দেওয়ানগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ

বন্যায় প্লাবিত দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বর।ছবি:বাংলারচিঠিডটকম

বিল্লাল হোসেন মন্ডল, দেওয়ানগঞ্জ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম : জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে উপজেলার পরিষদসহ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পনিবন্দি হয়ে পড়েছে। ৪৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা ও ৮৫২ হেক্টর জমির পাট, আউশ, সবজি ও মরিচ ফসল পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে। বাড়িতে পানি ওঠার ফলে বাঁশের মাচা ও চৌকি উঁচু করে রাত্রি যাপন করছে, আবার অনেকেই দেওয়ানগঞ্জ রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয় ও রেলওয়ে স্টেশনে আশ্রয় নিয়েছে।

উপজেলা প্রার্থমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হালিম জানিয়েছেন, উপজেলার বিভিন্ন প্রার্থমিক বিদ্যালয় বন্যা প্লাবিত থাকায় ৩৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তাফা জানিয়েছেন, উপজেলার ৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ প্লাবিত হওয়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস জানান, উপজেলায় বন্যায় পাট ৭৫০ হেক্টর, আউশ ৯০, সবজি ৫০, মরিছ ১২ হেক্টর সব মিলিয়ে ৮৫২ হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে।

বন্যায় রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় নৌকা ও ভেলায় করে চলাচল করছে প্লাবিত এলাকার মানুষ।

উপজেলার গুজিমারী প্লাবিত এলাকা।ছবি:বাংলারচিঠিডটকম

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার চুকাইবাড়ী, চিকাজানি, বাহাদুরাবাদ, পাররামরামপুর, চরআমখাওয়া ইউনিয়নের মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। চারদিকে পানি থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে ওই এলাকার মানুষ।

চুকাইবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুজ্জামান সেলিম খান জানান, আমার ইউনিয়নের গুজিমারী গুচ্ছ গ্রাম, হালকার চর মাঝি পাড়া বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ে বানভাসী পরিবারদেরকে আশ্রয়ণ কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।

বাহাদুরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান শাকিরুজ্জামান রাখাল জানান, এ ইউনিয়নের শেখপাড়া, মদনেরচর, চর বাহাদুরাবাদ, দপর পাড়াসহ প্রায় ৭টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

চিকাজানি ইউপি চেয়ারম্যান মমতাজ উদ্দিন আহাম্মেদ জানান, গুজিমারি, কাজলা পাড়া, ডাকাতিয়া পাড়া, চর মাগুরী হাটসহ ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বানভাসী মানুষ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। সেই সাথে নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে।

পাররামরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. সেলিম মিয়া জানান, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মধ্যর চর, ডিগ্রীর চর, কান্দাপাড়া, মাঠের ঘাট, মোয়া মারি, মন্ডল পাড়া, ভাতখাওয়া, বানিয়া পাড়া ৮টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ বন্যায় প্লাবিত।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুন্নাহার শেফা জানান, বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি জেলা প্রশাসক (ডিসি) স্যারকে অবগত করেছি।