ্বস্ত যে কোন ব্যক্তি আসবাবপত্র, মোবাইল ফোন, এসিসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী মাত্র ছয় মাসের মেয়াদে কিস্তিতে পরিশোধ করে থাকেন। সমবায়ের নীতিমালা অনুসরণ করে আমরা সদস্যদের মাঝে মালামাল বিতরণ করছি। এক বছরের ব্যবধানে আশাব্যঞ্জক লাভ এসেছে। সদস্যদের শেয়ার এবং সদস্য সঞ্চয়ই আমাদের মূল পুঁজি। আমাদের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতায় সদস্যদের পাশাপাশি সমবায় বিভাগ ভীষণ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এলাকাবাসী ছেলেদের উদ্যম এবং পরিশ্রম দেখে দারুণভাবে প্রেরণা দিয়ে আসছে।

আমরা ব্যবসায়ী উদ্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক কাজের সাথে শুরু থেকেই সম্পৃক্ত হয়েছি। এলাকায় মাদক, জুয়া, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন রচনা করেছি। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে পুলিশিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমে আমরা অনন্য সাধারণ অবদান রেখে চলেছি। শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিং সদস্য হিসেবে আমি ব্যক্তিগতভাবে আইজিপি পুরস্কার পেয়েছি। এ প্রাপ্তি আমার একার নয় উদয়ন ক্লাবের সকল সদস্য এবং এলাকাবাসী করতলে আমার সম্মাননা অর্পণ করেছি।

দরিদ্রদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

আমরা বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় প্রতিবছর বৃক্ষরোপণ, দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন, কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, শীতবস্ত্র বিতরণ, যে কোন দুর্যোগে সাধ্যমত সহায়তা নিয়ে বিপদাপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াই। এক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন সংঘ, রোটারি ক্লাব এবং জেলা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা শহরের জলবদ্ধতা নিরসনে গবাখাল পরিষ্কার এবং পূর্ব বামুনপাড়ায় কয়েক’শ একর পানিতে ডুবে থাকা আবাদী জমি থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেছি। এতে কৃষকরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হয়েছে। উদয়নের প্রতিটি সদস্য কমিটেড। সমাজ ও মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে সবাই ঐকবদ্ধভাবে সুন্দর আগামী রচনার জন্য কাজ করছে।

আমাদের এলাকায় গত তিন বছরে দুই একটি বড় ঘটনা ব্যতিত থানায় বা আদালতে কাউকে মামলায় জড়াতে দেই নাই। আমাদের উদয়ন কার্যালয়ে মানুষ সমস্যা নিয়ে আসে শান্তি নিয়ে বেরিয়ে যায়। গত চার বছরে আমরা দুই শতাধিক ঘটনার নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হয়েছি। জামালপুর পৌরসভার সবচেয়ে পশ্চাৎপদ এলাকা ১২ নং ওয়ার্ডে বামুনপাড়া গ্রামে উদয়ন প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও সংগঠনটির ইতিবাচক কার্যক্রমের ছড়িয়ে পড়ছে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে। বিশেষ করে প্রতি বছর মাসব্যাপী ক্রিকেট টুর্নামেন্টের মাধ্যমে উদয়ন নাম ছড়িয়ে পড়েছে। ৩০ জন সদস্যবিশিষ্ট উদয়ন এখন স্বপ্ন দেখছে অনেক বড়। পুরোদমে স্বপ্নের চাষ করছে ছেলেরা। সবার সহযোগিতায় স্বপ্নের ফসল একদিন ঘরে তুলবোই আমরা।

আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এ এলাকায় বেকারত্বের হার আশানুরূপ পর্যায়ে নামিয়ে আনার লক্ষ্য স্থির করেছি।

আমাদের অনেক শুভানুধ্যায়ী আছে যাদের পরামর্শ আমাদেরকে উজ্জীবিত করে থাকে। ইচ্ছে করলে মহৎপ্রাণের বন্ধুরা আমাদের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারেন।

আপনাদের চাহিদা মোতাবেক উদয়নের শর্তপূরণ করে পণ্যের চাহিদা পত্র জমা দিতে পারেন। আমাদের সাধ্যের মধ্যে মধ্যে যাছাই-বাছাই করে পণ্য সরবরাহ করবো।

আমরা আদর্শ একটা প্রতিষ্ঠান স্থায়িত্বশীল পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। যে প্রতিষ্ঠানের ছায়াতলে দাঁড়িয়ে প্রশান্তির নিঃশ্বাস নিতে পারবেন আপামর মানুষ।

আমরা গত এক বছরে ব্যবসা থেকে লাভের অংশ সমহারে সদস্যদের মাঝে বন্টন করেছি। যে সকল সদস্য এ ব্যবসায় অধিক শ্রম ও মেধা খাটিয়েছে বছর শেষে আমরা তাদের পুরস্কৃত করেছি। এধারা অব্যাহত থাকবে ইন-শা-আল্লাহ।

লেখক: জাহাঙ্গীর সেলিম
প্রধান উপদেষ্টা, উদয়ন ক্লাব।