কোন প্রার্থীর আচরণবিধি লঙ্ঘনে নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হলে তার প্রার্থীতা বাতিল হতে পারে : সিইসি

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেছেন, স্থানীয় সরকারের চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে কোনো প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে এবং এই কারণে নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হলে, ওই প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল হতে পারে। তিনি সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘ইউপি নির্বাচনে নির্বাচনি পরিবেশ ভালো না থাকলে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোট বন্ধ করে দেয়া হবে।’

৪ নভেম্বর দুপুরে দ্বিতীয় ধাপে ইউপি ভোট নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পর্যালোচনা সভায় অনলাইনে অংশ নিয়ে সিইসি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে এবং অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথের পরিচালনায় অনলাইন সভায় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার বিভাগীয় কমিশনার, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, পুলিশ কমিশনার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন।

সিইসি বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘন করার কোনো অভিযোগ আসলে সাথে সাথে আমরা ব্যবস্থা নেই। একঘণ্টাও আমরা বিলম্ব করি না। কোথাও অসুবিধা হলে সমস্যাগুলো আমাদের কাছে আসতে হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা যদি মনে করে যে, সেই এলাকার নির্বাচনি পরিবেশ ভালো না। তাহলে আমরা সাথে সাথে সেখানকার নির্বাচন বন্ধ করে দেবো। যদি কোনো প্রার্থীর আচরণবিধি ভঙ্গের কারণে নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হয়, তাহলে তদন্ত করে সত্যতা পেলে তার প্রার্থীরা বাতিল করার ক্ষমতা আমাদের রয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সাহসী ভূমিকা রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক যারা আছেন তারা পাশে থেকে সাহস যোগাবেন। অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে কেউ যাতে পাড় পেয়ে যেতে না পারে, সেই জন্য ব্যবস্থা নিতে উৎসাহ দিতে হবে। কোনো রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলে তারা আইনের আওতায় আসবে এবং এই জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা থাকবে।

মাঠপ্রশাসনের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, ‘আপনাদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ আসলে আমরা তা ফাইল বন্দি করে রাখি না। আমরা সাথে সাথে তার ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক হবে। জাতীয় নির্বাচনের থেকে এই নির্বাচন আলাদা। এখানে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়।’

যেকোনো প্রয়োজনে মাঠ কর্মকর্তাদের পাশে থাকার অঙ্গিকার জানিয়ে কে এম নুরুল হুদা বলেন, আমি আশ্বস্ত হয়েছি যে, নির্বাচনি পরিস্থিতি সারাদেশেই ভালো হয়েছে। আটটি বিভাগের মধ্যে ঢাকা আর খুলনায় উত্তেজনা রয়েছে। খুলনা নিয়ন্ত্রণে এসে গেছে। ঢাকার ব্যাপারে আমরা সচেতন থাকবো। কোন কোন পকেটে এই সমস্যা আছে, এখন থেকে যেনো সেগুলো চিহ্নিত করতে পারি, সে ব্যাপারে তৎপর হতে হবে। মাঠপ্রশাসনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আপনাদের মধ্যে অদ্ভুত ধরণের সমন্বয় রয়েছে। এটাই সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যথেষ্ট। আমি আশা করি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।

কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কোথাও যদি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। কোনো কর্মকর্তা যদি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেন, আমাদের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা যারা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকেন, তাদের কোনো দল, মত, ব্যক্তি বিশেষের প্রতি আগ্রহ থাকতে পারে না। নিরপক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে ভোটররা যার যার ভোট দিয়ে চলে যাবেন এই রকম একটি পরিবেশ সৃষ্টি করবেন। সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রায় সকল দায়িত্ব রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অর্পিত থাকে। নির্বাচন কমিশনের হাতে প্রায় কিছুই থাকে না। সুতরাং তারা দায়িত্ব পালনের জন্য যেকোনো ধরণের সাহায্য সহযোগিতা আমাদের কাছে চাইলে আমাদের কাছ থেকে পাবেন। তবে সব থেকে বেশি সহযোগিতা নিতে হবে মাঠপ্রশাসন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। মাঠপ্রশাসনের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, স্থানীয় সরকারের এসব নির্বাচন সুষ্ঠু এবং ভালো প্রতিনিধি নির্বাচন করা আপনাদে জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এসব প্রতিনিধিদের নিয়েই বিভিন্ন সময় আপনাদের সভা, সমাবেশ ও কাজ করতে হয়।