দেওয়ানগঞ্জে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ঐতিহ্য ঢেঁকি

দেওয়ানগঞ্জে ঢেঁকিতে চালের গুড়া তৈরি করছেন কৃষাণীরা। ছবি : বিল্লাল হোসেন মন্ডল

দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ঐতিহ্য ঢেঁকি। বিভিন্ন ধরনের আধুনি যন্ত্র আবিষ্কার হওয়ার ফলে হারিয়ে যাচ্ছে ঢেঁকির পুরোনো ঐতিহ্য। কালের বিবর্তনে ঢেঁকি এখন শুধু ঐতিহ্যের স্মৃতি। দিন দিন ঢেঁকি শিল্প বিলুপ্ত হলেও সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ নেই।

বাংলার ঐতিহ্যবাহি ঢেঁকি আগের মত এখন আর চোখে পড়ে না। একসময় ঢেঁকি ছিল গ্রামীণ জনপদের চাল ও চালের গুঁড়া বা আটা তৈরির একমাত্র যন্ত্র। অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে কৃষক ধান কাটার পর কৃষাণীদের ঘরে ধান থেকে চাল ও চালের গুঁড়া করার ধুম পরে যেত। জামাই আদর করা হতো বিভিন্ন রকমের পিঠা, পুলি, ফিরনি, পায়েস দিয়ে।

এছাড়াও নবান্ন উৎসব, বিয়ে, ঈদ, পূজায় ঢেঁকির মাধ্যমে ধান থেকে আটা তৈরি করা হতো। আটা তৈরি করতে ঢেঁকিতে কাজ করতে হতো রাত থেকে ভোর পর্যন্ত। ঢেঁকিছাটা আউশ ধানের চালের পান্তা ভাত খেতেও খুব স্বাদ হতো।

এক যুগ আগেও মানুষ ঢেঁকির মাধ্যমে ধান থেকে চিড়া, আটা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করত। ঢেঁকির ধুপধাপ শব্দে মুখোরিত ছিল বাংলার জনপদ। কিন্তু এখন ঢেঁকির সেই শব্দ শোনা যায় না। বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়াই ঢেঁকির শব্দ নেই। হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ জনপদের ঐতিহ্যবাহি কাঠের তৈরি ঢেঁকি। জ্বালানি তেল বা বিদ্যুতচালিত মেশিন দিয়ে ধান ও চাল তৈরির কারণে ঢেঁকি আজ কদরহীন। এলাকার গ্রামগুলোতে ঘুরে এখন ঢেঁকির দেখা মিলে না।

ঢেঁকি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলার বাঁশতলী গ্রামের ছফর উদ্দিন জানান, আগে বেশির ভাগ বাড়িতেই ঢেঁকি ছিল। ঢেঁকিছাটা চাল ও চালের পিঠার গন্ধ এখন আর নেই। পিঠার স্বাদ ও গন্ধ এখনও মনে পড়ে। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে গ্রাম বাংলার ঢেঁকির ব্যবহার কমে গেছে।