ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১ম টি-টোয়েন্টি দিয়েই জয়ের ধারায় ফিরতে চায় বাংলাদেশ

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ দু:সহ টেস্ট স্মৃতি পিছনে ফেলে কেবলমাত্র জয়ের ধারায় ফিরতে মারিয়া বাংলাদশ ক্রিকেট দল তিন ম্যাচ সিরিজে ২ জুলাই প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ডোমিনিকার উইন্ডসর পার্কে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে এগারটায় শুরু হবে ম্যাচটি।

দুই টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এটাই বাংলাদেশ দলের সেরা সময়। যদিও সব কিছু টাইগার দলের পক্ষে নেই। সংক্ষিপ্ত এই ভার্সনে নিজেদের সর্বশেষ ১০ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ১টিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। একমাত্র জয়টি এসেছে নিজ মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। তার আগে পাকিস্তান সফরে তিন ম্যাচ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে টাইগাররা। তার আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভ পর্বে নিজেদের পাঁচ ম্যাচের সব ক’টিতেই পরাজিত হয়েছে টাইগাররা।

তারপরও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অনুষ্ঠেয় আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সঠিক কম্বিনেশনের খোঁজে থাকা বাংলাদেশ এই ভার্সনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজেদের রেকর্ডের কারণে আশাবাদী হতে পারে।

সর্বশেষ ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওযার পরও টি-টোয়েন্টিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। অবশ্য তিন ম্যাচের সিরিজটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল যুক্তরাস্ট্রের মাটিতে। তাছাড়া দুইবারের বিশ^চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে জয়-পরাজয়ের রেকর্ড অনুযায়ী আশাবাদী হতেই পারে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এ পর্যন্ত ১৩টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে জয় পেয়েছে পাঁচটিতে, পরাজিত হয়েছে সাতটিতে এবং একটি ম্যাচ হয়েছে পরিত্যক্ত।

এ ছাড়া সংক্ষিপ্ত এই ভার্সনে বাংরাদেশ এ পর্যন্ত মোট ১২৫টি ম্যাচ খেলে ৪৪টিতে জয় পেয়েছে। পরাজিত হয়েছে ৭৯টিতে। বাকি দুই ম্যাচ হয়েছে পরিত্যক্ত।

কিন্তু ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত এই ভাসনে বাংলাদেশের যেটা সমস্যা তা হলো খেলাটির প্রতি এখনো স্বচ্ছ ধারণা নেই। এই ফর্মেট খেলার যথার্থ উপায় একনো খুঁজে পায়নি। কখনো কখনো তারা আক্রমনাত্মক ব্র্যান্ডের খেলা খেলেছে, যার কারণে কখনো কখনো তারা খারাপভাবে মাঠ ছেড়েছে। আবার কখনো কখনো অত্যন্ত সতর্কভাবে খেলেছে, যেটা টি-টোযেন্টির সাথে মানানসই নয়।

বাংলাদেশ দলের ব্যাইটং কোচ জেমি সিডন্সের মতে আক্রমনাত্মক ও সতর্কতামুলক- এই দুইয়ের মাঝে বাংলাদেশকে কিছু খুঁজে বের করতে হবে।

সিডন্স বলেছেন, বিগ হিটিং না খেলেও বাংলাদেশ বড় স্কোর গড়তে পারে। স্বাভাবিকভাবেই এই অঞ্চলের খেলোয়াড়রা ক্যারিবিয়ান বা অন্যান্য ইউরোপীয় ও অস্ট্রেলিয়ানদের মতো অহরহ ছক্কা মারতে পারেনা।

সিডন্স বলেন,‘ একটা জাতি হিসেবে আমি মনে করিনা (বাংলাদেশ) আমাদের বড় অনেক খেলোযাড় আছ। আপনি দেখবেন জস বাটলার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল কিংবা এদের মতো ছয় ফুট লম্বা খেলোয়াড় আমাদের নেই। কিন্তু আমাদের একটা উপায়ও খুঁজে বের করতে হবে।’

সিডন্স আরো বলেন,‘ আমি মনে করিনা স্কোর বোর্ডে আমাদের খুব বড় একটা রান দরকার। তবে হ্যাঁ, অবশ্যই আমাদের ভাল একটা রান করা উচিত। সিঙ্গেলস ও দুই রান খুব গুরুত্বপুর্ন, পাশাপাশি বাউন্ডারিও। চার মারা প্রায় ছয় মারার মতই ভালো এবং আমি মনে করি আমাদের সে দিকে নজর দেওয়া উচিত।’

শেষ মুহুর্তে টি-টোয়েন্টি দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদকে এবং সরাসরিই তারা সুযোগ পেতে পারেন সেরা একাদশে। সেটা হলে চার বছর পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবেন মিরাজ। আর তাসকিনের হবে এ বছর এটা প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। দলে আছেন সর্বশেষ ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্ট ম্যাচ খেলা এনামুল হক বিজয়ও।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে বিবেচনা করায় ওয়েস্ট ইন্ডিজও দলে ব্যপক পরিবর্তন এনেছে। যেখানে বড় অনেক তারকা খেলোয়াড়ই দলে নেই। তারাও দল নিয়ে পরীক্ষা করবে সঠিক কম্বিনেশন খুঁজে পেতে। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশের আশা ভঙ্গ করার মতো ব্যাটিং-বোলিং শক্তি তাদের আছে।

বাংলাদেশ দল (সম্ভাব্য) : মাহমুদুল্লাহ (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, এনামুল হক বিজয়, মুনিম শাহরিয়ার, নুরুল হাসান (উইকেটরক্ষক), মোসাদ্দেক হোসেন, আফিফ হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও নাসুম আহমেদ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল (সম্ভাব্য) : নিকোলাস পুরান (অধিনায়ক), ব্রান্ডন কিং, কাইল মায়ার্র্স, ডেভন থমাস (উইকেটরক্ষক), রোভম্যান পাওয়েল, কিমো পল, রোমারিও শেফার্ড, আকিল হোসেন, আলজারি জোসেফ, ওডেন স্মিথ ও ওবেদ ম্যাককয়।