ঢাকা ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জামালপুর আইডিয়াল স্কুল ও কলেজে নবীনবরণ, কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা শেরপুর সরকারি কলেজে বৃক্ষরোপণ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ইসলামপুরে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থীর উঠান বৈঠক ঝাউগড়ায় বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করেছে রক্তের বন্ধন টিকিট কালোবাজারি জামাল গ্রেপ্তার, ৮টি টিকিট জব্দ শেরপুর দোকান মালিক ঐক্য পরিষদের কমিটি গঠিত মাদারগঞ্জে সেচ্ছাসেবকদল নেতার গোয়ালঘরের তালা ভেঙে আটটি গরু চুরি নিরাপদ সড়ক দিবস : জামালপুরে শোভাযাত্রা, পথসভা ও হেলমেট বিতরণ দেওয়ানগঞ্জে মাদরাসাছাত্র হত্যা : দুই আসামিকে আটকাদেশ ইসলামপুরে কাবিখা-কাবিটা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ, কাগজে কলমেই প্রকল্প সীমাবদ্ধ

উত্তর ভাতখাওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

উত্তর ভাতখাওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছাদের পলেস্তারা ও ক্লাসের ফ্যান। ঝুঁকির মধ্যেই চলছে পাঠদান। ছবি : বিল্লাল হোসেন মন্ডল

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার পাররামরামপুর ইউনিয়নের উত্তর ভাতখাওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। ছাদের জং ধরা রডগুলো বের হয়ে আছে। অনেক স্থানে দেয়ালে ফাটল ধরেছে। এই জরাজীর্ণ ভবনেই ঝুঁকির মধ্যে চলছে পাঠদান।

১ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়ে। বিদ্যালয়ে ছয়জন শিক্ষক ও ১৩৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিবছর শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফলও করে আসছে। ২০২৩ সালে ২৩ জন শিক্ষার্থী ভালো ফলাফল অর্জন করে পঞ্চম শ্রেণি থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। পড়াশোনার মান উন্নয়ন হলেও পরিবর্তন হয়নি বিদ্যালয়ের নানান সমস্যা।

ভবনের ছাদে দেখা দিয়েছে ফাটল। কোথাও কোথাও পলেস্তারা খসে পড়ে বেরিয়ে পড়েছে রড। এমন অবস্থায় অনেকটা ঝুঁকির মধ্যেই পাঠদান চলছে। জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি এখন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০০০ সালে তিন কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করা হয়। তিন কক্ষে সকালে প্রথম পালায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাশ নেয়ার পর দ্বিতীয় পালায় তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান করা হয়। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে পিইডিপি-৩ অর্থায়নে দুই কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করা হয়। এ ভবনে এক কক্ষ কার্যালয় কক্ষ। অপর কক্ষে চলে প্রাক প্রাথমিকের শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

বিদ্যালয়ে যাতায়াতের পাকা রাস্তাও নেই। বর্ষা মৌসুমে কাদা মাটি পেরিয়ে যেতে হয় বিদ্যালয়ে। জিঞ্জিরাম নদীর উপর সেতু না থাকায় নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয়।

চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শাকিব ইসলাম বলে, আমরা অনেক সমস্যায় ক্লাস করছি। আমাদের যাতায়াতের রাস্তা পাকা না থাকায় কাদা মাটি দিয়ে আসতে হয়। আগে সরকারিভাবে বিস্কুট পেতাম এখন টিফিনে না খেয়ে ক্লাস করতে হয়ে।

পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী লিপা মনি বলে, ক্লাসের অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। একটি ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. আবুল হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, অজপাড়া গ্রামে আমাদের এই বিদ্যালয়টিতে নানা সমস্যা রয়েছে। ভবন জরাজীর্ণ হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। ক্লাসে ফ্যান ভেঙে পড়ে যেকোনো সময় বড়ো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্কুলে আসার জন্য পাকা রাস্তা ও জিঞ্জিরাম নদীতে সেতু না থাকায় শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হতে হয়। এছাড়া বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর না থাকায় বিদ্যালয় নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা সুলতানা এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা এই উপজেলার কিছু ঝুঁকিপূর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ ও সংস্কার কাজের তালিকা করেছেন। তালিকায় উত্তর ভাতখাওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম আছে কিনা তা দেখতে হবে। যদি না থাকে তাহলে সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির ভবন নির্মাণ বা সংস্কারের জন্য প্রধান শিক্ষক একটা আবেদন করলে সেটিও আমলে নেয়া হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

জামালপুর আইডিয়াল স্কুল ও কলেজে নবীনবরণ, কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা

উত্তর ভাতখাওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

আপডেট সময় ০৬:১০:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার পাররামরামপুর ইউনিয়নের উত্তর ভাতখাওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। ছাদের জং ধরা রডগুলো বের হয়ে আছে। অনেক স্থানে দেয়ালে ফাটল ধরেছে। এই জরাজীর্ণ ভবনেই ঝুঁকির মধ্যে চলছে পাঠদান।

১ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়ে। বিদ্যালয়ে ছয়জন শিক্ষক ও ১৩৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিবছর শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফলও করে আসছে। ২০২৩ সালে ২৩ জন শিক্ষার্থী ভালো ফলাফল অর্জন করে পঞ্চম শ্রেণি থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। পড়াশোনার মান উন্নয়ন হলেও পরিবর্তন হয়নি বিদ্যালয়ের নানান সমস্যা।

ভবনের ছাদে দেখা দিয়েছে ফাটল। কোথাও কোথাও পলেস্তারা খসে পড়ে বেরিয়ে পড়েছে রড। এমন অবস্থায় অনেকটা ঝুঁকির মধ্যেই পাঠদান চলছে। জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি এখন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০০০ সালে তিন কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করা হয়। তিন কক্ষে সকালে প্রথম পালায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাশ নেয়ার পর দ্বিতীয় পালায় তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান করা হয়। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে পিইডিপি-৩ অর্থায়নে দুই কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করা হয়। এ ভবনে এক কক্ষ কার্যালয় কক্ষ। অপর কক্ষে চলে প্রাক প্রাথমিকের শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

বিদ্যালয়ে যাতায়াতের পাকা রাস্তাও নেই। বর্ষা মৌসুমে কাদা মাটি পেরিয়ে যেতে হয় বিদ্যালয়ে। জিঞ্জিরাম নদীর উপর সেতু না থাকায় নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয়।

চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শাকিব ইসলাম বলে, আমরা অনেক সমস্যায় ক্লাস করছি। আমাদের যাতায়াতের রাস্তা পাকা না থাকায় কাদা মাটি দিয়ে আসতে হয়। আগে সরকারিভাবে বিস্কুট পেতাম এখন টিফিনে না খেয়ে ক্লাস করতে হয়ে।

পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী লিপা মনি বলে, ক্লাসের অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। একটি ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. আবুল হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, অজপাড়া গ্রামে আমাদের এই বিদ্যালয়টিতে নানা সমস্যা রয়েছে। ভবন জরাজীর্ণ হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। ক্লাসে ফ্যান ভেঙে পড়ে যেকোনো সময় বড়ো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্কুলে আসার জন্য পাকা রাস্তা ও জিঞ্জিরাম নদীতে সেতু না থাকায় শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হতে হয়। এছাড়া বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর না থাকায় বিদ্যালয় নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা সুলতানা এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা এই উপজেলার কিছু ঝুঁকিপূর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ ও সংস্কার কাজের তালিকা করেছেন। তালিকায় উত্তর ভাতখাওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম আছে কিনা তা দেখতে হবে। যদি না থাকে তাহলে সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির ভবন নির্মাণ বা সংস্কারের জন্য প্রধান শিক্ষক একটা আবেদন করলে সেটিও আমলে নেয়া হবে।