দেশে করোনায় ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ২২ জন, সুস্থ ১৯২৩

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ১৯৫তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯২৩ জন।

গতকালের চেয়ে আজ ১৪ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৮৮১ জন।করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪১ শতাংশ। গতকালও মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৪১ শতাংশ।

১৮ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯২৩ জন। গতকালের চেয়ে ৭৩ জন কম সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৫২ হাজার ৩৩৫ জন।

আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭২ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১২ হাজার ৭৩০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৫৪১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৫২ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৩ হাজার ৬৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৫৯৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ১১ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি।

দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৭ লাখ ৯৬ হাজার ৫০৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৮০৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৯ দশমিক ৩০ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৮১৪ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৩ হাজার ৭৬৯ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৯৯৫টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯৫টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৭৩০ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬৭৩ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৯৪৩টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২০৩০ দশমিক ৪৯ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৪৮১ দশমিক ৬৫ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ২৮ দশমিক ৬৬ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায মৃত্যুবরণকারী ২২ জনের মধ্যে পুরুষ ১৬ জন, আর নারী ৬ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৮০৪ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৭৭ জন; শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ, আর নারী ২২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় ২১ জন হাসপাতালে ও ১ জন বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৮ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১২ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২১ জন; যা শূন্য দশমিক ৪৩ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪১ জন; যা শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১১২ জন; যা ২ দশমিক ২৯ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৮৭ জন; যা ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৬৩২ জন; যা ১২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৩২৮ জন; যা ২৭ দশমিক ২১ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৪৬০ জন; যা ৫০ দশমিক ৪০ শতাংশ।

মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ জন, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন করে ও সিলেট বিভাগে ২ জন করে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৩৮২ জন; যা ৪৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২১ জন; যা ২০ দশমিক ৯২ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩২৯ জন; যা ৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪১৩ জন; যা ৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৮৩ জন; যা ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২২০ জন; যা ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৩০ জন; যা ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০৩ জন; যা ২ দশমিক ১১ শতাংশ।

ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৫৭টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৪৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ২১১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৭টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৮৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১২০টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৩৯ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৪৩টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১১ জন ও শয্যা খালি আছে ২৮টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৪১৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ১ হাজার ৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৪০৯টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২০১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৯৪ জন ও শয্যা খালি আছে ১০৭টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ২৫৫টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৯৯২ জন এবং শয্যা খালি আছে ১১ হাজার ২৬৩টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৪৭টি, রোগী ভর্তি আছে ৩৯২ জন এবং খালি আছে ২৫৫টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৫৫টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫২৮টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৪১টি।

০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে “করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ” লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।

গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৯২৩ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৮০৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৩৭ জন, রংপুর বিভাগে ৬৫ জন, খুলনা বিভাগে ২৫১ জন, বরিশাল বিভাগে ৩৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪২৩ জন, সিলেট বিভাগে ১০০ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ জন সুস্থ হয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২৭৭ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৫৪০ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৭৮ হাজার ৪১৭ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৬১ হাজার ৪৯৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ হাজার ৯২২ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৬৬ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৪১৩ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ২১ হাজার ৭৯৬ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৭৪ হাজার ১৫২ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৭ হাজার ৬৪৪ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৭৬৪টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৪ হাজার ৫৫টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৬৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫২ হাজার ৮৫টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৬ লাখ ৭১ হাজার ২৩১টি।

করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৪২৪ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৩ লাখ ৬০ হাজার ৩২১ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ২৮ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৬৩৫ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭ লাখ ৬৮ হাজার ৫৯৯ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৯৭ হাজার ৬৫০ জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৯৭ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৩ জন এবং এ পর্যন্ত ৯ লাখ ৩৭ হাজার ৩৯১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।