জামালপুরে জমি অধিগ্রহণের টাকা পেতে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য নেই : মির্জা আজম এমপি

জামালপুর রেলওয়ে ওভারপাস প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকদের মাঝে ক্ষতিপূরণের টাকার চেক বিতরণ করেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি। ছবি : ছবি : মাহমুদুল হাসান মুক্তা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি বলেছেন, জামালপুরে ভূমি অধিগ্রহণের টাকা পেতে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য নেই। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ভূমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে দেখেছি প্রশাসন ও পলিটিশিয়ান সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে জমির মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

কিন্তু জামালপুরে শুধু এই রেলওয়ে ওভারপাস প্রকল্পেই নয় জেলায় চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির মূল্য পেতে কোন সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়তে হয় না। জমির মালিকদের ডেকে প্রকাশ্যে এমন অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশে তাদেরকে টাকা দেওয়া হয়। এতে জমির মালিকরাও খুশি থাকেন।

১৯ ফেব্রুয়ারি সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জামালপুর রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ প্রকল্পের রাস্তা সম্প্রসারণের অধিগ্রহণ করা জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের ১৯ কোটি ৪৫ লাখ ১৪ হাজার ৭৫৯ টাকার চেক বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আজম এমপি এসব কথা বলেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সদরের সংসদ সদস্য মো. মোজাফফর হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এ বি এম সাদ্দাম হোসেন, ক্ষতিপূরণ পাওয়া জমির মালিক সাবেক উপাধ্যক্ষ মীর আনছার আলী প্রমুখ। এ সময় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা আজম এমপি বলেন, জামালপুর রেলওয়ে ওভার পাস নির্মাণ প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প। প্রধান সড়কের এই রেলক্রসিংয়ে দিনে অন্তত ২৪ বার রেলগেট বন্ধ রাখতে হয়। দুই পাশে তীব্র জানজটে আটকা পড়ে জনগণের চরম দুর্ভোগসহ ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবামূলক গাড়ি চলাচলে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। জনগুরুত্ব বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছেন। বর্তমান বাজারমূল্যের তিনগুণ বেশি মূল্যের হিসাবে জমি অধিগ্রহণের জন্য ২২৯ কোটি টাকাও বরাদ্দ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর এই প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩ কোটি টাকা।

তিনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে এই প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের টাকা বরাদ্দ না পাওয়ায় প্রকল্পটি মাঝ পথে এসে থেমে যায়। এখন টাকা পাওয়া গেছে। এই প্রকল্পের রাস্তার পূর্বপাশের আপত্তিবিহীন ৯০ জনের আবেদনের মধ্যে আজকে ৪১ জনকে ক্ষতিপূরণের টাকার চেক বিতরণ করা হলো। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকিদের টাকা প্রদান করা হবে। একই সাথে প্রকল্পের কাজও ফের দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

এ সময় চেক বিতরণ অনুষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ভূমি অধিগ্রহণের টাকা পরিশোধের কার্যক্রমে আমিসহ জেলা প্রশাসনের এলএ শাখার সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দুর্নীতির উর্ধ্বে থেকে কাজ করেছেন। এ নিয়ে আমি কোন অভিযোগও পাইনি। এখানকার সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমসহ তার দলের নেতারাও এ নিয়ে কোন প্রকার প্রভাব বা অনিয়মের চাপ দেননি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে এ জেলায় যতক্ষণ আছি ততক্ষণ দুর্নীতিমুক্তভাবে জমির মালিকদের মাঝে টাকা বিতরণ করা হবে।

তিনি জমির মালিকদের উদ্দেশে বলেন, এরপরেও যদি আপনাদের কারো কোন অভিযোগ থাকে। তাহলে প্রতি বুধবার আমার কার্যালয়ে গণশুনানি হয়। আপনারা আসবেন। কথা বলার সুযোগ পাবেন। কোন অভিযোগ পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।