অনাথের নাথ হবে কেউ?

অনাথ সাংমা ও তার পরিবার। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

অনাথ সাংমা (৩৫)। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সস্প্রদায়ের এই যুবকের ঠিকানা শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউপিতে। স্ত্রী এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে তার পাঁচ সদস্যের সংসার। নিজের জমি, ঘর না থাকায় অন্যের বাড়িতে বা স্কুলের বারান্দায় কখনো বা গির্জা ঘরে অবস্থান করে দিন পার করছে এই পরিবারটি। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বসবাস করার জন্য একটি ঘর দাবি করেছেন তিনি। অনাথ একই এলাকার বাকাকুড়া গ্রামের লরেন্স চিছিমের ছেলে।

অনাথ জানান, তার নেই কোন মাথা গুজার ঠাঁই। শ্রমিকের কাজ, পাহাড় থেকে জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ, খাল বিল ও ডোবা থেকে কুচিয়া মাছ সংগ্রহ করে তা বাজারে বিক্রি করে কোন রকমে চলে তার সংসার।

অনাথ আরও জানান, একদিন কাজে বের না হলে পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে থাকতে হয় তাকে। কখনও অন্যের বাড়িতে, কখনও বা স্কুল ও গির্জা ঘরে রাত কাটছে তার। অন্যের বাড়িতে থাকতে গিয়ে শিশুরা সামান্য কোন ভুল ত্রুটি করলে বাড়ি থেকে বের করে দেয় তাদের।

অনাথের স্ত্রী দিনটা ম্রং জানান, তার স্বামী যা আয় করে তা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের ভরণপোষণ যোগাতেই হিমসিম খেতে হয়। জায়গা জমি ও ঘরবাড়ি করবো কি দিয়ে।

দিনটা আরও জানায়, এলাকার কেউ ঢাকায় বা অন্য কোথাও গেলে বাড়ির নিরাপত্তার জন্য তাদের থাকতে দেওয়া হয়। তারা চলে আসলে আবার বাড়ি ছেড়ে দিতে হয়।

অনাথ বলেন, সরকারি একটি ঘরের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছে বহুবার গিয়েছি। কোন লাভ হয়নি। বর্তমানে সেভেন চিছিম নামে এক ব্যক্তির বাড়ির বারান্দায় দিন কাটছে তার।

ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সরকারি যে কয়টি ঘর বরাদ্দ আসে তা চেয়ারম্যান নিজেই বিতরণ করেন। কোন মেম্বারদের দেন না।

এ সম্পর্কে কাংশা ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, যার জমি আছে ঘর নেই, তাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া যায় সরকারি ঘর। তারতো (অনাথ) কোন জমি নাই। ঘর দিবো কিভাবে।