জামালপুরে ট্রাফিক সার্জেন্টসহ পাঁচ পুলিশ লাঞ্ছিত, থানায় মামলা, আটক ১

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

পুলিশের জামালপুর সদর ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুন ও দু’জন টিএসআইসহ দু’জন পুলিশ সদস্যকে প্রকাশ্যে রাস্তায় মারধর করে লাঞ্ছিত ও আহত করার অভিযোগে জেলা যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহাসহ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ১১ জনের বিরুদ্ধে জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ও রাতে দু’দফায় সংঘটিত এ ঘটনায় রাতেই ট্রাফিক সার্জেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ট্রাফিক সার্জেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুন ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে জামালপুর শহরের গেইটপাড়ে ট্রাফিক বক্সের সামনে নম্বরবিহীন ও হেলমেটবিহীন একটি মোটরসাইকেলের আরোহী মো. মনিরুজ্জামান সাজন, কামরুজ্জামান কামাল ও মো. শাকিলকে আটক করেন। তাদেরকে ট্রাফিক বক্সে নিয়ে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চাইলে তারা ট্রাফিক সার্জেন্টের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। একপর্যায়ে ওই তিন যুবক তাদেরকে ছাড়ানোর জন্য বিভিন্ন জনের কাছে ফোন করেন। রাত সোয়া ১০টার দিকে জেলা যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহা আরো কয়েকজন দলীয় নেতাকর্মীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক তিন যুবককে ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করেন।

ট্রাফিক সার্জেন্ট তাদেরকে ছাড়তে অস্বীকৃতি জানালে তার কাছ থেকে মোটরসাইকেলের চাবি ও পুলিশের প্রসিকিউশন বই কেড়ে নিয়ে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ট্রাফিক সার্জেন্টকে কিল, ঘুষি দিতে থাকে। খবর পেয়ে শহরে কর্তব্যরত শহর উপপরিদর্শক (টিএসআই) আবুল কালাম ও জাহাঙ্গীর আলম, পুলিশ সদস্য শাহা আলম ও মো. যোবায়ের হামলাকারীদের কবল থেকে ট্রাফিক সার্জেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুনকে উদ্ধার করতে যান। হামলাকারীরা তাদেরকেও কিলঘুষি মেরে লাঞ্ছিত ও আহত করেন। একপর্যায়ে ট্রাফিক সার্জেন্ট তার বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে সদর থানায় খবর দিলে একদল পুলিশ গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহী ও যুবলীগকর্মী মো. মনিরুজ্জামান সাজনকে আটক করলেও জেলা যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহা ও অন্যান্য নেতাকর্মীরা দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যান।

এ ঘটনায় ১৬ জানুয়ারি রাতেই ট্রাফিক সার্জেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়া এবং তাকেসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে মারধর করে লাঞ্ছিত ও আহত করার অভিযোগে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ঘটনার সময় আটক মোটরসাইকেল আরোহী ও যুবলীগকর্মী মো. মনিরুজ্জামান সাজনকে প্রধান আসামি করে জেলা যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহাসহ ১১ জন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর নামে এবং অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে মামলার অন্যান্য আসামিরা পলাতক রয়েছেন।

এ ঘটনা প্রসঙ্গে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেমুজ্জামান বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘ট্রাফিক সার্জেন্টের সরকারি কাজে বাঁধা দান ও তাকেসহ আরো কয়েকজন পুলিশকে মারধর করার ঘটনায় ১৬ জানুয়ারি রাতেই জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটির প্রধান আসামি মনিরুজ্জামান সাজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।