করোনার কারণে ভাড়াটিয়াদের বাড়িভাড়া মওকুফ করলেন শেরপুরের এক সাংবাদিক

মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরের নকলার এক সাংবাদিক ভাড়াটিয়াদের বাড়ি ও দোকানভাড়া মওকুফ করে দিয়েছেন। তার নাম মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু। তিনি উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসাবে তার ভাড়াটিয়াদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার সুবিধার্তে বাড়িভাড়া মওকুফ করেন। ২ এপ্রিল সকালে তার ছয়টি বাড়ি ও দুইটি দোকানের ভাড়াটিয়াদের ভাড়া মওকুফের সিদ্ধান্তের বিষয়টি মৌখিকভাবে জানান।

সাংবাদিক মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু বলেন, করোনাভাইরাসের কবলে পড়ে সারা পৃথিবী এখন থমকে গেছে। এইটা থামাতে আমাদের নিজনিজ অবস্থান থেকে যতটা সম্ভব কিছু করা উচিত। তাই নকলার কাচারি মোড় এলাকার দুইটি দোকান ও হাসপাতাল রোডের ৬ নম্বর কুরশাবাদাগৈড় এলাকায় ছয়টি বাড়ির ভাড়াটিয়াদের বাড়িভাড়া মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নেই।

আমার ভাড়াটিয়ারা অনেকটা দিনমজুর। তারা দিন আনে দিন খায়। করোনার কারণে মানুষ সব ঘরবন্দি হয়ে যাচ্ছে, তাদের কাজও কমে গেছে। এখন তারা নিজেরা খাবে নাকি আমাকে বাড়ি ভাড়া দিবে? এসব ভেবেই আমি তাদের চলতি এপ্রিল মাসের ভাড়া মওকুফ করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই ভাবছিলাম, আমি আমার অবস্থান থেকে কী করতে পারি? আমি নিজেও মধ্যবিত্ত মানুষ। উচ্চবিত্তদের প্রচুর টাকা আছে, তাদের অভাব হবেনা। কিন্তু মধ্যবিত্তের সংকট বেশি। তারপরও আমি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।

বাবুব লেন, আমার যতটুকু সামর্থ্য ও ইচ্ছা শক্তি আছে তা মানব কল্যাণে বিলিয়ে দিতে সদা চেষ্টা করি। আমি যে জাতীয় দৈনিকে কাজ করি সেখান থেকে প্রতিমাসে সম্মানী পাই ওই টাকার পুরোটাই গরীব ও দুস্থ মানুষের সহায়তায় দিয়ে দিই। এছাড়া পত্রিকা অফিসে পাঠানো বিজ্ঞাপনের কমিশন হিসাবে প্রাপ্ত টাকাগুলো আমি এতিম খানায় দান করি।

বাবুর এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে স্থানীয় একটি কলেজের শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, তার মতো যদি প্রতিটি বাড়ি ও দোকানের মালিকগণ তাদের সাধ্যমত ভাড়া মওকুফ করে দেন, তাহলে অন্তত ভাড়াটিয়ারা বাড়ি থেকে বের হবেন না। তাছাড়া প্রতিটি স্বচ্ছল মানুষ যদি নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তাহলে অসহায় মানুষগুলোকে না খেয়ে দিনাতিপাত করতে হবে না।