ব্রেইল মেশিনের অভাবে অন্ধ হাফেজের মানবেতর জীবন-যাপন

মতিউর রহমান চান সওদাগর

জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু, বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: একটি ব্রেইল মেশিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অর্থের অভাবে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন এক অন্ধ হাফেজ। একারণে পরিবার পরিজন নিয়ে অতিকষ্টে দিনানিপাত করছেন তিনি। মতিউর রহমান চান সওদাগর নামে ওই অন্ধ হাফেজের বাড়ি জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার হাতিভাঙ্গা ইউনিয়নের পূর্ব আমখাওয়া গ্রামে।

জানা গেছে, জন্মের ৪ বছরের মাথায় গুটি বসন্তের কারণে দুই চোখ অন্ধ হয়ে যায় চান সওদাগরের। এরপর থেকে অন্যের সাহায্য নিয়ে চলাফেরা সহ সব কাজই করছেন তিনি। তার বাবা ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নিহত হন। ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষের সময় মা মারা গেলে অসহায় হয়ে পড়েন চান সওদাগর। এরপর থেকে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করতে হয় চান সওদাগরকে। হঠাৎ এক ইংরেজ নারীর নজরে আসেন তিনি। ওই ইংরেজ নারী তাকে নিয়ে ঢাকার একটি অন্ধ বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। সেখানে তিনি দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেন এবং কোরআনের হাফেজ হন। পাশাপাশি ব্রেইল মেশিন পদ্ধতিতে তাফসিরুল কোরআনের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হন ও লেখার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। সেই থেকে ব্রেইল মেশিন পদ্ধতিতে পবিত্র কোরআন লিখে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন অন্ধ হাফেজ চান সওদাগর।

গত বছর করোনার সময়ে লকডাউনে বাড়িতে বসে থাকায় সামান্য অর্থ যা ছিল তাও শেষ হয়ে যায়। এরমধ্যে ব্রেইল মেশিনটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সংসারের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে যায় তাঁর। গত ছয় মাস ধরে আয় রোজগার না থাকায় স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন চান সওদাগর।

এমতাবস্থায় তিনি তার ব্রেইল মেশিনটি সচল করতে সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে মানবিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। এই ব্রেইল মেশিনটি সচল করতে ১৬ হাজার টাকার প্রয়োজন। ব্রেইল মেশিনের মাধ্যমে অন্ধ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে পারলেই তিনি সুন্দরভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন। তাই তিনি মানবিক সাহায্যের আবেদন করেছেন। হাফেজ চান সওদাগর তার ০১৭৬১৫৮৬৭৯১ (বিকাশ ও নগদ) নম্বরে বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন।