জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুরের প্রবীণ ভাষা ও মুক্তি সংগ্রামী কয়েস উদ্দিন আহমদ আর নেই। ২৫ আগস্ট রাত ১১টায় জামালপুর পৌরসভার বেলটিয়া ফুলতলা এলাকায় তার নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। বার্ধক্যজনিত কারণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে প্রায় তিন মাস ধরে শয্যাশায়ী ছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। তিনি চিরকুমার ছিলেন।
তার স্বজনরা জানান, ২৬ আগস্ট সকাল ১০টায় বেলটিয়া ফুলতলা গ্রামে প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদ ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটুস লরেন্স চিরান প্রয়াত কয়েস উদ্দিন আহমদের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পরে তার মরদেহ জামালপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পাদদেশে নেওয়া হয়। সেখানে জামালপুরের ভাষা ও মুক্তি সংগ্রাম গবেষণা কেন্দ্র, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, জেলা আওয়ামী লীগ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ’৭১, জামালপুর প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠন তাকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর জামালপুর মডেল মসজিদ প্রাঙ্গণে তার দ্বিতীয় জানাজা হয়। মৃত্যুর আগে তার অঙ্গীকার অনুসারে তার মরদেহ জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
প্রসঙ্গত, কয়েস উদ্দিন আহমদ ১৯২৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। জামালপুর শহরের বেলটিয়া ফুলতলা এলাকার মৃত ছইম উদ্দিনের চার ছেলের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। শ্রমিক শ্রেণির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিবেদিত প্রাণ একজন বামপন্থী কর্মী ছিলেন তিনি। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তী সমস্ত জাতীয় সংকটময় মুহূর্তে তার নিজের মুখে মুখে বানানো গণসংগীত মেহনতি মানুষের কণ্ঠকে ধারণ করেছে। ভাসানী ন্যাপের রাজনীতির সাথে যুক্ত এই গণসঙ্গীত রচয়িতা ভাষা আন্দোলন, আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ’৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থানসহ প্রত্যেকটি গণআন্দোলনে রাস্তায় রাস্তায় গান গেয়ে জনতাকে অনুপ্রাণিত করতেন। আজীবন মানবতাবাদী, গণআন্দোলনে কয়েস উদ্দিন আহমদ কয়েকবার শাসক শ্রেণির নির্যাতন ভোগ করেছেন। বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি প্রায় তিন মাস ধরে শয্যাশায়ী ছিলেন।