দেশে করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যু কমেছে, বেড়েছে সুস্থতা

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক : দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার ও মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে, বেড়েছে সুস্থতার হার।

গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ৭৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৭৯২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১০০ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৫ হাজার ৫৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৮৯২ জন।

গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ১৫ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১২ দশমিক ১৬ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ০১ শতাংশ কম।

দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৭ লাখ ৪ হাজার ৭৫৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৭৬২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল ১৯ দশমিক ৭০ শতাংশ।

১১ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৪৭৪ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ২৪ জন।

আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭০ দশমিক ৫১ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭০ দশমিক ১৪ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৩৭ শতাংশ বেশি।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৭ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছেন ৪১ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৬৬৮ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। গত ৩ দিন ধরে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৯৬১ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৫ হাজার ৬৪২ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৬৮১টি নমুনা কম সংগ্রহ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯৪টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৭৪৭ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ৫৫৯ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৮১২টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ১৯৬৫ দশমিক ৬৪ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৩৮৫ দশমিক ৮৮ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ২৭ দশমিক ৪১ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায মৃত্যুবরণকারী ৩৪ জনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন, আর নারী ৯ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৬৩৮ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৩০ জন; শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ, আর নারী ২২ দশমিক ০৭ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩৪ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ।

গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ৪৭৪ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৩১৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৬২ জন, রংপুর বিভাগে ৭৯ জন, খুলনা বিভাগে ২৮৫ জন, বরিশাল বিভাগে ৬২ জন, রাজশাহী বিভাগে ২০৬ জন, সিলেট বিভাগে ১৩৫ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২৮ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৬ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৬ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২০ জন; যা দশমিক ৪৩ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪০ জন; যা দশমিক ৮৬ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১০৯ জন; যা ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৮০ জন; যা ৬ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৬১০ জন; যা ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ২৭৪ জন; যা ২৭ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৩৩৫ জন; যা ৫০ দশমিক ০২ শতাংশ।

মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জন, খুলনা ও রংপুর বিভাগে ৩ জন করে, বরিশাল বিভাগে ২ জন এবং রাজশাহী ও সিলেট বিভাগে ১ জন করে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ২৫৮ জন; যা ৪৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৮৯ জন; যা ২১ দশমিক ১৯ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩১২ জন; যা ৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৩৯৬ জন; যা ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৮০ জন; যা ৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২১০ জন; যা ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২২৩ জন; যা ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০০ জন; যা ২ দশমিক ১৪ শতাংশ।

ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ১০৫টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৯৬৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ১৪১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৭টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৭৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১২৯টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৭৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৬০৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৪ জন ও শয্যা খালি আছে ২৫টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ১ হাজার ১৫১ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ২৩৫টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২০১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৯৪ জন ও শয্যা খালি আছে ১০৭টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ২৭৩টি, রোগী ভর্তি আছে ৩ হাজার ২৯৩ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৯৮০টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৪৭টি, রোগী ভর্তি আছে ২৮৬ জন এবং খালি আছে ২৬১টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ১১টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৪৯১টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১০৩টি।

০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৩৪৫ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৫১৭ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৭৬ হাজার ২৩৩ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৯৮৮ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ২৪৫ জন।

গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪৪১ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৭১৪ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ১২ হাজার ৬৯৩ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৬২ হাজার ২৪৮ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫০ হাজার ৪৪৫ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৮৫৭টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৪ হাজার ১৯৭টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৮৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫৩ হাজার ৩৩৯টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৩ লাখ ৮ হাজার ৬৯৫টি।

করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৫ হাজার ৩১১ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৩ লাখ ২৭ হাজার ৬২৬ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ হাজার ৩৩০ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৯ লাখ ১৮ হাজার ৩৭২ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৮৮ হাজার ৪১৮ জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৭৭ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৯ জন এবং ৮ লাখ ৯৯ হাজার ৯১৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।