চট্টগ্রামে বাড়ছে করোনা

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৩৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩২ জন নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হন। এ সময়ে করোনায় কারো মৃত্যু না হলেও সংক্রমণ হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৭৬ শতাংশে।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ১০ মার্চ নগরীর সাতটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ১ হাজার ৭০২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ১৩২ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১১৬ জন এবং ছয় উপজেলার ১৬ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে ৭ জন, ফটিকছড়িতে ৪ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ২ জন এবং সাতকানিয়া, পটিয়া ও বোয়ালখালীতে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় মোট সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৩৬ হাজার ৪৭ জন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৮ হাজার ৩৮৮ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ৬৫৯ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে করোনায় কোনো রোগী মারা যায়নি। মৃতের সংখ্যা ৩৭৮ জনই রয়েছে। এতে শহরের ২৭৭ জন ও গ্রামের ১০১ জন। সুস্থ্যতার ছাড়পত্র পেয়েছেন ৪৮ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা এখন ৩২ হাজার ৭৮৩ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ৪ হাজার ৪৮৫ জন এবং হোম আইসোলেশেনে থেকে ২৮ হাজার ২৯৮ জন। হোম আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২৮ জন। ছাড়পত্র নেন ১৫ জন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ৯৫৬ জন।

উল্লেখ্য, করোনা রোগী এক হাজার পূর্ণ হতে এবার সময় নিয়েছে ১০ দিন। এর আগে ১ মার্চ ৩৫ হাজার পূর্ণ হয়। সে সময় এক হাজার পূর্ণ হতে ১৪ দিন লেগেছিল। ১৬ ফেব্রুয়ারি ৩৪ হাজার অতিক্রম করার সময় ১ হাজার পূর্ণ হয় ১৫ দিনে। ৩১ জানুয়ারি ১৬ দিনে ১ হাজার পূর্ণ হয়ে ৩৩ হাজার অতিক্রম করে। অথচ তার আগে ৯ দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ৩২ হাজার অতিক্রম করে গত ১৫ জানুয়ারি। সেদিন হার ছিল ৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। আট দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ হাজার ছাড়িয়ে যায় ৬ জানুয়ারি। এদিন ১১৪ নতুন বাহক শনাক্ত হয়, সংক্রমণ হার ৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। এর আগে ২৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলায় মোট শনাক্ত রোগী ৩০ হাজার অতিক্রম করে। সেদিন ২০৯ নতুন বাহক শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ। ২১ ডিসেম্বর মোট আক্রান্ত ২৯ হাজার অতিক্রম করে। সেদিন ১৫২ জন রোগী শনাক্ত ও ৩ জনের মৃত্যু হয়। সংক্রমণের হার ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায় ১৪ ডিসেম্বর। সেদিন নতুন ২৮৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। সংক্রমণ হার ১৫ দশমিক ৮১ শতাংশ।

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গতকাল সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে। এখানে ৭২৩ জনের নমুনায় শহরের ১৯ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৫৮০ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৩ জনসহ ৪১ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৬৫ জনের মধ্যে গ্রামের ১১ জনসহ ১৫ জন আক্রান্ত চিহ্নিত হন। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএলে ১৫টি নমুনা পরীক্ষা হলে শহরের ৯টির পজিটিভ আসে।

নগরীর বেসরকারি তিন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ২৩১ নমুনা পরীক্ষা করে গ্রামের ২ জনসহ ২১ জন, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৫৯ নমুনায় শহরের ১৭ জন এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ২৩ নমুনায় শহরের ১০ জন জীবাণুবাহক শনাক্ত হন।

চট্টগ্রামের ৬ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবক’টিরই নেগেটিভ আসে। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে এদিন কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে বিআইটিআইডি’তে ২ দশমিক ৬৩, চমেকে ৭ দশমিক ০৭ শতাংশ, চবি’তে ২৩ দশমিক ০৮, আরটিআরএলে ৬০ শতাংশ, শেভরনে ৯ দশমিক ০৯, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২৮ দশমিক ৮১ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৪৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।সূত্র:বাসস।