ঢাকা ০৪:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
তওহীদভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামো গঠনে গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকা বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ জামালপুরে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে জনগণের ভোটের মূল্যায়ন হবে : ডক্টর ছামিউল হক সিডসের উদ্যোগে হাত ধোয়া দিবসে বড়দের হাত ধোয়ার কৌশল শেখালো শিশুরা গণভোটসহ ৫ দফা দাবিতে শেরপুরে জামায়াতের মানববন্ধন তবুও বহাল তবিয়তে চরপাকেরদহ ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান নিজাম দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শেরপুরে কলেজ শিক্ষকদের কর্মবিরতি ‘এনসিপি শুধুমাত্র সিটের রাজনীতির জন্য কারো সাথে জোট করবে না’ মাদারগঞ্জে বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ, ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা জিল বাংলা চিনি কলে আখচাষিদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

২ বছরের বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা আইন বলবৎ করল মিয়ানমার

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক :

মিয়ানমারে সামরিক জান্তা দেশের সমস্ত যুবক-যুবতীর জন্য কমপক্ষে দুই বছরের জন্য বাধ্যতামূলক সামরিক সেবার নির্দেশ জারি করেছে। দেশজুড়ে একাধিক ফ্রন্টে সরকারী সৈন্য এবং প্রতিরোধ বাহিনীর মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই চলার প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রীয় মিডিয়া দেশটির ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো ১১ ফেব্রুয়ারি এ তথ্য জানিয়েছে।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ত মিডিয়া বলেছে যে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সকল পুরুষ এবং ১৮ থেকে ২৭ বছর বয়সী নারীদের অবশ্যই দুই বছর পর্যন্ত সামরিক বাহিনিতে কাজ করতে হবে। আর অনূর্ধ ৪৫ বছর বয়সী ডাক্তারদের মতো বিশেষজ্ঞদের অবশ্যই তিন বছরের জন্য কাজ করতে হবে। টেলিভিশনে প্রচারিত ঘোষণায় বলা হয়েছে, চলমান জরুরি অবস্থায় বাধ্যতামূলক জাতীয় নিয়োগ আইনের অধীনে পরিষেবাটি মোট পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।

জান্তা মুখপাত্র জাও মিন তুন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘জাতিকে সুরক্ষা করা এবং নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব কেবল সৈন্যদের নয়, বরং সমস্ত নাগরিকের জন্য প্রযোজ্য। তাই আমি সবাইকে ‘জনগণের সামরিক সেবা আইন’ গর্বিতভাবে অনুসরণ করতে আহ্বান জানাই।’ জান্তা ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ থেকে বলবৎ হওয়া পিপলস মিলিটারি সার্ভিস আইনের কার্যকারিতা বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।

তৎকালীন মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ২০১০ সালে সামরিক নিয়োগ বাধ্যতামূলক করে একটি আইন প্রবর্তন করে, কিন্তু ১১ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত এটি কার্যকর করা হয়নি। ডিি তে বলা হয়েছে, যারা এই আইন মেনে চলতে ব্যর্থ হবে তাদের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের সম্মুখীন হতে হবে।

বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে যে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে জাতিগত মিলিশিয়া এবং অভ্যুত্থানবিরোধী যোদ্ধাদের সাথে একাধিক যুদ্ধে সরকারি সেনারা পরাজিত হয়েছে।

সেনাবাহিনী ২০২১ সালে এক অভ্যুত্থানে একটি নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে বেসামরিক সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করে। এএফপি মন্তব্য করেছে, ‘জান্তা সরকার তিন বছর ধরে তার শাসনের ব্যাপক সশস্ত্র বিরোধিতা দমন করতে সংগ্রাম করছে এবং সম্প্রতি জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র বাহিনীর একটি জোটের কাছে বেশ কয়েক বড় পরাজয়ের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। রয়টার্স এ পর্যবেক্ষণের পরিপূরক হিসেবে বলেছে, অক্টোবর থেকে তাতমাডও নামক মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী গণতন্ত্রপন্থী যোদ্ধাদের সাথে জোটবদ্ধ তিনটি জাতিগত-সংখ্যালঘু বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সমন্বিত আক্রমণ মোকাবেলা করতে গিয়ে কর্মকর্তাদের প্রাণহানির সম্মুখীন হয়েছে। ওয়্যার সার্ভিস মন্তব্য করেছে, ‘ মিয়ানমার সামরিক বাহিনী ১৯৬২ সালে প্রথম ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এবার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্লেষকদের উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাতমাডো নতুন সৈন্য নিয়োগের ক্ষেত্রে সংকটের মুখে পড়েছে এবং অযোদ্ধা কর্মীদের সামনের সারিতে নিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। অভ্যুত্থানের পর থেকে, গণতন্ত্রপন্থী ‘জনগণের প্রতিরক্ষা বাহিনী’ কয়েক হাজার তরুণ রিক্রুট তালিকাভুক্ত করেছে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে জান্তা বিরোধী যুদ্ধে জয়ী হচ্ছে।

অক্টোবরের শেষের দিকে, জাতিগত সংখ্যালঘু যোদ্ধাদের একটি জোট উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে এক আকস্মিক আক্রমণ শুরু করে। তারা কয়েকটি অঞ্চল দখল এবং চীনে লাভজনক বাণিজ্য রুটের নিয়ন্ত্রণ নেয়। বেশ কয়েকটি সামরিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে বলেছে, উত্তরের আক্রমণে সাফল্য এবং পাল্টা আক্রমণে সামরিক বাহিনীর ব্যর্থতা নিম্ন ও মধ্য-স্তরের কর্মকর্তাদের মনোবল দুর্বল করেছে। একটি স্থানীয় মনিটরিং গ্রুপের মতে ভিন্নমতের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর দমন অভিযানে ৪,৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং ২৬,০০০ জনের বেশি গ্রেপ্তার হয়েছে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

তওহীদভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামো গঠনে গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকা

২ বছরের বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা আইন বলবৎ করল মিয়ানমার

আপডেট সময় ১১:৫৫:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক :

মিয়ানমারে সামরিক জান্তা দেশের সমস্ত যুবক-যুবতীর জন্য কমপক্ষে দুই বছরের জন্য বাধ্যতামূলক সামরিক সেবার নির্দেশ জারি করেছে। দেশজুড়ে একাধিক ফ্রন্টে সরকারী সৈন্য এবং প্রতিরোধ বাহিনীর মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই চলার প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রীয় মিডিয়া দেশটির ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো ১১ ফেব্রুয়ারি এ তথ্য জানিয়েছে।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ত মিডিয়া বলেছে যে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সকল পুরুষ এবং ১৮ থেকে ২৭ বছর বয়সী নারীদের অবশ্যই দুই বছর পর্যন্ত সামরিক বাহিনিতে কাজ করতে হবে। আর অনূর্ধ ৪৫ বছর বয়সী ডাক্তারদের মতো বিশেষজ্ঞদের অবশ্যই তিন বছরের জন্য কাজ করতে হবে। টেলিভিশনে প্রচারিত ঘোষণায় বলা হয়েছে, চলমান জরুরি অবস্থায় বাধ্যতামূলক জাতীয় নিয়োগ আইনের অধীনে পরিষেবাটি মোট পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।

জান্তা মুখপাত্র জাও মিন তুন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘জাতিকে সুরক্ষা করা এবং নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব কেবল সৈন্যদের নয়, বরং সমস্ত নাগরিকের জন্য প্রযোজ্য। তাই আমি সবাইকে ‘জনগণের সামরিক সেবা আইন’ গর্বিতভাবে অনুসরণ করতে আহ্বান জানাই।’ জান্তা ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ থেকে বলবৎ হওয়া পিপলস মিলিটারি সার্ভিস আইনের কার্যকারিতা বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।

তৎকালীন মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ২০১০ সালে সামরিক নিয়োগ বাধ্যতামূলক করে একটি আইন প্রবর্তন করে, কিন্তু ১১ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত এটি কার্যকর করা হয়নি। ডিি তে বলা হয়েছে, যারা এই আইন মেনে চলতে ব্যর্থ হবে তাদের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের সম্মুখীন হতে হবে।

বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে যে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে জাতিগত মিলিশিয়া এবং অভ্যুত্থানবিরোধী যোদ্ধাদের সাথে একাধিক যুদ্ধে সরকারি সেনারা পরাজিত হয়েছে।

সেনাবাহিনী ২০২১ সালে এক অভ্যুত্থানে একটি নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে বেসামরিক সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করে। এএফপি মন্তব্য করেছে, ‘জান্তা সরকার তিন বছর ধরে তার শাসনের ব্যাপক সশস্ত্র বিরোধিতা দমন করতে সংগ্রাম করছে এবং সম্প্রতি জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র বাহিনীর একটি জোটের কাছে বেশ কয়েক বড় পরাজয়ের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। রয়টার্স এ পর্যবেক্ষণের পরিপূরক হিসেবে বলেছে, অক্টোবর থেকে তাতমাডও নামক মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী গণতন্ত্রপন্থী যোদ্ধাদের সাথে জোটবদ্ধ তিনটি জাতিগত-সংখ্যালঘু বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সমন্বিত আক্রমণ মোকাবেলা করতে গিয়ে কর্মকর্তাদের প্রাণহানির সম্মুখীন হয়েছে। ওয়্যার সার্ভিস মন্তব্য করেছে, ‘ মিয়ানমার সামরিক বাহিনী ১৯৬২ সালে প্রথম ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এবার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্লেষকদের উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাতমাডো নতুন সৈন্য নিয়োগের ক্ষেত্রে সংকটের মুখে পড়েছে এবং অযোদ্ধা কর্মীদের সামনের সারিতে নিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। অভ্যুত্থানের পর থেকে, গণতন্ত্রপন্থী ‘জনগণের প্রতিরক্ষা বাহিনী’ কয়েক হাজার তরুণ রিক্রুট তালিকাভুক্ত করেছে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে জান্তা বিরোধী যুদ্ধে জয়ী হচ্ছে।

অক্টোবরের শেষের দিকে, জাতিগত সংখ্যালঘু যোদ্ধাদের একটি জোট উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে এক আকস্মিক আক্রমণ শুরু করে। তারা কয়েকটি অঞ্চল দখল এবং চীনে লাভজনক বাণিজ্য রুটের নিয়ন্ত্রণ নেয়। বেশ কয়েকটি সামরিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে বলেছে, উত্তরের আক্রমণে সাফল্য এবং পাল্টা আক্রমণে সামরিক বাহিনীর ব্যর্থতা নিম্ন ও মধ্য-স্তরের কর্মকর্তাদের মনোবল দুর্বল করেছে। একটি স্থানীয় মনিটরিং গ্রুপের মতে ভিন্নমতের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর দমন অভিযানে ৪,৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং ২৬,০০০ জনের বেশি গ্রেপ্তার হয়েছে।