শেরপুরে ত্রিশ লাখের তক্ষকসহ দুই পাচারকারী গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার দুই পাচারকারী ।

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম: শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলায় ত্রিশ লাখ টাকা মূল্যের বিপন্ন বন্যপ্রাণী তক্ষকসহ পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। শনিবার (১৪ মে) বিকেলে উপজেলার ঘাগড়া তেঁতুলতলা বাজার এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

একই দিন রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে র‌্যাব-১৪ এ তথ্য নিশ্চিত করে।

আটকরা হলেন, ঢাকার মগবাজারের নয়াটোলা এলাকার আশরাফুল করিমের ছেলে মোহাম্মদ সিরাজুল করিম ও শেরপুর সদরের মির্জাপুর কান্দিপাড়া এলাকার শাহ মাহমুদের ছেলে মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।

জানা যায়, জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিকউজ্জামানের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল হাতিবান্ধা ইউনিয়নের ঘাগড়া তেঁতুলতলা বাজারের সূচনা হার্ডওয়ার এন্ড ভ্যারাইটিজ স্টোরের সামনে পাকা রাস্তায় অবস্থায় নিয়ে চেকপোস্ট বসায়। এ সময় একটি তক্ষক পাচারকালে ওই দুই ব্যক্তিকে হাতেনাতে আটক করা হয়।

উদ্ধার তক্ষক।

গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে স্কোয়াড্রন লিডার আশিকউজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শেরপুর জেলার বিভিন্নস্থানে বন্যপ্রাণী তক্ষক ক্রয়-বিক্রয় ও সরবরাহ করে আসছিল এই চক্রটি। তাদের বিরুদ্ধে র‌্যাব বাদী হয়ে ঝিনাইগাতী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

আশিক উজ্জামান আরও বলেন, আটককৃতদের তথ্যমতে উদ্ধারকৃত তক্ষকের আনুমানিক মূল্য প্রায় ত্রিশ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা বলেন, তক্ষক গিরগিটি প্রজাতির নির্বিষ নিরীহ বন্যপ্রাণী। সাধারণত পুরনো বাড়ির ইটের দেয়াল, ফাঁক-ফোকড় ও বয়স্ক গাছে এরা বাস করে। কীটপতঙ্গ, টিকটিকি, ছোট পাখি ও ছোট সাপের বাচ্চা খেয়ে এরা জীবন ধারণ করে। আন্তর্জাতিক প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) লাল তালিকা অনুযায়ী এটি বিপন্ন বন্যপ্রাণী।

তিনি বলেন, তক্ষকের দাম ও তক্ষক দিয়ে তৈরি ওষুধ নিয়ে ব্যাপক গুজব ছড়ানো হয়েছে। আর গুজবে বিশ্বাস করে এক শ্রেণির লোক রাতারাতি ধনী হবার স্বপ্নে তক্ষক শিকারে নেমেছে। মূলত ব্যাপক নিধনই তক্ষক বিলুপ্তির প্রধান কারণ। এছাড়া তক্ষক দ্বারা তৈরি বিভিন্ন ওষুধের উপকারিতা নিয়ে যা শোনা যায়, বৈজ্ঞানিকভাবে তার কোনো ভিত্তি নেই। তারপরও এই গুজবটির কারণেই প্রাণীটি হারিয়ে যেতে বসেছে।