ইসলামপুরে পানিবন্দি লাখো মানুষ

চিনাডুলী এম এন উচ্চ বিদ্যালয়ে বন্যার পানি। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি চরম অবনতি হয়েছে। বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি ১৫ জুলাই বিকালে বিপদসীমার ১২৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় বন্যার পানি ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলা ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭টি ইউনিয়নের প্রায় লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়েছে বলে ইউপি’র চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন। উপজেলা সদর থেকে গুঠাইল বাজার, উলিয়া বাজার, শিংভাঙ্গা, কুলকান্দি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

১৫ জুলাই সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, বন্যায় ইসলামপুর-উলিয়া এবং ইসলামপুর-গুঠাইল ও ইসলামপুর-কুলকান্দি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ইসলামপুরের ৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।

উপজেলার চিনাডুলি ইউনিয়নের দণি চিনাডুলি, দেওয়ানপাড়া, ডেবরাইপেচ, বলিয়াদহ, সিংভাঙ্গা, পশ্চিম বামনা, পূর্ববামনা,গিলাবাড়ী, সাপধরী ইউনিয়নের আকন্দ পাড়া, পশ্চিম চেঙ্গানিয়া, পূর্ব চেঙ্গানিয়া, ও কাশাড়ীডোবার, কুলকান্দি ইউনিনের বেরকুসা, টিনেরচর, সেন্দুরতলী, মিয়াপাড়া, বেলাগাছা ইউনিয়নের কাছিমারচর, দেলীপাড়, গুঠাইল, পাথর্শী ইউনিয়নের শশারিয়াবাড়ী, মোরাদাবাদ, মুকশিমলা, হাড়িয়াবাড়ী পশ্চিম মুজাআটা, নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের ওলিয়া, রামভদ্রা, কাজলার অঞ্চল সমূহের বিস্তীর্ণ জনপদের বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।

নৌকায় করে গবাদিপশু অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন লোকজন। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

গত তিনদিনে বন্যার পানির তীব্র স্রোতে বেলগাছা ইউনিয়নের মন্নিয়ার চর, বরুল, চিনাডুলী ইউনিয়নের দেওয়ান পাড়া নোয়ার পাড়ার বৌশেরগড়সহ প্রায় শতাধিক বসতভিটা ভেঙ্গে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তরা আশপাশের উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পশ্চিমাঞ্চালে ৮২টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠায় সেগুলো বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও পৌর শহরের নতুন নতুন এলাকা চাড়িয়া, মোজাজাল্লা, বেপারীপাড়া প্লাবিত হয়েছে বলে কাউন্সিলর অংকন কর্মকার ও মহন মিয়া জানিয়েছেন।

এ যাবৎ ৯০ মেট্রিক টন চাল ও ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ হয়েছে বলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু জানিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, সরকারি হিসাব অনুযায়ী যমুনা থেকে নেমে আসা বন্যার পানিতে ইসলামপুরের সাপধরী, চিনাডুলি, বেলগাছা, কুলকান্দি, নোয়ারপাড়া, পাথর্শী ও ইসলামপুর সদর ইউনিয়ন সমূহের ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে।

জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী ১৪ জুলাই বিকালে ইসলামপুরের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।